পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আধুনিক পদ্ধতির জটিলতায় বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রায় অর্ধেক কর্মী এবার ঈদুল ফিতরের আগে বেতন-ভাতা পাননি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দ্রুত ও সহজে পরিশোধ করার আইবাস প্লাস প্লাস পদ্ধতি বাস্তবায়নে দক্ষতা ও সমন্বয়ের অভাবে এমনটি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এ বিষয়ে রেলওয়ের বঞ্চিত কর্মীরা রেলমন্ত্রীর কাছে দাবিও জানিয়েছিলেন। তবু তারা ঈদুল ফিতরের আগে বেতন-বোনাস বঞ্চিত হয়েছেন।
বাংলাদেশ রেলওয়ে পোষ্য সোসাইটির সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান মনির বলেন, নতুন ডিজিটাল পদ্ধতির অজুহাত দেখিয়ে বেতন-বোনাস না দিয়ে ঈদ আনন্দ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে রেলওয়ের ৫০ শতাংশ শ্রমিক-কর্মচারীকে। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। যাদের অবহেলায় আজ শ্রমিক-কর্মচারীরা ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, বেতন-ভাতা পরিশোধ সহজ ও দ্রুততর করতে অত্যাধুনিক আইবাস প্লাস প্লাস পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। এই পদ্ধতি বাস্তবায়নে সৃষ্ট সমস্যার কারণে রেলকর্মীদের কেউ বেতন পেয়েছে, বোনাস পায়নি। আবার অনেক রেলকর্মী বেতন-বোনাস কোনোটিই পাননি। শুধু পূর্বাঞ্চল রেলে এ সমস্যার কারণে বেতন-বোনাস বঞ্চিত হয়েছেন পাঁচ হাজার রেলকর্মী। তাদের ভাগ্যে ঈদের পর প্রাপ্তি ঘটবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এতে তাদের ঈদ আনন্দ ফিকে হয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ রেলওয়ের একাধিক ভুক্তভোগী বলেছেন, সংস্থার হিসাব বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মচারী ও বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তাদের গাফলতিতে এ অবস্থা হয়েছে। বুধবার (১২ মে) বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রায় পাঁচ হাজার রেলকর্মীকে নতুন পদ্ধতিতে বেতন-বোনাস দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা ছাড় হয়নি। ওইদিন অপেক্ষা করেও খালি হাতে ফেরেন সংশ্লিষ্ট রেলকর্মীরা। তাদের বেতন গত ১ ও ৮ মে দেওয়ার কথা ছিল। প্রযুক্তিগত জটিলতার কারণ দেখিয়ে ১২ মে বেতন-বোনাস দেওয়া হবে বলে তাদের বলা হয়েছিল।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা জানান, গত অর্থবছর থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ের দুই অঞ্চলের সবমিলিয়ে ৩৮টি ইউনিট গঠন করা হয় বাজেট প্রণয়নের জন্য। আইবাস প্লাস প্লাস সফটওয়্যারের মাধ্যমে বেতন ভাতা পরিশোধের সিদ্ধান্ত হলে এসব ইউনিট গঠন করা হয়। পদ্ধতিটিতে বেতন ভাতা তোলার জন্য দুইবার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে এসব ইউনিটের সদস্যদের। কিন্তু ইউনিটের অধিকাংশ পুরো অর্থবছরের বাজেট প্রণয়ন ও নতুন পদ্ধতিতে বেতন ভাতা তোলার বিষয়টি রপ্ত করতে পারেনি। সবশেষ গত মার্চেও তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
গত ৬ মে রেলপথ মন্ত্রণালয়ে বাজেট প্রণয়ন বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের সচিব সেলিম রেজার উপস্থিতিতে বাজেট ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা হয়েছে। সভায় বাংলাদেশ রেলওয়ের দুটি অঞ্চলের ৩৮টি ইউনিটের বাজেট প্রণয়ন নিয়ে দক্ষতা না থাকার বিষয়টি উঠে আসে।
জানতে চাইলে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব জাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতিমাসে ধাপে ধাপে ১, ৬, ৮ ও ১২ তারিখে বেতন ভাতা পরিশোধের কথা রয়েছে। তবে কেন তা পরিশোধ করা হয়নি তা বাংলাদেশ রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের লোকজন বলতে পারবেন।
বাংলাদেশ রেলওয়ের উপ-পরিচালক (বাজেট) ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। রেলের পূর্ব ও পশ্চিম অঞ্চলের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলতে পারবেন। তবে এই দুই রেল অঞ্চলের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তারাও কিছু বলতে পারবেন না।
বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্ব অঞ্চলের অধীন পাহাড়তলী অর্থ ও হিসাব শাখার সংশ্লিষ্টরা দাবি করেছেন, এই কাজে তাদের কোনো গাফিলতি নেই। সেখানকার অর্থ ও হিসাব বিভাগের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমি নিজে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলেছি, চিঠি দিয়েছি। এখন অপেক্ষা করতে হবে। জটিলতা তৈরি হয়েছে।
তিনি বলেন, আইবাস প্লাস প্লাস পদ্ধতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক মতিঝিল শাখার মাধ্যমে স্ব স্ব দফতরের কর্মকর্তাদের অধীনে কর্মচারীদের বেতন-ভাতার টাকা পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। ইএফটির কাজ শেষ না হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে চেকের অর্থ ছাড় দেওয়ার কথা রয়েছে। তবে তাতে নানা কারণে সময় লাগছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে পোষ্য সোসাইটির সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান মনির বলেন, রেলওয়ের ৫০ শতাংশ শ্রমিক-কর্মচারী আজ ঈদ উদযাপনের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হলেন। করোনা পরিস্থিতিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যেসব শ্রমিক-কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের কারণে রেলওয়ের কোটি কোটি টাকা আয় হয়েছে, ওইসব শ্রমিক-কর্মচারীরাই আজ ঈদ উদযাপনের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হলেন। অথচ করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এসব শ্রমিক-কর্মচারীকে নয়, দেখা যাবে পুরস্কৃত করা হচ্ছে কিছু কর্মকর্তাকে। যাদের অবহেলায় ঈদ উদযাপন থেকে বঞ্চিত হলো শ্রমিকরা, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানান তিনি।
তবে এ সমস্যা নিয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ের দায়িত্বশীলরা একে অন্যের ওপর দোষ চাপাতে চাইছেন। জানতে চাইলে বিষয়টি তারা এড়িয়ে যাচ্ছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।