Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘ভাগ্যের’ ওয়ানডেতে সিরিজ জয়

প্রথম হ্যাটট্রিক রুমানার

প্রকাশের সময় : ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস রিপোর্টার : বাংলাদেশ থেকে আয়ারল্যান্ড যাবার পর থেকে জাহানারাদের পিছু ছাড়েনি বৃষ্টি। প্রথম টি-২০ মাঠে গড়ালেও জয়ের দ্বারপ্রান্ত থেকে বাংলাদেশ নারী দলকে ফিরতে হয় ৬ রানের হার নিয়ে। দ্বিতীয় ম্যাচটিতো মাঠেই গড়াতে পারেনি, ভেসে যায় বৃষ্টির তোড়ে। সিরিজ হারতে হয় জাহানারা-কুবরাদের। ওয়ানডে সিরিজেও একই পরিণতি। বেরসিক বৃষ্টিতে ভেস্তে যেতে বসেছিলো কোন ম্যাচ না হয়েই। একটি বলও মাঠে গড়ায়নি প্রথম ওয়ানডের। কার্টেল ওভারে দ্বিতীয়টি শুরু হলেও মাঝপথে (১৮ ওভারে আয়ারল্যান্ড ৬৮/০) থামতে হয় বৃষ্টির জন্য। অবশেষে দু’পক্ষের সমঝতায় শিডিউলে না থাকা ‘তৃতীয় ম্যাচের’ আবির্ভাব সিরিজে। যেটিতে দুর্দান্ত এক জয়ে ঈদের আগে খুশির বারতা দিয়েছে বাংলাদেশের নারী দল। বাংলাদেশের প্রথম নারী ক্রিকেটার হিসেবে এই ম্যাচেই ওয়ানডেতে হ্যাটট্রিক করেছেন রুমানা আহমেদ। তার ইতিহাস গড়া ম্যাচে আয়ারল্যান্ড মহিলা ক্রিকেট দলকে ১০ হারিয়েছে অতিথিরা। তৃতীয় ওয়ানডের এই জয়ে ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছে জাহানারা আলমের দল। গেলপরশু বেলফাস্টের ইনস্টনিয়ান্স ক্রিকেট ক্লাব মাঠে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৪০.১ ওভারে ১০৬ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। জবাবে ৩৭.৫ ওভারে ৯৬ রানে গুটিয়ে যায় আয়ারল্যান্ডের ইনিংস।
এই জয়টি আরো বড় হয়েছে রুমানার হ্যাটট্রিকের কল্যাণে। ছেলেদের টেস্ট-ওয়ানডেতে হ্যাটট্রিকের কীর্তি বেশ কয়েকবারই হয়েছে। মেয়েদের ক্রিকেটে সেই গৌরবের মণিহার পরলেন রুমানা আহমেদ। গেলপরশু রাতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডেতে হ্যাটট্রিকটা মেয়েদের ক্রিকেটের যেকোনো সংস্করণেই বাংলাদেশের প্রথম। সবমিলে মেয়েদের ক্রিকেটের এটা ১৭তম হ্যাটট্রিক, আর ওয়ানডেতে নবম।
একটা দিক দিয়ে রুমানার হ্যাটট্রিকটা একটু আলাদা। মেয়েদের ক্রিকেটে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে এটাই কারও প্রথম হ্যাটট্রিক। আয়ারল্যান্ডের হয়েও অবশ্য এর আগে হ্যাটট্রিকের কীর্তি ছিল, সাবিহ ইয়াং ২০০১ সালে সেটি করেছিলেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে।
তিন সংস্করণ মিলে প্রথম হ্যাটট্রিকটা সেই ১৯৫৮ সালে। অস্ট্রেলিয়ার বেটি ওয়াটসন মেলবোর্নের টেস্টে সেটি করেছিলেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। এরপর আরেকটি হ্যাটট্রিকের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে আরও ৩৫ বছর। ১৯৯৩ সালে ইংল্যান্ডের ক্যারল হজসের সেই কীর্তি ছিল ডেনমার্কের বিপক্ষে, মেয়েদের বিশ্বকাপে। ওই বিশ্বকাপেই নিউজিল্যান্ডের জুলি হ্যারিস ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেটির পুনরাবৃত্তি করেছিলেন।
হ্যারিসের কীর্তিটা আরেকটা দিক দিয়েও প্রথম ছিল, কোনো ফিল্ডারের ‘সাহায্য’ ছাড়াই পরপর তিন বলে উইকেট পেয়েছিলেন। হ্যারিসের তিনটি উইকেটই ছিলে এলবিডব্লিউ, রুমানারও তাই। তিনটি উইকেটই এলবিডব্লিউতে পাওয়ার রেকর্ড আর কারও নেই। কোনো ফিল্ডারের যোগসূত্র ছাড়া হ্যাটট্রিক করেছেন আরও তিনজন। ২০১১ সালে অস্ট্রেলিয়ার রেনে ফ্যারেল, ২০১৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার ড্যান ফন নিকার্ক ও গত বছর পাকিস্তানের সানা মীরের।
তবে ফন নিকার্ক যা করেছেন, সেটা আর কেউই করতে পারেননি। হ্যাটট্রিক তো ছিলই, ওই এক ওভারেই নিয়েছিলেন আরও একটি উইকেট। সব সুদ্ধ এক ওভারে আউট করেছিলেন চারজনকে। মেয়েদের ক্রিকেটে অবশ্য একাধিক হ্যাটট্রিক এখনো কেউ করতে পারেননি, আবার সব হ্যাটট্রিকই হয়েছে আলাদা আলাদা ভেন্যুতে। তিন সংস্করণ মিলে সবচেয়ে বেশিবার হ্যাটট্রিক করেছেন ইংল্যান্ড ও পাকিস্তানের মেয়েরা, তিনবার করে। আর সবচেয়ে বেশি হ্যাটট্রিক হয়েছে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চারবার। বাংলাদেশের বিপক্ষেও হ্যাটট্রিক হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার মারিজানে কাপ ২০১৩ সালে সেটি করেছিলেন পচেফস্ট্রুমের টি-টোয়েন্টিতে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ৪০.১ ওভারে ১০৬ (সানজিদা ৩৩, আয়েশা ৫, ফারজানা ৩, রুমানা ০, নিগার ১, ফাহিমা ০, রিতু ১৩, জাহানারা ১৪, নাহিদা ১১, কুবরা ০*, পান্না ০; কেনেলি ৪/৩২, গার্থ ২/২৪, লুসি ১/৯, সিয়ারা ১/১৯)
আয়ারল্যান্ড: ৩৭.৫ ওভারে ৯৬ (কেন্ডাল ২৩, সেসেলিয়া ৩৫, কাভানাহ ০, ডিল্যানি ২৬, ইসোবেল ২, গার্থ ০, শিলিংটন ০, ওয়ালড্রন ০, কেনেলি ০, লুসি ১*, সিয়ারা ০; রুমানা ৩/২০, ফাহিমা ২/১৩, কুবরা ২/২০, নাহিদা ১/১৮)
ফল: বাংলাদেশ ১০ রানে জয়ী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ‘ভাগ্যের’ ওয়ানডেতে সিরিজ জয়

১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ