পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনা লকডাউনে চট্টগ্রাম বন্দরে বাড়ছে আমদানি পণ্যের চাপ। জেটি ইয়ার্ডে জমছে কন্টেইনার। গতকাল রোববার বন্দরে ৩৫ হাজার ৯৩২ টিইইউএস কন্টেইনার ছিল। বন্দরে মোট ধারণক্ষমতা ৪৯ হাজার ১০০ টিইইউএস। কন্টেইনারের পাশাপাশি বাড়ছে কার্গোও। বিশেষ করে রিফার ইয়ার্ডে তাজা ফল ও আদা, রসুন বোঝাই কন্টেইনারের সংখ্যা ধারণক্ষমতাকে ছাড়িয়ে গেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বন্দরে আমদানি খালাস অনুপাতে কন্টেইনার ও কার্গো ডেলিভারি পরিবহন কমে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এক শ্রেণির আমদানিকারক বন্দর ইয়ার্ডকে গুদাম হিসেবে ব্যবহার করছে। বন্দর থেকে কন্টেইনার ও পণ্য ডেলিভারি পরিবহন দ্রুত না বাড়লে জটের কবলে পড়ার শঙ্কায় দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি চট্টগ্রাম বন্দর।
চট্টগ্রাম বন্দর দেশের আমদানি-রফতানির ৯২ শতাংশের অধিক পণ্য এবং ৯৮ শতাংশ কন্টেইনার জাত পণ্য হ্যান্ডলিং করে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণে দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যেও সচল চট্টগ্রাম বন্দর। কঠোর লকডাউনেও মুহূর্তের জন্য বন্ধ হয়নি বন্দরের কার্যক্রম। কঠোর লকডাউন শুরুর প্রথম দিন ১৪ এপ্রিল বন্দরে পাঁচ হাজার ১৫১ টিইইউএস কন্টেইনার খালাস হয়। ১৫ এপ্রিল তিন হাজার ১২২, ১৬ এপ্রিল তিন হাজার ৫৯৮, ১৭ এপ্রিল তিন হাজার ৫০০, ১৮ এপ্রিল তিন হাজার ৫৫০, ১৯ এপ্রিল দুই হাজার ৫৩০, ২০ এপ্রিল তিন হাজার ৮০৪, ২১ এপ্রিল তিন হাজার ৮৭০ এবং ২২ এপ্রিল খালাস হয়েছে তিন হাজার ৫৫৯ টিইইউএস।
সর্বশেষ শনিবার চট্টগ্রাম বন্দরে চার হাজার টিইইউএস কন্টেইনার খালাস হয়। ওইদিন ডেলিভারি হয়েছে ৩ হাজার ৭০০ টিইইউএস। বন্দর সূত্র জানায়, বন্দরের অভ্যন্তরে খালাসের তুলনায় ডেলিভারি কম হওয়ায় জেটি ইয়ার্ডে কন্টেইনারের সংখ্যা বাড়ছে। কার্গো হ্যান্ডলিং স্বাভাবিক থাকলেও পরিবহন কম হচ্ছে। এতে বিভিন্ন ইয়ার্ডে কার্গো বাড়ছে। সবচেয়ে বেশি কন্টেইনারের চাপ বন্দরের রিফার ইয়ার্ডে। ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত রিফার কন্টেইনার নিয়ে বিপাকে বন্দর কর্তৃপক্ষ। রেলপথে কন্টেইনার পরিবহনও হচ্ছে অতিসামান্য।
রমজান উপলক্ষে আমদানিকৃত বিপুল পরিমাণ তাজা ফল, আদা, রসুন, মসলা বোঝাই এসব কন্টেইনার বন্দর থেকে খালাস নেয়া হচ্ছেনা। ঈদ পরবর্তী সময়ে বাজার ধরার জন্য আমদানিকারকেরা বন্দর ইয়ার্ডকে গুদাম হিসেবে ব্যবহার করছে। জাহাজ থেকে নামানোর পর ফল বোঝাই এফসিএল কন্টেইনার ফ্রি-টাইম পার হওয়ার পরও অধিকাংশ আমদানিকারক তা ডেলিভারি নিচ্ছেন না। তাজা ফলসহ পচনশীল পণ্য থাকায় এসব কন্টেইনার সার্বক্ষণিক বৈদ্যুতিক সংযোগসহ ফ্রিজের মত সংরক্ষণ করতে হয়। চট্টগ্রাম বন্দরের সংশ্লিষ্ট ইয়ার্ডে ১৭৮২টি প্লাগ পয়েন্ট রয়েছে। এসব প্লাগ পয়েন্ট থেকে বড় বড় কন্টেইনারে সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। প্লাগ পয়েন্টের তুলনায় ইয়ার্ডে অতিরিক্ত কন্টেইনার মজুদ রয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে দ্রুত এসব কন্টেইনার খালাস করে নেয়ার নির্দেশনা জারি হলেও তাতে তেমন সাড়া মেলেনি।
বন্দরে জট কমাতে তৈরি পোশাক খাতের আমদানিকৃত কাঁচামাল ভর্তি কন্টেইনার বেসরকারি কন্টেইনার ডিপোতে খালাসের উদ্যোগ নেয়া বন্দর কর্তৃপক্ষ। তাতে আপত্তি জানায় তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড- এনবিআরকে চিঠি দিয়ে আগের নিয়মেই বন্দর থেকে আমদানি কাঁচামাল ডেলিভারি নেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়। বিজিএমইএ বলছে, বিশ^ব্যাপী করোনা মহামারীর কারণে এমনিতেই পোশাক খাত সঙ্কটে পড়েছে। তার ওপর বেসরকারি ডিপোতে কাঁচামাল খালাস করতে গেলে সময় এবং অর্থ দুটোই বেশি ব্যয় হবে। এতে তৈরি পোশাক শিল্প আরও সঙ্কটে পড়বে।
বন্দরের পক্ষ থেকে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান, চিটাগাং চেম্বার, বিজিএমইএ, বিকেএমইএসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে দ্রুত আমদানি পণ্যবোঝাই কন্টেইনার খালাস করে নেয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। বন্দরে জটের আশঙ্কা থেকে কর্তৃপক্ষ এমন চিঠি ইস্যু করে। তবে এরপরও বন্দরকে গুদাম হিসেবে ব্যবহার করার প্রবণতা কমছে না। এ অবস্থায় কন্টেইনার ডেলিভারি-পরিবহন দ্রুত বাড়ানো না হলে বন্দরে কন্টেইনার ও পণ্যজট সেইসাথে জাহাজ জটের আশঙ্কা প্রবল হচ্ছে।
তবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, আপাতত বন্দরে জট পরিস্থিতি নেই। চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনারের ধারণক্ষমতা ৪৯ হাজার ১০০। এর বিপরীতে কন্টেইনার রয়েছে ৩৫ হাজার ৯৩২ টিইইউএস। তিনি বলেন, খালাসের তুলনায় ডেলিভারি পরিবহন কম হওয়ায় কন্টেইনারের সংখ্যা বাড়ছে। তবে বন্দরের পক্ষ থেকে আমদানিকারকদের দ্রুত কন্টেইনার খালাস করতে চিঠি দেয়া হয়েছে। আশা করি কন্টেইনার খালাস আরও বাড়বে। আমরা পরিস্থিতি সামাল দিতে পারব। চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে আটটি জাহাজে পণ্য ওঠানামা চলছে। বহির্নোঙ্গরে ৪৭টি জাহাজে কাজ হচ্ছে।
এদিকে এনবিআরের অনুমোদন সাপেক্ষে ৩৮ ধরনের পণ্যবাহী কন্টেইনার বেসরকারি কন্টেইনার ডিপোতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেখান থেকে আমদানি পণ্য খালাস দেয়া হচ্ছে। বেসরকারি ডিপো মালিকদের সংগঠন-বিকডার সেক্রেটারি রুহুল আমীন জানান, বেসরকারি ডিপোগুলোতে গতকাল পর্যন্ত ৪৮ হাজারের মত কন্টেইনার মজুদ ছিল। ধারণক্ষমতা ৭৭ হাজার ৭০০ টিইইউএস।
এদিকে করোনার মধ্যেও চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ আগমন, কন্টেইনার ও কার্গো হ্যান্ডলিংয়ে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। বন্দরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চ মাসে আগের বছরের মার্চ মাসের তুলনায় কন্টেইনার ও কার্গো হ্যান্ডিলিংয়ে প্রবৃদ্ধি প্রায় ৭.৭ শতাংশ এবং জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ে ২.৭ শতাংশ বেড়েছে। গত বছর করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পরও কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছিল ২৭ লাখ ৩৯ হাজার ৯৭৭ টিইইউএস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।