Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ক্ষমতার দ্বন্দ্ব’ এড়াতে এশিয়ার দেশগুলোকে আহ্বান ইমরান খানের

‘কোয়াড’ নিয়ে পরোক্ষ সমালোচনা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২২ মে, ২০২১, ১২:০০ এএম

এশীয় দেশগুলিকে এই অঞ্চলে ‘ক্ষমতার দ্বন্দ্ব’ এড়াতে এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা, বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের দিকে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানিয়েছে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। শুক্রবার জাপানে ভার্চুয়াল মাধ্যমে আয়োজিত এশিয়ার ভবিষ্যত বিষয়ক ২৬তম আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান।
ইমরান খান বলেন, ‘এশিয়া অবশ্যই বহিরাগত বা অভ্যন্তরীণ উত্তেজনার মঞ্চে পরিণত হবে না। মত পার্থক্য ও বিরোধের জন্য মূল্যবোধ এবং স্বার্থের ভিত্তিতে এশীয়ার সমস্যা সমাধান করা প্রয়োজন।’ তিনি বলেন, ‘ভারত মহাসাগরসহ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল জাতিসংঘের সনদের নীতিমালা এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের বান্দুং নীতিমালা কঠোরভাবে মেনে চলার মাধ্যমে শান্তি, সহযোগিতা ও সমৃদ্ধির ক্ষেত্র হয়ে উঠতে হবে।’ যদিও স্পষ্টভাবে ইমরান খান কোন নাম উল্লেখ করেননি, তবে এটি স্পষ্ট তিনি চীনের বিরুদ্ধে গঠিত মার্কিন নেতৃত্বাধীন চার দেশীয় জোটের এর সমালোচনা করেই এই কথাগুলো বলেছেন। জোটটিতে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং ভারত অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ‘কোয়াড’ নামে পরিচিত এই জোটকে চীন নিজের এবং এই অঞ্চলের জন্য হুমকিস্বরূপ বলে বিবেচনা করে।
বৃহত্তর বৈশ্বিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়ে ইমরান খান বলেন, চীন এর বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ ‘এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চল এবং এর বাইরেও একত্রীকরণের জন্য’ একটি গুরুত্বপূর্ণ পথ তৈরি করছে। তিনি বলেন, ‘চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (সিপিইসি) বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের একটি প্রধান প্রকল্প। এটি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে এবং দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক বাণিজ্য বাড়িয়ে তুলবে।’ তিনি আরও যোগ করেন যে, ইসলামাবাদ সমস্ত বন্ধুত্বপূর্ণ দেশকে ৬ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের এই মেগাপ্রোজেক্টে বিনিয়োগের মাধ্যমে যুক্ত হওয়ার ও সুবিধা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এর আওতায় রাস্তা, রেলপথ এবং পাইপলাইনগুলির একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার মাধ্যমে চীনের কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ উত্তর-পশ্চিম জিনজিয়াং অঞ্চলকে পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তান প্রদেশের গোয়েদার বন্দরকে সংযুক্ত করবে।
ইমরান খান তার প্রতিবেশী দেশ ও প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত সহ সকল আঞ্চলিক দেশের সাথে শান্তি ও সুসম্পর্কের জন্য পাকিস্তানের ইচ্ছা সম্পর্কেও পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান ভারত সহ প্রতিবেশী সকলের সাথে শান্তিপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক চায়। তবে ভারতকে অবশ্যই অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ করতে হবে এবং ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট গৃহীত একতরফা ব্যবস্থা পুনর্বিবেচনা করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটি জরুরি যে, জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত ও কাশ্মীরের জনগণের ইচ্ছা অনুসারে জম্মু ও কাশ্মীরের বিরোধটি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানে সংলাপের জন্য একটি সক্ষম পরিবেশ তৈরি করা উচিত।’
এ সময় ফিলিস্তিনের সঙ্কট নিয়ে ইমরান খান বলেন, ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের অব্যাহত আগ্রাসন ‘সকলের কাছে গভীর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলিদের আক্রমণ বন্ধ করতে ও পবিত্র স্থান বিশেষত আল-আকসা মসজিদের অবমাননা রোধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে এবং জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত এবং দ্বি-রাষ্ট্রীয় দৃষ্টিভঙ্গির সাথে সামঞ্জস্য রেখে ন্যায়বিচার ও স্থায়ী সমাধান করতে হবে।’ সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাকিস্তান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ