Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঠিকাদারের হাতে প্রকৌশলী লাঞ্ছিত

বরগুনা জেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ৮ মে, ২০২১, ১২:০১ এএম

বরগুনা সদর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী পদে কর্মরত এক প্রকৌশলীকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে নিজ কার্যালয়ের সামনে স্থানীয় ঠিকাদার মো. ফরহাদ জোমাদ্দার তাকে লাঞ্ছিত করেন। লাঞ্ছিত প্রকৌশলীর নাম মো. মিজানুর রহমান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নিজ কার্যালয়ে সামনে মোটরসাইকেলে বসা ছিলেন প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান। এসময় ঠিকাদার ফরহাদ জোমাদ্দার তাকে ঘুষখোর বলে গালিগালাজ করতে থাকলে প্রকৌশলী মিজানুর রহমান প্রতিবাদ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ঠিকাদার ফরহাদ জোমাদ্দার তার মোটরসাইকেলে লাথি মেরে ও মিজানকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। এরপর মিজানুর রহমান উঠে দাঁড়ালে ফরহাদ জোমাদ্দার তাকে কিল-ঘুষি মেরে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। এসময় ঘটনাস্থলে সদর উপজেলা পরিষদের ও উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের কর্মচারীরাসহ সদর উপজেলার বেশ কয়েকজন চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন। পরে তারা পরিস্থিতি শান্ত করেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বরগুনা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম আহাদ সোহাগ বলেন, উপজেলা পরিষদে আমাদের একটি মিটিং ছিল। মিটিং শেষ করে ভবন থেকে নামার সময় আমরা দেখি মারামারি করছেন তারা। পরে আমিসহ সেখানে আরও বেশ কয়েকজন চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলাম। পরে আমরা পরিস্থিতি শান্ত করি। তবে কী নিয়ে ঘটনা ঘটেছে, তা তিনি জানেন না।

এ বিষয়ে ঠিকাদার মো. ফরহাদ জোমাদ্দার বলেন, প্রকৌশলী মিজানুর রহমান একজন অসৎ কর্মকর্তা। ঘুষ ছাড়া তার কলম চলে না। ঘুষের জন্য তিনি আমার জামানতের টাকা আটকে রেখেছেন। বরগুনার অনেক ঠিকাদারের টাকা তিনি আটকে রেখেছেন। আবার অনেকে ঘুষ দিয়ে জামানতের টাকা পেয়েছেন। আমি ঘুষ দিতে রাজি না হওয়ায় তিনি আমার কাজ করবেন না। এ জন্য আমি তাকে মেরেছি। পরে আবার তার পা ধরে মাফ চেয়েছি।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, নলী এলাকায় আমার একটি কাজের তদারকি করতে গিয়ে ওই ইঞ্জিনিয়ার বিটুমিনে লাথি মেরে ফেলে দিয়েছিলেন। আমি ওই থেকেই তার উপর ক্ষিপ্ত। তিনি দাবি করেন, ঘুষ-বাণিজ্যের মাধ্যমে বরগুনার আমতলী পাড় এলাকায় মিজানুর রহমান ৫তলা ভবন নির্মাণ করেছেন। ঘুষ গ্রহণের মাধ্যমে এ প্রকৌশলী অঢেল সম্পত্তি গড়েছেন বলেও অভিযোগ এই ঠিকাদারের।
এ ব্যাপারে প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান বলেন, ফরহাদ জোমাদ্দার নলীসহ কয়েকটি এলাকায় নিম্নমানের কাজ করার আমি বিরোধিতা করি। এতে তিনি আমার উপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। গতকাল অফিসে এসে তারই জের হিসেবে আমার উপর চড়াও হয়ে লাঞ্ছিত করেন।
তিনি আরো বলেন, এ ঘটনার জন্য উপস্থিত সকলের সামনে আমার পা জড়িয়ে ধরে ক্ষমা চেয়েছেন। তবে এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি বরগুনার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী এসকে আরিফুল ইসলাম।

বরগুনা সদর থানার ওসি কে এম তরিকুল ইসলাম বলেন, এ রকম কোনো ঘটনার আমি অবগত নই। এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। একজন সরকারি কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনা সহ্য করার মতো নয়। এ বিষয়ে আমি এখনই খোঁজ নিচ্ছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ