পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চলতি মে মাসে (বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ) দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে ২ থেকে ৩ দিন বজ্র ও শিলাবৃষ্টিসহ মাঝারি থেকে প্রবল আকারে কালবৈশাখী ঝড় সংঘটিত হতে পারে। দেশের অন্যত্র ৫ থেকে ৭ দিন হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কালবৈশাখী ঝড় হতে পারে। এ মাসে দেশের পশ্চিমাঞ্চলে একটি তীব্র তাপপ্রবাহ (৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঊর্ধ্বে) বয়ে যেতে পারে।
তাছাড়া সারাদেশে মৃদু (৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি) থেকে মাঝারি (৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি) তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। মে মাসে বঙ্গোপসাগরে এক বা দু’টি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এরমধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়ার আশঙ্কা রয়েছে। গতকাল রোববার আবহাওয়া বিভাগের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্র ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির সভায় চলতি মে মাসের উপরোক্ত দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান ও আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ।
সভা সূত্রে পূর্বাভাসে আরও জানা গেছে, চলতি মে (বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ) মাসেও স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এ অবস্থায় দেশের খরা-অনাবৃষ্টি ও তাপদাহ পরিস্থিতি আরও দীর্ঘায়িত হতে পারে। আবহাওয়া বিভাগের বৃষ্টিপাতের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, গত এপ্রিল (চৈত্র-বৈশাখ) মাসে সারাদেশে সার্বিকভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে গড়ে ৭৯ শতাংশই কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। অর্থাৎ খরা-অনাবৃষ্টি বিরাজ করে। বিগত নভেম্বর থেকে টানা ছয় মাস যাবত দেশে খরা-অনাবৃষ্টি বিরাজ করছে।
এরমধ্যে গত ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত টানা পাঁচ মাসে সারাদেশে গড়ে ৯১ শতাংশই স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাত তথা খরা-অনাবৃষ্টি চলছে। সেই সঙ্গে অবিরাম শুষ্ক-রুক্ষ আবহাওয়া ও অসহনীয় তাপদাহের কবলে পড়েছে দেশ। ফল-ফসল, পরিবেশ-প্রকৃতি, জীববৈচিত্র্য, জনস্বাস্থ্যের উপর পড়েছে মারাত্মক বিরূপ প্রভাব-প্রতিক্রিয়া। বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠেছে। সেচের পানির অভাবে চাষাবাদ হচ্ছে বিপর্যস্ত। বেড়েছে কৃষকের আবাদ-উৎপাদন খরচ।
আবহাওয়া বিভাগের পর্যালোচনায় অনাবৃষ্টির মূল প্রাকৃতিক বা আবহাওয়াগত কারণ সম্পর্কে জানা গেছে, পশ্চিমা ও পূবালী বায়ুপ্রবাহের প্রভাব বা সংযোগ কম থাকায় অল্পস্বল্প বৃষ্টিপাত হয়েছে। গেল এপ্রিল মাসে সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে গড়ে ৭৯ শতাংশই কম বৃষ্টিপাত হয়। গত মার্চ মাসে দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে গড়ে ৭৯ দশমিক ৬ শতাংশ কম, গত ফেব্রæয়ারিতে দেশে ৯৯ শতাংশই কম, গত জানুয়ারি মাসে ৯৭.৭ ভাগই কম এবং ডিসেম্বর মাসে সারা দেশে বৃষ্টিপাত হয় স্বাভাবিকের চেয়ে গড়ে ৯৮.৮ শতাংশই কম। অর্থাৎ টানা পাঁচ মাসে দেশে বাস্তবে তেমন বৃষ্টিই ঝরেনি।
গত এপ্রিল মাসে দেশে দিনের সর্বোচ্চ ও রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে যথাক্রমে ১.৭ এবং ০.২ ডিগ্রি সে. বেশিই ছিল। গেল মাসের ২৫ তারিখে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৪১.২ এবং রাজধানী ঢাকায়ও একই দিনে ৩৯.৫ ডিগ্রি সে.। যা গত সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড। ২১ এপ্রিল ঢাকায় কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যায় ঘণ্টায় ৮৩ কিলোমিটার বেগে।
এদিকে চলতি মে মাসে দেশের উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কিছু এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে স্বল্পমেয়াদি আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে সতর্ক করা হয়েছে।
বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি-বজ্রবৃষ্টি-তাপদাহ
গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের দুয়েক জায়গায় মাঝারি থেকে ভারী বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে। এরমধ্যে নিকলিতে ৭৫, নেত্রকোণায় ১৩, শ্রীমঙ্গলে ৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৩৭.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকার তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৩৬.২ এবং সর্বনিম্ন ২৫.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের বেশিরভাগ জেলায় নেই ছিটেফোঁটা বৃষ্টিও। ফলে অসহনীয় তাপদাহ অব্যাহত রয়েছে। মে মাসের প্রথম দিনে দেশের অনেক জেলায় হালকা বৃষ্টি-বজ্রবৃষ্টি ও দমকা হাওয়া বয়ে যায়।
আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি-বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।
তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি এবং এ সম্পর্কিত পূর্বাভাসে জানা গেছে, ঢাকা, টাঙ্গাইল, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, নোয়াখালী, ফেনী, পাবনা, পটুয়াখালী, খেপুপাড়া অঞ্চলসহ খুলনা বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা কিছু কিছু জায়গায় কমে আসতে পারে। সারাদেশের দিন ও রাতের তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টি-বজ্রবৃষ্টির প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে। এরপরের ৫ দিনে আবহাওয়ায় কিছুটা পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে।
আন্তর্জাতিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ স্যাটেলাইট সংস্থাসমূহ এবং বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া বিভাগের পূর্বাভাসে জানা যায়, চলতি মে মাসের গোড়া থেকে বাংলাদেশ এবং এর সংলগ্ন উত্তর-পূর্ব ভারতে মেঘ-বৃষ্টির আবহ তৈরি হচ্ছে। বঙ্গোপসাগর থেকে মেঘমালা এদিকে আসছে। গরম বাতাস ধীরে ধীরে কেটে গিয়ে বায়ুপ্রবাহ, তাপমাত্রা তথা আবহাওয়ায় পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে।
পাউবো’র পূর্বাভাসে উজানে ভারতে বর্ষণ
গতকাল পাউবো’র বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভ‚ঁইয়া বৃষ্টিপাত সম্পর্কিত বিশেষ পূর্বাভাস প্রতিবেদনে জানান, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর এবং বৈশি^ক আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্য-উপাত্ত মতে ১ থেকে ৭ মে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং এর সংলগ্ন ভারতের আসাম, মেঘালয় ও ত্রিপুরা প্রদেশে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।
এ সময়ে শেরপুরের ভুগাই, নেত্রকোণার কংস ও সোমেশ্বরী, সুনামগঞ্জের জদুকাটা, পুরাতন সুরমা ও সুরমা, সিলেটের সারিগোয়াইন, সুরমা ও কুশিয়ারা, মৌলভীবাজারের মনু এবং হবিগঞ্জের খোয়াই নদ-নদীসমূহের পানির সমতল সময়বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বিপদসীমার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
অপর এক পূর্বাভাসে পাউবো জানায়, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও এর সংলগ্ন ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা, সিকিম ও হিমালয় পাদদেশীয় অঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এরফলে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদ-নদীসমূহের পানি বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে বিপদসীমার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ভারতে বৃষ্টিপাতের কারণে উত্তরাঞ্চলের তিস্তা ও ধরলা নদীর পানির সমতল দ্রæত বৃদ্ধি পেতে পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।