Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সেলুনের মাঝেই পাঠাগার

নজির হোসেন নজু, সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৬ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০১ এএম

সেলুনের দোকানে লম্বা সিরিয়াল। কেউ চুল কাটাবেন, কেউবা সেভ করাবেন। দীর্ঘ এই সময়টা কারো কাটে ফোন টিপে, কারোবা গল্প-আড্ডায়। তবে, এ সময়ে যদি বই পড়া যেতো। জ্ঞান আহরণে মশগুল থাকা যেতো। তাহলে ব্যাপারটা কেমন হতো। জ্ঞানপিপাসুদের কথা মাথায় রেখে এবার তেমনি একটি সেলুন পাঠাগার গড়ে উঠেছে নীলফামারীর সৈয়দপুরে।

জানা যায়, সৈয়দপুর উপজেলার তুলসীরাম সড়কের পাশে অবস্থিত বিসমিল্লাহ সেলুন। বাইরে থেকে দেখে এই সেলুনকে অন্যসব সেলুনের মতোই মনে হবে। কিন্তু ভেতরে গেলেই বদলে যাবে দৃশ্যপট। মনে হবে যেন সেলুনের মাঝেই এক মিনি পাঠাগার। ব্যতিক্রমী এই সেলুনটি গড়ে তুলে সাড়া ফেলেছেন শাহজাদা ইসলাম (৩০) নামে একজন সেলুনের কারিগর। আর তাকে এই কাজে সহযোগিতা করেছে সৈয়দপুরের সেতুবন্ধন পাঠাগার।

সরেজমিনে দেখা যায়, দোকানে একজন গ্রাহক চুল কাটাচ্ছেন। বাকিরা নির্বিগ্নে বই পড়ছেন। জ্ঞান আহরণের মধ্য দিয়ে অপেক্ষমান সময়টা কাটাচ্ছেন। বিসমিল্লাহ সেলুনের এই পাঠাগারে আছে অর্ধশতাধিক বই। প্রতি তিনমাস পর পর বই পরিবর্তন করা হয়। দোকানের গ্রাহকরা চাইলে সেলুনেই সময় নিয়ে বই পড়তে পারেন। প্রয়োজনে বাড়িতে নিয়ে গিয়েও পছন্দের বই পড়তে পারেন। সেক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন খাতায় নাম নিবন্ধন করতে হবে। ২০২০ সালে সেলুনে মাত্র ২০টি বই দিয়ে যাত্রা শুরু করে সেলুন পাঠাগার। ধীরে ধীরে এই পাঠাগারের পরিধি বৃদ্ধি পেয়েছে। কিছু নিয়মিত পাঠকও তৈরি হয়েছে। তাইতো সৈয়দপুরের শিক্ষানুরাগীদের কাছে শাহজাদার এই সেলুন পাঠাগার যেমন প্রশংসা কুড়িয়েছে, তেমনি শাহজাদার দোকানে গ্রাহক বৃদ্ধি পাওয়ায় আয়ের পথও সুগম হয়েছে।

বিসমিল্লাহ সেলুনে চুল কাটতে আসা একজন শিক্ষক আলমগীর সরকার জানান, সব সময় এখানেই চুল কাটাই। এখানকার পরিবেশ অনেক ভালো। বই পড়ার জন্য সুন্দর একটি আবহ তৈরি করা হয়েছে। বিসমিল্লাহ সেলুনের স্বত্বাধিকারী শাহজাদা জানান, আমি এসএসসি পাস করেছি। এরপর আর পড়াশোনা করতে পারেনি। বই পড়তে আমার খুব ভালো লাগে। সময় পেলেই বিভিন্ন উপন্যাসের বই পড়ি। আমার দোকান যত দিন থাকবে এই পাঠাগারও তত দিন থাকবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ