Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নাটোরে নষ্ট হচ্ছে কৃষিজমি

৩ বছরে প্রায় ৬ হাজার পুকুর খনন

নাটোর জেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ১১ মে, ২০২১, ১২:০৪ এএম

কৃষি জমিতে পুকুর কাটার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। কিন্তু এক শ্রেণির অসাধু প্রভাবশালী ব্যক্তি সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রশাসনের নাকের ডগায় অবাধে কেটে চলেছে অবৈধ পুকুর। ৩ বছরে পুকুর কাটা হয়েছে প্রায় ৬ হাজার। এতে যেমন ফসলি জমি নষ্ট হচ্ছে তেমনি ওই সব পুকুরের আশেপাশের জমিও অনাবাদী হয়ে পড়ছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন সাধারন কৃষক আর এইসব দেখার যেন কেউ নেই।
যদিও জেলা প্রশাসক বলছে ফসলি জমি নষ্ট করে পুকুর খননের বিরুদ্ধে তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। নাটোর কৃষি প্রধান জেলা। এই জেলার অধিকাংশ মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল। জেলার দুই দিকে রয়েছে হালতি ও চলনবিল। এছাড়াও রয়েছে বেশ কয়েকটি নদ-নদী। বিল এলাকার মানুষদের একমাত্র ভরসা হল ধান, গম, ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ। গত কয়েক বছর ধরেই তাদের এই সকল ফসলি জমি কমতে শুরু করেছে। এক শ্রেণির অসাধু প্রভাবশালী ব্যক্তি সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দিন রাত যেকোন সময়ে জেলার বিভিন্ন স্থানে আবাদি জমিতে পুকুর কাটার মহোৎসব চালিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় এভাবেই অবৈধ পুকুর খনন চলছে। কোন ভাবেই থামানো যাচ্ছে না তাদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, এভাবে পুকুর কাটার ফলে ধানের জমি কমতে শুরু করেছে। এভাবে ফসলি জমির মাঝখানে পুকুর কাটলে আশেপাশের জমিগুলো আবাদের সমস্যা হয়। ধানসহ অন্যান্য ফসল তারা আর করতে পারছেনা শুধুমাত্র অবৈধভাবে পুকুর কাটার ফলে। যাদের টাকার জোড় আছে তারা নিয়মিত পুকুর কেটে চলেছে। কিছুই বলার নাই। সাধারণ মানুষের কথা শোনারও কেউ নাই। তারা বলেন, প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই প্রভাবশালীরা পুকুর কাটছে। এই এসব বিলে এক সময় সোনার ফসল হত। এখন আর ফসলের আবাদ করার মত অবস্থা নাই।
নলডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, করোনাভাইরাসের এই দুঃসময়েও ভ‚মি দস্যুরা অবৈধভাবে পুকুর খনন করেই চলেছে। তিনি নিজে জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দিয়েও কোন উপকার পাচ্ছেন না। তিনি মনে করেন এখনই এগুলো বন্ধ করা না হলে আগামীতে খাদ্য শষ্য উৎপাদনে বিপদে পড়বে দেশের মানুষ।
কৃষি সম্প্রসারন অধিদফতরের উপ-পরিচালক সুব্রত কুমার সরকার জানান, নাটোর জেলায় ২০১৭ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ৫ হাজার ৮৯৮টি পুকুর খনন করা হয়েছে। এরফলে ১ হাজার ৭৬৬ হেক্টর কৃষি জমি হারিয়েছে। কৃষি জমি নষ্ট করে পুকুর খননের জন্য সরকারী নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। অবৈধ পুকুর খনন রোধ করা অতি জরুরী। এভাবে পুকুর খনন করা হলে খাদ্য শষ্য উৎপাদনে বিরুপ প্রভাব পড়বে।
পুকুর খননের বিষয়ে জেলা প্রশাসক জানান, অবৈধ ভাবে কৃষি জমি নষ্ট করে পুকুর খননের বিরুদ্ধে তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তারা চলতি বছরে শতাধিক অভিযান করেছেন। ৭০টি মামলাও দায়ের হয়েছে। ৭৪ জনকে জেলা জরিমানাও করা হয়েছে। অভিযানে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কৃষিজমি

২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১
১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ