গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
নেই চিরচেনা যানজট, নেই কোলাহল। হাতেগোনা বাস থাকলেও নেই যাত্রী, আছে অসংখ্য রিকশা। সবমিলে ঈদের দ্বিতীয় দিন রাজধানী ঢাকা অনেকটাই ফাঁকা। শনিবার (১৫) ঈদুল ফিতরের পরদিন রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ঘুরে চোখে পড়ল এমন চিত্র।
গত সোমবার থেকেই নাড়ির টানে ঢাকা ছাড়তে শুরু করে মানুষ। নানা প্রতিকূলতা, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ সত্ত্বেও ঈদ পর্যন্ত রাজধানী থেকে লাখ লাখ মানুষ গ্রামে চলে যায়। এই সংখ্যা প্রায় অর্ধ কোটির মতো। অর্ধ কোটি মানুষ চলে যাওয়ায় রাজধানী এখন কোলাহল মুক্ত।
সরেজমিনে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, গুলিস্তান, মতিঝিল, পল্টন, শান্তিনগর, মগবাজার, রামপুরা, বাড্ডা, ও গুলশান এলাকা ঘুরে তেমন কোনো জনসমাগম বা যানজট চোখে মেলেনি। দুপুর ১টায় ঢাকার অন্যতম ব্যস্ততম এলাকা মতিঝিলের চিত্র ছিল চোখে পড়ার মতো।
অন্যসময়ে যানজট আর হকারে মুখরিত মতিঝিলে আজ শুধু রিকশা চলতে দেখা গেছে। মানুষের উপস্থিতি একেবারেই ছিল না বললেই চলে। কমলাপুর থেকে নতুন বাজারগামী ৬ নম্বর বাসের হেলপার জামির উদ্দিন বলেন, আমরা বর্তমানে দুই সিটে একজন করে যাত্রী বহন করছি। ভাড়া আগের থেকে ৬০ ভাগ বেশি।
তিনি বলেন, সকাল থেকে ৩টি ট্রিপ মারলাম। আমরা ভাড়া কিছুটা কমিয়ে নিচ্ছি। তাও কোনোবারই যাত্রী ভরে বাস চলেনি। অনেকে গ্রামে, আবার অফিস-আদালতও বন্ধ। তাছাড়া চলাচলকারী মানুষের সংখ্যাও অনেক কম। রোববার থেকে যাত্রী বাড়বে বলে আশা করছি।
রাজধানীর মেরুল বাড্ডা এলাকার বাসিন্দা সৈয়দ মহসিন বলেন, বাড্ডা থেকে হাতিরঝিল হয়ে পান্থপথের বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে এলাম। সময় লাগল মাত্র ১৩ মিনিট। অথচ আগে হাতিরঝিলে ঢুকতে, বের হতে, কারওয়ানবাজার রেল ক্রসিং এবং সোনারগাঁও মোড়ের সিগন্যালে সবমিলে প্রায় এক থেকে দেড় ঘণ্টা সময় লেগে যেত।
মাত্র ২০ মিনিটে অসুস্থ বোনকে দেখতে শনির আখড়া থেকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে এসেছেন রাকিব হাসনাত। তিনি বলেন, ঈদ এলে বুঝা যায় যে, শহরটা কত ছোট। আগে যেখানে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা লাগত শাহবাগ আসতে। মাত্র ৩০ মিনিটেই চলে এলাম। সবসময়ই এমন ঢাকা আমরা চাই।
ঈদ উপলক্ষে রাজধানীর অভিজাত গুলশান এলাকার অধিকাংশ রেস্টুরেন্টই খোলা। ঈদের পরে অনেক সমাগমের আশাও করেছিলেন এ অঞ্চলের রেস্টুরেন্ট মালিকরা। তবে অধিকাংশই ছিল ফাঁকা। এমনকি ঈদে গোটা গুলশান এলাকাই ছিল ফাঁকা।
গুলশান-১ নম্বর চত্বরে ট্রাফিক পুলিশের সরব উপস্থিতি থাকলেও অনেকটা অলস সময় কাটাতে দেখা গেছে তাদের। জয়নাল নামের একজন পুলিশ কনস্টেবল বলেন, সাধারণত ঈদের এই দিনগুলোতে ঢাকা শহর ফাঁকাই থাকে। যানজট থাকে না, তাই আমাদের ডিউটি করতে তেমন বেগ পেতে হয় না। তবে যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি বা দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে, সেগুলো তদারকি করতে আমরা মাঠে থাকি।
এদিকে রাজধানীর অধিকাংশ এলাকা ফাঁকা হাতিরঝিল সড়কে আশপাশে দর্শনার্থী ও বিনোদন প্রেমীদের প্রচন্ড ভিড় দেখা যায়। হাতিরঝিলের ব্রিজগুলোতে গাড়ি পার্ক করে সড়কে নেমে অনেককেই ছবি তুলতে দেখা যায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।