Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

দিল্লি এখন ‘মৃত্যুপুরী’, শ্মশানে জায়গা না পেয়ে লোকালয়ে দাহ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ৯:৪৮ এএম

ভারতের গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, গতকাল শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) দৈনিক সংক্রমণে ফের রেকর্ড গড়েছে ভারত। একদিনে নতুন করে দেশে ৩ লাখ ৩২ হাজার ৭৩০ জন করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন। এর মধ্যে দিল্লিতেই নতুন করে আক্রান্ত ২৬ হাজার ১৬৯ জন। বৃহস্পতিবার রাতে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, দিল্লিতে এক দিনে সেখানে ৩০৬ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে জনবসতিপূর্ণ এলাকার পাশে জ্বলন্ত গণচিতার একটি ছবি প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। তারা জানিয়েছে, শুধু শ্মশানই নয়, রাজধানীর কবরস্থানগুলির অবস্থাও এক। মরদেহ সমাহিত করার জায়গা পেতে হিমশিম খেতে হচ্ছে করোনায় মৃতদের পরিবারকে।
এর আগে দেশটির গুজরাট, মধ্যপ্রদেশের মতো জেলায়ও শ্মশানের বাইরে দেহ নিয়ে সারি সারি অ্যাম্বুলেন্স দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। তবে দিল্লিতে পরিস্থিতি এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যে, শ্মশানের বাইরে লাইনেও জায়গা পাচ্ছেন না অনেকে। বাধ্য হয়ে বাড়িতেই প্রিয়জনের মরদেহ রেখে দিতে হচ্ছে।
দেশটির সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চিতানির্গত ধোঁয়ায় ঝাপসা হয়ে আসা চোখ মুছতে মুছতে সে কথাই বলছিলেন সীমাপুরীর বাসিন্দা নীতীশ কুমার। তিনি জানান, করোনায় আক্রান্ত হয়ে দুদিন আগে তার মা মারা যান। কিন্তু কোনো শ্মশানে মায়ের দেহ দাহ করার জায়গা পাননি তিনি।
বাধ্য হয়ে দুদিন বাড়িতেই মায়ের দেহ রেখে দিয়েছিলেন নীতীশ। নিজে এদিক ওদিক চষে বেড়াচ্ছিলেন। কোথায় দাহ করা যায়, জায়গা খুঁজছিলেন। শেষমেশ একটি পার্কিং লটে গড়ে ওঠা অস্থায়ী শ্মশানে মায়ের চিতায় তোলার জায়গা মেলে।
বৃহস্পতিবার সেখানেই মায়ের মরদেহের দাহ করেন তিনি। নীতীশ বলেন, কোথায় না গিয়েছি। কিন্তু কিছু না কিছু কারণে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। চিতা জ্বালানোর জন্য কাঠ পাওয়া যাচ্ছে না বলেও শুনতে হয়েছে।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘শহিদ ভগৎ সিংহ সেবা দল’-এর প্রধান জিতেন্দ্র সিংহ শান্টি বলেন, দিল্লিতে এমন দৃশ্য দেখতে হবে কেউ ভাবেনি। বাচ্চা বাচ্চা ছেলেমেয়ে, কারও বয়স ৫, কারও ১৫, কারও ২৫। তাদের দাহ করতে হচ্ছে। সদ্য বিবাহিত অনেকের দেহও শ্মশানে আসছে। চোখে দেখা যাচ্ছে না।
তিনি জানান, সীমাপুরীর পার্কিং লটে গড়ে ওঠা অস্থায়ী শ্মশানে বৃহস্পতিবার বিকেলে ৬০টি দেহ দাহ করা হয়েছে। জায়গা না পেয়ে পড়েছিল আরও ১৫টি দেহ। কিন্তু গতবছর পরিস্থিতি এতটা ভয়ংকর ছিল না। সংক্রমণ যখন সর্বোচ্চে গিয়ে ঠেকে, সেই সময়ও একদিনে সর্বাধিক ১৮টি দেহ দাহ করতে হয়েছে।
জিতেন্দ্র জানিয়েছেন, গত মঙ্গলবার একটি শ্মশানে ৭৮টি দেহ দাহ করা হয়েছে। জিতেন্দ্রর মা নিজে এক জন সরকারি স্বাস্থ্যকর্মী। ১০ দিন আগে কোভিডে সংক্রমিত হন তিনি। কিন্তু তা সত্ত্বেও কোনো হাসপাতালে জায়গা হয়নি বলে জানিয়েছেন জিতেন্দ্র। তার বক্তব্য, সরকার কিছু করছে না। নিজের পরিবারকে নিজেকেই বাঁচাতে হবে। লড়াইটা যার যার একার। সূত্র : রয়টার্স।



 

Show all comments
  • Mahmudul Hasan Khokon ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ১০:৫৭ এএম says : 0
    এটা আল্লাহর গজব ছাড়া আর কিছু নয়।
    Total Reply(0) Reply
  • Uzzal ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ১০:৫৮ এএম says : 0
    এভাবে কোন প্রাণ চলে যাক আমরা চাই না। হে পরম করুনাময় তুমি সকল মানুষ কে রক্ষা করো...
    Total Reply(0) Reply
  • আহমেদ শেহজাদ ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ১০:৫৮ এএম says : 0
    আহ আফসোস এই দিল্লিতেই মুসলমানদের রক্তাক্ত করেছিল হিন্দুরা,আজ সেই দিল্লিতেই জায়গা হচ্ছে না লাশের।
    Total Reply(0) Reply
  • Al-Amin Mazumder ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ১০:৫৮ এএম says : 0
    ভ্যাকসিন নির্মাতাদের এই অবস্থা কেন.!
    Total Reply(0) Reply
  • Kamrul Hasan Shujon ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ১০:৫৯ এএম says : 0
    আল্লাহ্‌ এই মহামারি থেকে সবাই কে হেফাজত করুক। কে কোন ধর্মের মানুষ সেটা বড় কথা নয়, সব থেকে বড় কথা হলো আমরা সবাই মানুষ
    Total Reply(0) Reply
  • Md Aminul Islam ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ১১:০০ এএম says : 0
    দুনিয়ার বার,,, আল্লাহর মার,,,
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ আনোয়ার আলী ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ২:১৩ পিএম says : 0
    মুসলিম নির্যাতন বন্ধ করুন।
    Total Reply(0) Reply
  • Muhammad Bin Boktier ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ৬:০৪ পিএম says : 0
    ভারতের মিডিয়ায় মৃত্যুর যে চিত্র দিচ্ছে ।প্রকৃত চিত্র। তার চারগুন বেশী ।এখনই বাংলাদেশর বর্ডার। সিল করতে হবে। নতুবা দেশের অবস্থা ভারতের চেয়ে খারাপ হবে। আর আমাদের চিকিৎসা ব্যাবস্থার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে। এখন নিশ্চয়ই সবাই জানেন। চিকিৎসায় আমরা সিংগাপুর বা লন্ডন হয় গেছি ।।এখন শুধু গাছের মাথায় ওঠা বাকী । সুতরাং ভারতের সাথে সব রকমের যোগাযোগ এখনই বন্ধ করতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Nazmul Hossain ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ৬:১৩ পিএম says : 0
    ভারতে বাড়লে তার এফেক্ট বাংলাদেশে পরতে পারে তাই আমাদেরও সাবধান থাকা উচিৎ,,, বাকী আল্লাহ ভরসা।
    Total Reply(0) Reply
  • Muhammad Bin Boktier ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ৬:১৪ পিএম says : 0
    প্রকৃত চিত্র। তার চারগুন বেশী ।এখনই বাংলাদেশর বর্ডার। সিল করতে হবে। নতুবা দেশের অবস্থা ভারতের চেয়ে খারাপ হবে।কারন ওদের কুম্ভ মেলা।আর মোদীর বড় বড় কথা।কাজের বেলায় লবডংকা ।ওদের শেষ করে দিয়েছে।আমাদের সুরক্ষা আমাদের ই করতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Mehadi Hasan ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ৬:১৮ পিএম says : 0
    যত যাই হোক মসজিদের ভেতরে বা তলদেশে মন্দির বা মূর্তি খোজা থামানো যাবে না কিন্তু আর মুসলমানদের উপরে নির্যাতন চলবে ,,,,আজব দেশ একটা
    Total Reply(0) Reply
  • Nazmul Hawladar ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ৬:১৮ পিএম says : 0
    বাংলাদেশে উচিত ভারতের সাথে থাকা সব গুলা বর্ডার বন্ধ করে দেওয়া।
    Total Reply(0) Reply
  • Brown Stone ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ৬:১৯ পিএম says : 0
    প্লিজ ভারতের সাথে বর্ডার বন্ধ করেন ।। ভারতের যে করোনা আছে এটা খুবই পাওয়ার ফুল এটা বাংলাদেশে আসলে অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে ।।। ভারতের প্রচুর তরুন যুবক মারা যাচ্ছে এমনকি ভ্যাকসিন ও কাজ করছে না ।।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ