Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঈদের আগে যাকাত-ফিতরা বিলি-বণ্টন শেষ করুন: আল্লামা বাবুনগরী

হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৯ মে, ২০২১, ৬:২৭ পিএম

পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে সমর্থবান সকলের প্রতি সদক্বায়ে ফিতর ও যাকাত যথাযথ প্রাপ্য গরীবদের মাঝে বিলিবণ্টন শেষ করার আহ্বান জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের আহ্বায়ক কমিটির আমীর ও দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসার শায়খুল হাদীস আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী।

আজ (৯ মে) রবিবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, হযরত ইবনে আব্বাস (রাযি.) বর্ণনা করেছেন, রোযাকে অশ্লীল এবং অনর্থক কথাবার্তা থেকে পাকপবিত্র করার জন্য এবং দুঃস্থ-অসহায়-গরীবদের জীবিকা হিসেবে রাসূলুল্লাহ্ (সা.) সদকায়ে ফিতরকে ওয়াজিব করে দিয়েছেন। (আবুদাঊদ, মিশকাত)।

আল্লামা বাবুনগরী বলেন, ফিতরা’র উপকারিতা হল এতে রোযা পাকপবিত্র হয়ে আল্লাহ্ তাআলার দরবারে কবুল হওয়ার উপযুক্ত হয়। ফিতরা দানের ফলে দুনিয়া ও আখেরাতের বরকত এবং কবরের আযাব ও মৃত্যুর কষ্ট হতে নাজাতের আশা করা যায়।

তিনি আরো বলেন, অপরদিকে যাকাত ইসলামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রোকন। ঈমানের পর সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য ইবাদত হল নামায, তার পরই যাকাত। কুরআন মাজীদের বহু স্থানে নামাযের সাথে সাথে যাকাতের আদেশ করা হয়েছে এবং যাকাত আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর অনুগত মুমিনদের জন্য অশেষ সাওয়াব, রহমত ও মাগফিরাতের পাশাপাশি আত্মশুদ্ধিরও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন- ‘তোমরা নামায কায়েম কর এবং যাকাত দাও। তোমরা নিজের জন্যে পূর্বে যে সৎকর্ম প্রেরণ করবে, তা আল্লাহর কাছে পাবে। তোমরা যা কিছু কর, নিশ্চয় আল্লাহ তা দেখছেন’। (সূরা বাকারা, আয়াত ১১০)।

হেফাজত আমীর বলেন, পবিত্র কুরআন মাজীদে এত অধিক গুরুত্বের সঙ্গে নামায ও যাকাত প্রসঙ্গ এসেছে যে, এটা আদায় করা ছাড়া ঈমান ও ইসলাম পরিপূর্ণ মেনে চলার দাবি করার সুযোগ থাকে না। যাকাত শরীয়তের এমন এক অকাট্য ও স্পষ্ট বিধান, যে সম্পর্কে দলীল-প্রমাণের আলোচনারই কোন জরুরত নেই। যাকাত ফরয হওয়া সম্পর্কে কারো মাঝেই কোনোরূপ মতভেদ নেই। যাকাতের অপরিহার্যতাকে যে অস্বীকার করে, সে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যায়।

আল্লামা বাবুনগরী বলেন, হাদীস শরীফে এসেছে, “যাকে আল্লাহ সম্পদ দিয়েছেন কিন্তু সে তার যাকাত দেয়নি, কিয়ামতের দিন তা বিষধর সাপরূপে উপস্থিত হবে এবং তার গলা পেঁচিয়ে ধরবে। সাপটি তার চেহারার দুই পাশে দংশন করতে করতে বলবে, আমিই তোমার ঐ অর্থকড়ি, আমিই তোমরা পুঞ্জিভূত সম্পদ”। (সহীহ বুখারী)।

তিনি আরো বলেন, একদিকে রমযানে যে কোন ইবাদত-বন্দেগী ও দান-সদক্বায় অধিক নেকী এবং অফূরন্ত বরকত অর্জিত হয়। অন্যদিকে করোনা মহামারির কারণে প্রায় দুই মাস যাবত গরীব, দিনমজুর ও শ্রমিকদের কোন আয় রোজগার নেই। অনেক দু:খ-কষ্টে পরিবার নিয়ে তারা দিনগুজরান করছেন। সুতরাং ঈদুল ফিতরের আগে আগে সদক্বায়ে ফিতর ও যাকাতের অর্থ যথাযথ প্রাপ্য হক্বদার গরীব-মিসকীনদের মাঝে বিলিবণ্টন করে দিন। এতে জিম্মাদারি মুক্ত হওয়ার পাশাপাশি মাহে রমজানে দান-সদক্বার যেমন ব্যাপক ফযীলত ও বরকত অর্জিত হবে, তেমনি মানবিক সংকটে সহযোগিতার কারণে মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভ হবে।

আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী সাদক্বায়ে ফিতর ও যাকাতের জরুরী মাসআলা-মাসায়েল কারো জানা না থাকলে স্থানীয় অভিজ্ঞ মুফতি ও হক্কানী আলেমদের কাছ থেকে জেনে নিতে উপদেশ দেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আল্লামা বাবুনগরী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ