Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তীব্র গরমের যন্ত্রণা দুর্বিষহ জনজীবন

সর্বোচ্চ যশোরে ৪০ ডিগ্রি : তাপপ্রবাহ আরো বিস্তারের আভাস

বিশেষ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ২৫ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০০ এএম

আকাশে মেঘ নেই। ছায়া নেই। বৃষ্টির দেখা নেই। দিনভর সূর্যের আগুন ঝলসে পড়ছে। গতকাল তাপমাত্রা উঠে গেছে যশোরে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা দেশের সর্বোচ্চ। চারদিকে থমকে আছে বাতাস। মাঝেমধ্যে বাতাস থাকলেও এতে মরুর আগুনঝরা উত্তাপ। বৈশাখ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ চলছে। দেশজুড়ে অসহনীয় ভ্যাপসা গরমের যন্ত্রণায় জনজীবন দুর্বিষহ। দিনে-রাতে প্রচন্ড গরমে স্বস্তি নেই কোথাও। আজও তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকার এমনকি বিস্তারের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।

গেল ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় তাপমাত্রা উঠে গেছে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, খুলনায় ৩৯.৬, সীতাকুন্ড ও চুয়াডাঙ্গায় ৩৯.৫, মংলায় ৩৯.৪, রাজশাহী, কুষ্টিয়ায় ৩৯, চট্টগ্রামে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের বেশিরভাগ জেলায় তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এমনকি তারও ঊর্ধ্বে।

এদিকে গত নভেম্বর থেকে টানা ছয় মাস যাবৎ চলমান তীব্র খরা-অনাবৃষ্টি আর গ্রীষ্মের অব্যাহত রোদের আগুনে প্রায় সবখানে ঝলসে যাচ্ছে ফল-ফসল, ক্ষেত-খামার। করোনাকালে জীবনবাজি রেখে সাহসী কৃষকবীরেরা আশায় বুক বেঁধে ফলান ফল-ফসল। এবার নজিরবিহীন খরা-অনাবৃষ্টির কারণে আবাদ-উৎপাদন সঙ্কটের মুখোমুখি পড়েছে। ইতোমধ্যে হাওড় অঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বোরো আধাপাকা ধান ও অন্যান্য ফসল, ফল-ফলাদি খরতাপে গরম বাতাসের হিটশকে ঝলসে গেছে। ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক। স্বস্তি নেই কৃষকের।

অবিরাম খরা-অনাবৃষ্টি ও তাপদাহে সর্দি, কাশি, জ¦র, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন ধরনের মৌসুমী রোগব্যাধির প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। হাসপাতাল-ক্লিনিকে রোগী ও স্বজনদের ভিড় বাড়ছে। বিশেষত শিশু-বৃদ্ধদের কষ্ট-দুর্ভোগ অবর্ণনীয়। প্রচন্ড গরমে মাহে রমজানে রোজাদাররা রহমতের বৃষ্টিপাতের জন্য আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করছেন। চাতক পাখির মতো আকাশপানে তাকিয়ে আছেন মেঘ-বৃষ্টির আলামাত দেখা মেলে কিনা।

আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, আকাশ আংশিক মেঘলাসহ সারাদেশে আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি এবং পূর্বাভাসে জানা গেছে, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, রাজশাহী বিভাগসহ ময়মনসিংহ ও শ্রীমঙ্গল অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। এই তাপপ্রবাহ আরও বিভিন্ন এলাকায় বিস্তার লাভ করতে পারে।

সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা আরও সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় আবহাওয়ার সামান্য পরিবর্তন হতে পারে। এরপরের ৫ দিনের শেষের দিকে বৃষ্টি-বজ্র বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া বিভাগ জানায়, পশ্চিমা লঘুচাপের একটি বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও এর সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।

সপ্তাহের পূর্বাভাস : চলতি সপ্তাহের কৃষি আবহাওয়া পূর্বাভাসে (২২ এপ্রিল থেকে ১ মে) আবহাওয়া অধিদফতরের কৃষি আবহাওয়া মহাশাখার উপ-পরিচালক এস এম মাহমুদুল হক জানান, এ সপ্তাহে দৈনিক উজ্জ্বল সূর্য কিরণকাল ৬ থেকে ৭ ঘণ্টার মধ্যে থাকতে পারে। এ সময়ের প্রথম দিকে রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের বিভিন্ন স্থানে এবং খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি-বজ্রবৃষ্টি এবং দেশের কোথাও কোথাও বিচ্ছিন্নভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে।

এ সপ্তাহের শেষের দিকে আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সেই সাথে ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি-বজ্রবৃষ্টির সম্ভবনা রয়েছে। এ সপ্তাহের প্রথম দিকে সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। শেষের দিকে এক থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ