স্টাফ রিপোর্টার ঃ কুরবানীর স্পট নির্ধারণ করলে নানা সমস্যার কারণে কুরবানীদাতারা এ নির্দেশ মানতে পারে নাÑ এতে সরকারের ভাবমর্যাদা ক্ষুণœ হয়। তাই কুরবানীর স্থান আর নির্ধারণ করা যাবে না। ঢাকা শহরে জনসংখ্যার অনুপাতে কমপক্ষে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে পশুর হাট বসাতে হবে। ঈদ উপলক্ষে সরকারী ছুটি আরো বাড়াতে হবে। কুরবানীর হাটে গান-বাজনা বন্ধ করতে হবে। কুরবানীর হাটের সময় বৃদ্ধি করতে হবে, প্রণোদনা দিয়ে হ্রাসকৃত মূল্যে কুরবানীর পশু সরবরাহ করতে হবে। কুরবানীর পশুর হাটের ইজারা মূল্য মাফ, হাসিল বাতিল এবং কুরবানীর পশুর মূল্য কমানোর জন্য অর্থ প্রণোদনা দিতে হবে। সিলেটে কাজল শাহ মসজিদের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইসকনসহ উগ্রবাদী হিন্দুদের হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে দোষীদের এবং বিনা কারণে মুসল্লীদের গ্রেফতারকারী উগ্রবাদী হিন্দু পুলিশ কর্মকর্তাদের বিচার করতে হবে। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আওয়ামী ওলামা লীগসহ সমমনা ১৩টি ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দ মানববন্ধনে এসব দাবি জানান।
হাফেজ মাওলানা মোস্তফা চৌধুরী বাগেরহাটির সভাপতিত্বে ও কার্যকরী সভাপতি আলহাজ্জ হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তারের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মানবন্ধনে বক্তব্য রাখেন- আলহাজ্জ কাজী মাওলানা মুহম্মদ আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী, সাধারণ সম্পাদক- বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ, আলহাজ্জ মুফতি মাসুম বিল্লাহ নাফেয়ী, সভাপতি-বঙ্গবন্ধু ওলামা ফাউন্ডেশন। মাওলানা মুহম্মদ শওকত আলী শেখ ছিলিমপুরী, দপ্তর সম্পাদক- বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ, হাফেজ আব্দুল জলিল, ডঃ কাজি মাওঃ আহমুদুর রহমান ও ডঃ মাওঃ আবদুর রহমান, ক্বারী মাওলানা মুহম্মদ আসাদুজ্জামানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
মানববন্ধনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়ানোর ব্যবস্থা করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানো হয়। এছাড়া নির্ধারিত স্থানে কুরবানী দেয়ার বাধ্যবাধকতা প্রত্যাহার করায় এবং ঈদের ছুটি বৃদ্ধি করায় সরকারকে অভিনন্দন জানান নেতৃবৃন্দ। নেতৃবৃন্দ মহাসড়কে কুরবানীর হাটের বিরোধিতাকারী নয়াদিগন্তের প্রকাশনা বন্ধ, জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধসহ তাদের সব আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাজেয়াপ্তের দাবী করেছেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, গতবছর ২৮,০০০ মন্ডপে সরকার ৫০০ কেজি করে প্রায় ৭০ কোটি টাকার চাল বরাদ্দ পেয়েছে। কিন্তু মুসলমানরা কোন বরাদ্দই পায়নি। যা বৈষম্যমূলক। তাই এবারের ঈদে সিটি কর্পোরেশন নির্ধারিত ১১৫০ স্পটে সরকারীভাবে কুরবানী করে তার গোশত দরিদ্র মুসলমানদের মাঝে ৫ কেজি করে বিলিয়ে দিতে হবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বৃহস্পতিবার সিলেটে মাওলানা আব্দুর রহমান নামে এক ইমাম সাহেবকে পরিকল্পিতভাবে হাত-পা বেঁধে গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহত ইমাম আবদুর রহমান তার ফেসবুকে গত ৩ তারিখে একটি জামায়াত-জোট তথা গয়েশ্বর মার্কা উগ্র হিন্দু সংগঠনের বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দেয়াই তার মৃত্যুর কারণ বলে তার ঘনিষ্ঠজনরা দাবি করেছেন।
তারা আরো বলেন, এই উগ্রবাদী গয়েশ্বর মার্কা হিন্দুরাই তাদের একটি মন্দির থেকে মুসলমানদের মসজিদে গুলি করে দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করে বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চাচ্ছে। এই উগ্রবাদী মৌলবাদী গয়েশ্বর মার্কা হিন্দুদের বিরুদ্ধে তথা তাদের চিহ্নিত ষড়যন্ত্রী সংগঠনটির বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষ থেকে শক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। ইসলাম ও মসজিদ নিয়ে তাদের সকল চক্রান্ত এবং নামাজের সময় গান-বাজনা বন্ধ করতে হবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশে হিন্দুরা সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে। কিন্তু ভারত ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হওয়ার পরেও মুসলমানরা চরম নিপীড়নের শিকার। তারা ইসলাম পালন করতে পারে না। গরু কুরবানীও করতে পারেনা। ভারতের মুসলমানরা যাতে কুরবানী করতে পারে, শান্তিতে থাকতে পারে, ঠিকমতো ইসলাম পালন করতে পারে সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ভারতের উপর চাপ সৃষ্টির দাবী করেন।
মানববন্ধনে অংশ নেয়া সংগঠনসমূহ হচ্ছে- বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ, সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদ, জাতীয় কুরআন শিক্ষা মিশন, বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ওলামা মাশায়েখ ঐক্যজোট, বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা পরিষদ, কেন্দ্রীয় আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত, বাংলাদেশ, হাক্কানী আলেম সমাজ, জাতীয় ওলামা পরিষদ, বাংলাদেশ এতিমখানা কল্যাণ সমিতি, ইমাম মোয়াজ্জিন কল্যাণ পরিষদ, বাংলাদেশ ফেৎনা প্রতিরোধ কমিটি, আমরা ঢাকা বাসী, বঙ্গবন্ধু ওলামা ফাউন্ডেশন।