গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
ফিলিস্তিনজুড়ে ইসরায়েলি আগ্রাসনের ফলে সৃষ্ট সংকটময় পরিস্থিতিতে নিরীহ মুসলমানদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে এগিয়ে এসেছেন বাংলাদেশের মানুষ। ঢাকাস্থ ফিলিস্তিন দূতাবাসের অফিসিয়াল পেজে দেয়া নম্বরে যোগাযোগ করে অনেকেই টাকা পাঠাচ্ছেন। বাংলাদেশের মানুষের ফিলিস্তিনের মুসলমানদের জন্য গভীর ভালবাসা দেখে বিস্মিত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ রামাদান। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার খুব ভালো লেগেছে, অনেক মানুষ আছেন যারা পাঁচ টাকা পর্যন্ত পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশের মানুষের এ ভালোবাসা দেখে আমি বিস্মিত। তিনি বলেন, আমি জানতাম বাংলাদেশের মানুষ ফিলিস্তিনিদের ভালোবাসেন, কিন্তু এতোটা ভালোবাসেন তা আমি ভাবতেও পারিনি।
রাষ্ট্রদূত ইউসুফ রামাদান বলেন, বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে কয়েক হাজার ইমেইল বার্তা ও ফোনকল পেয়েছি। পাশাপাশি বাংলাদেশের অনেকেই আমাদের জন্য নগদ অনুদান দিয়ে বন্ধুত্বের নিদর্শন প্রমাণ করেছেন। আবার অনেকেই অনুদান দেওয়ার জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তাই আমরা আমাদের ফেসবুক পেজে কিছু নম্বর ও তথ্য দিয়েছি, যেন সহযোগিতা আগ্রহী ব্যক্তিরা সহজে সহায়তা করতে পারেন।
আরব বিশ্বসহ বিশ্বের সব দেশের কাছে ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন, সহযোগিতা ও দোয়া চাই, এমন মন্তব্য করে রাষ্ট্রদূত ইউসুফ রামাদান বলেন, ইসরাইলি বাহিনী ফিলিস্তিনে যে হত্যাকান্ড ও মানবাধিকার বহির্ভূত অপকর্ম করছে, তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। তারা ১৭ বছর ধরে শিশুদের হত্যা করছে, মসজিদে নামাজরত মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি ও বোমা বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছে, সাধারণ ও নিরীহ নাগরিকদের আক্রমণ করছে, ফিলিস্তিনে তারা ধ্বংসলীলা ঘটাচ্ছে। তাদের কারণে আমি ২১ বছর ধরে আমার প্রিয় জন্মভূমিতে যেতে পারি না।
ফিলিস্তিনের বর্তমান সংকট উত্তরণে বৈশ্বিক সংগঠনগুলোর সহায়তা প্রয়োজন বলে মনে করেন রাষ্ট্রদূত ইউসুফ রামাদান। তিনি বলেন, আমরা জাতিসংঘ, ওআইসিসহ সব বৈশ্বিক সংগঠনসহ বিশ্বের সবার কাছে ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন ও দোয়া চাই। ইসরাইলি নারকীয় বাহিনী ফিলিস্তিনের মাটিতে যে ধ্বংসলীলা চালাচ্ছে, তা দৃশ্যমান। ইসরাইল মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে, সেটি বিশ্ববাসী দেখছে। তারা ফিলিস্তিনের জনগণের ঘরবাড়ি অবৈধভাবে দখল করে তাদের বাস্তুচ্যুত করছে। ফিলিস্তিনের জনগণ বিশ্ববাসীর কাছে এই জঘন্য ঘটনার বিচার চায়।
এদিকে, ইসরাইলি বাহিনী ফিলিস্তিনে যে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে, তার প্রতি তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ। একইসঙ্গে ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন ও সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রত্যয়ও পুনর্ব্যক্ত করেছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিশ্বের কাছে এ ঘটনার সুবিচার দাবি করেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। শুধু তাই নয়, ফিলিস্তিনের এই সংকটে দেশটিতে জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জামসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতাও পাঠাচ্ছে বাংলাদেশ।
ফিলিস্তিনজুড়ে ইসরায়েলি আগ্রাসনের ফলে সৃষ্ট সংকটময় পরিস্থিতিতে নিরীহ মুসলমানদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন তরুণ রাজনীতিবিদ ফারাজ করিম চৌধুরী। এরই পরিপ্রেক্ষিতে রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত ফিলিস্তিন দূতাবাস ও বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে যোগাযোগ করে সহযোগিতার ব্যাপারে আলোচনা করেন তিনি।
এসময় ফিলিস্তিন দূতাবাসের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ওষুধ সামগ্রী সরবরাহ করার আহ্বান জানানো হয়।
এ প্রসঙ্গে ফারাজ করিম চৌধুরী তার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে সবার সহযোগিতা চেয়ে স্ট্যাটাস দিলে ফিলিস্তিনি জনগণকে সাহায্য করতে আগ্রহ প্রকাশ করে অসংখ্য মানুষ। এতে প্রবাসীসহ অনেকেই বিকাশ নম্বরে টাকা পাঠানোর মতামত দেন।
ফিলিস্তিন দূতাবাসকে বিষয়টি অবহিত করা হলে দূতাবাস কর্তৃপক্ষ দু’টি ফোন নম্বরে (৪১০৮১৩৮২, ৪০১৮০৮৪১) যোগাযোগ করে বিকাশ নম্বর সংগ্রহ করে সহযোগিতা পাঠানোর অনুরোধ জানান।
গত সোমবার (১৭ মে) নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক থেকে লাইভে এসে ফারাজ করিম চৌধুরী বলেন, আজকে সকালে আমি ঢাকায় অবস্থিত ফিলিস্তিনি দূতাবাসে গিয়েছিলাম। সেখানে আমার সঙ্গে রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদানের সঙ্গে কথা হয়েছে। ওই বললেন ওনারা আসলে প্রথমে বিকাশ অ্যাকাউন্ট খুলতে চাননি। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের দাবির প্রেক্ষাপটে খুলেছেন। তিনি একটা কথা বলেছেন আমার খুব ভালো লেগেছে, অনেক মানুষ আছেন যারা পাঁচ টাকা পর্যন্ত পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশের মানুষের এ ভালোবাসা দেখে তিনি অনেকটাই বিস্মিত। কিন্তু উনি জানতো বাংলাদেশের মানুষ ফিলিস্তিনিদের ভালোবাসেন, কিন্তু এতোটা পরিমাণে ভালোবাসেন তা তিনি ভাবতে পারেননি।
তিনি বলেন, এ পাঁচ টাকা যারা পাঠিয়েছেন তাদেরও উনি একটি লম্বা মেসেজ দিয়েছেন। যারা টাকা পাঠিয়েছেন তাদের কাছে ফিলিস্তিনি দূতাবাসের মেসেজটি স্মৃতি হিসেবে থাকবে। এসময় আমরা বিকাশের সমস্যার কথা তুলে ধরলাম, কারণ ফিলিস্তিনি দূতাবাস থেকে যে বিকাশ অ্যাকাউন্ট নম্বর দেওয়া হয়েছে, তার একটা লিমিট আছে। আর এ লিমিটের কারণে অনেকেই পুরোপুরি টাকা পাঠাতে পারছেন না। উনি বললো যে, বিকাশের সঙ্গে কথা বলে লিমিটটা সরানোর (বাড়ানোর) চেষ্টা করবেন এবং একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার চেষ্টা করবেন।
এছাড়া ফিলিস্তিনদের সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশিদের উদ্দেশ্যে কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন ফারাজ করিম। তার তথ্যগুলো হুবহু তুলে ধরা হলো।
১. শুধুমাত্র ফিলিস্তিন দূতাবাসের অফিশিয়াল বিকাশ-রকেট-নগদে টাকা দেওয়া যাবে। এই ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে ফিলিস্তিন দূতাবাসে ফোন অথবা ই-মেইল করতে হবে। ফিলিস্তিন দূতাবাসের ফোন নাম্বার, ঠিকানা এবং ই-মেইল গুগলে পাবেন। অথবা ফিলিস্তিন দূতাবাসের অফিশিয়াল ফেইসবুক পেজে যেয়ে তথ্য জেনে নিতে হবে।
২. কেউ যদি সরাসরি টাকা অথবা ওষুধ দিতে চায় তাহলে বারিধারায় অবস্থিত ফিলিস্তিন দূতাবাসে তারা দিতে পারবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।