মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং সউদী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ধারা উন্নয়নে দৃঢ় প্রতশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। গতকাল পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক বিবৃতিতে একথা বলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জেদ্দায় সউদী যুবরাজের সাথে সাক্ষাত করেন এবং দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক ইস্যুতে বিস্তৃত আলোচনা করেছেন। ‘আলোচনাটি ব্যতিক্রমী সৌহার্দ্য এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বমুখী পথটিকে শক্তিশালী করার অঙ্গীকার দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছে’। উভয় পক্ষই সব ক্ষেত্রে আরো জোরালো সহযোগিতার বিষয়ে একমত হয়েছে।
সরকারি বিবৃতিতে আরো যোগ করা হয়েছে যে, প্রধানমন্ত্রী দু’টি পবিত্র মসজিদের কাস্টডিয়ান, বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং যুবরাজকে তার দেশে আমন্ত্রণের জন্য ধন্যবাদ জানান। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান রমজানের বিশেষ দিনে দু’টি পবিত্র মসজিদ যিয়ারতের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, ‘দুই নেতা দু’দেশের মধ্যে দৃঢ় ও ঐতিহাসিক বন্ধনকে যৌথ বিশ্বাস, সাধারণ মূল্যবোধ, পারস্পরিক আস্থা এবং পারস্পরিক সমর্থনের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যকে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন’। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সউদী আরবের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতার জন্য পাকিস্তানের অবিচ্ছিন্ন সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন এবং পাকিস্তানের জনগণের পক্ষে দুটি পবিত্র মসজিদের ভূমিতে বিশেষ শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে যে, বৈঠক চলাকালে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা ও সুরক্ষা সম্পর্ককে আরো জোরদার, গভীর ও বৈচিত্র্যময় করতেয় একমত হয়েছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পাকিস্তানে সউদী বিনিয়োগ বাড়ানো, জ্বালানির ক্ষেত্রে সহযোগিতা এবং সউদী আরবে পাকিস্তানীদের চাকরির সুযোগ বাড়ানোর বিষয়ে বিশেষ জোর দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান যুবরাজের সম্প্রতি চালু হওয়া ‘গ্রিন সউদী আরব এবং গ্রিন মিডল ইস্ট’ উদ্যোগের প্রশংসা করেন এবং ‘১০ বিলিয়ন ট্রি সুনামি’সহ যুবরাজেরর দৃষ্টিভঙ্গি এবং তার নিজস্ব পরিবেশ-সংক্রান্ত উদ্যোগের মধ্যে সমন্বয় গড়ে তোলার প্রত্যাশা করেন।
সউদীতে ২০ লাখেরও বেশি পাকিস্তানি প্রবাসীর ইতিবাচক ও গঠনমূলক ভূমিকার স্বীকৃতি স্বরূপ দুই নেতা মানবসম্পদ খাতে সহযোগিতা থেকে পারস্পরিক সুবিধাকে সর্বাধিকতর করার উপায় নিয়ে আলোচনা করেছেন -পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। ইমরান খান চলমান কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীন পাকিস্তানি প্রবাসীদের কল্যাণে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সউদী নেতৃত্বকে ধন্যবাদ জানান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, দুই নেতা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে মতবিনিময় করেন। এই কথোপকথনে আরো বলা হয়েছে যে, প্রধানমন্ত্রী ইমরান জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার জন্য একটি শান্তিপূর্ণ প্রতিবেশ সম্পর্কে তার দৃষ্টিভঙ্গির রূপরেখা দিয়েছেন।
ভারতের অবৈধভাবে দখলকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের (আইআইওজেকে) পরিস্থিতি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এ বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানের গুরুত্বের উপর জোর দেন। তিনি আফগানিস্তানে শান্তি ও পুনর্মিলনকে সমর্থন করার জন্য পাকিস্তানের ধারাবাহিক প্রচেষ্টার কথাও তুলে ধরেন। তিনি আঞ্চলিক শান্তি ও সুরক্ষাকে আরও শক্তিশালীকরণ ও আরও উন্নীত করার লক্ষ্যে সউদী আরবের প্রচেষ্টা এবং উদ্যোগের জন্য যুবরাজের প্রশংসা করেন।
বৈঠকের পরে প্রধানমন্ত্রী ও যুবরাজ সউদী-পাকিস্তান সুপ্রিম কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিল (এসপিএসসিসি) প্রতিষ্ঠার বিষয়ে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। প্রধানমন্ত্রী ইমরান ও ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের যৌথ সভাপতিত্বে গঠিত এই কাউন্সিলটি পাকিস্তান-সউদী সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে কৌশলগত দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য গঠন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান আশা প্রকাশ করেন যে, এসপিএসসিসি সকল ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বর্ধনের ক্ষেত্রে অনুঘটক ভূমিকা পালন করবে।
এদিকে সউদী আরব ও পাকিস্তান দু’দেশের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নে গতকাল একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। বিতর্কিত কাশ্মীর প্রশ্নে এ দুই ঘনিষ্ঠ মিত্র দেশের মধ্যে মাসের পর মাস ধরে চলা সম্পর্কের টানাপোড়নের পর তারা এমন চুক্তি করলো। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে দেখতে যাওয়া প্রথম বিদেশি দেশ সউদী আরব হলেও গত বছর ইসলামাবাদের সাথে রিয়াদের সম্পর্কের চিড় ধরতে দেখা যায়। দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আরো জানায়, উভয় দেশের কর্মকর্তারা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড মোকাবেলায় পশ্চিমাঞ্চলীয় জেদ্দা নগরীতে দু’টি চুক্তি স্বাক্ষর করেন। তারা মাদক চোরাচালানের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি জ্বালানি, অবকাঠামো, পরিবহন, পানি ও যোগাযোগ প্রকল্পে অর্থায়নের ব্যাপারে দু’টি সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষরের বিষয়েও সম্মত হন। এ সফরকালে খান রিয়াদের সাথে সম্পর্কোন্নয়নের বিষয়ে এবং সউদী আরবে প্রায় ২৫ লাখ পাকিস্তানী কর্মীর চাহিদার ওপর বেশি গুরুত্ব দেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর ইতোমধ্যে তিনি ছয়বার সউদী আরব সফর করেন।
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খুব শিগগিরই সুবিধামতো পাকিস্তান সফরের জন্য যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে আমন্ত্রণ জানান।
এর আগে, গত শুক্রবার জেদ্দা বিমানবন্দরে পৌঁছার পরে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে সউদী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান স্বাগত জানান। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কুরেশি ছাড়াও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ রশিদ, সিনেটর ফয়সাল জাভেদ এবং অন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সরকারি প্রতিনিধি দলের অংশ রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর সফরের প্রস্তুতির অংশ বলে মনে করা এক সফরে সেনাবাহিনী প্রধান (সিওএএস) জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া গত ৪ মে রিয়াদ পৌঁছেছিলেন। সূত্র : এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।