মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভোরের আলো ফোটার আগেই সোমবার ফের গাজায় বিমান হামলা চালায় ইসরাইলি সেনা। প্রায় এক ডজন যুদ্ধবিমান ফিলিস্তিনের উপকূলবর্তী হামাস গোষ্ঠী অধ্যুষিত ওই অঞ্চলে হামলা করা হয়। যার জেরে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের পাশাপাশি শতাধিক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। এই হামলায় হতাহতের সংখ্যা এখনও স্পষ্ট নয়।
উল্লেখ্য, গত সাত দিনে ইসরাইল-প্যালেস্তাইনের এই সংঘর্ষের জেরে ইতিমধ্যেই নিহতের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে। যার মধ্যে শুধু রোববারই ইসরাইলি হানায় প্রাণ হারান কমপক্ষে ৪২ জন। গত এক সপ্তাহ ধরে চলা সংঘর্ষের ঘটনায় এক দিনের নিরিখে যা এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এ দিকে শান্তি ফেরাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে গড়িমসির অভিযোগে আমেরিকার বিরুদ্ধে তোপ দাগল চীন। রোববারের পর নড়েচড়ে বসেছে জাতিসংঘও। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে রোববারই তড়িঘড়ি নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক ডাকা হয়। যদিও কার্যকরী কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। অনেকেই এর জন্য আর্ন্তজাতিক মহলে ইসরাইলের সহযোগী হিসেবে পরিচিত আমেরিকাকে কাঠগড়ায় তুলছেন। একই অবস্থান চীনেরও। প্রয়োজনে শান্তি আলোচনার জন্য ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে মধ্যস্থতা করতে তারা প্রস্তুত বলেও জানায় চীন।
যদিও তাদের মতো করে এই সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে দাবি করেছে আমেরিকা। পশ্চিম এশিয়ায় কূটনৈতিক ভাবে প্রভাবশালী দেশগুলির সঙ্গে রোববারই এই নিয়ে তার কথা হয়েছে বলে জানান আমেরিকার পররাষ্ট্রসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। এই তালিকায় রয়েছে কাতার, সউদী আরব, মিশর এবং ফ্রান্স। উল্লেখ্য, ইরানের পর হামাস গোষ্ঠীর উপর কাতারের সবচেয়ে বেশি প্রভাব রয়েছে বলে মনে করা হয়। ব্লিঙ্কেনের এই পদক্ষেপের এক দিন আগেই দু’পক্ষের তরফে শান্তি প্রক্রিয়া শুরুর আহ্বান জানিয়ে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এবং ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে কথা বলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
নেতানিয়াহু যদিও রোববারই জানিয়েছেন, ‘জঙ্গি বিরোধী এই সামরিক অভিযান শেষ হতে এখনও সময় লাগবে।’ এ দিকে ইসরাইলি বাহিনীর দাবি, গত সোমবার থেকে প্রায় তিন হাজার ক্ষেপণাস্ত্র উড়ে এসেছে তাদের দিকে। যার মধ্যে প্রায় হাজার খানেক প্রযুক্তির সাহায্যে আটকে দেয়া হয়। আর ৪৫০টি আছড়ে পড়ে গাজার উপরেই। দু’দেশের সংঘর্ষের জেরে গাজায় বিপুল সংখ্যক মৃত্যুর পাশাপাশি আহতের সংখ্যাও ১২০০ ছাড়িয়েছে। ৪০ হাজার মানুষ ঘরছাড়া। রোববার ‘হামাস সম্পর্কিত’ কমপক্ষে ৯০টি লক্ষ্যে তারা ক্ষেপণাস্ত্র বর্ষণ করেছে বলে জানায় ইসরাইল।
দু’তরফের কর্তৃপক্ষেরই দাবি, হতদের মধ্যে ১৯৭ জন গাজাবাসী। ১০ জন ইসরাইলের। এই পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেসের সতর্কবার্তা, ‘দ্রুত এই ভয়াবহ সহিংসতা বন্ধ না-করলে নিরাপত্তা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে সময় লাগবে না।’ শান্তির আবেদন জানানোর পাশাপাশি ভাটিক্যান থেকে পোপ ফ্রান্সিসের তোপ, ‘এ কাজ যারা করছেন, তারা উন্মাদ।’
ইসরাইল বরাবর দাবি করে এসেছে, সাধারণেরা নয়, গাজায় তাদের নিশানায় হামাস জঙ্গিরাই। তবে সোমবারও গাজায় একাধিক ধ্বংসস্তূপের নীচে থেকে বিভিন্ন বয়সের নাগরিকদের দেহ তুলে আনতে দেখা যায় উদ্ধারকারীদের। ভেসে আসে স্বজনহারাদের হাহাকার। তেমনই এক জন লামিয়া আল-কুলাক। সোমবারের হামলায় ভাই এবং তার ছেলেমেয়েদের হারানো এই গাজাবাসীর কথায়, ‘রাতে ঘুমোচ্ছিলাম। রকেট বর্ষণের আওয়াজে ঘুম ভাঙে। প্রায় আধঘণ্টা তা চলে। বাচ্চাদের চিৎকার কানে আসছিল। বাইরে বেরিয়ে দেখি পাশের বাড়িটি ধুলিসাৎ হয়ে গিয়েছে!’ সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, ইন্ডিয়া টুডে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।