Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হামাসের সুড়ঙ্গ বন্ধে ভূগর্ভস্থ দেয়াল নির্মাণের পরিকল্পনা ইসরাইলের

সেন্সর সম্বলিত ৩৭ মাইল দীর্ঘ দেয়াল নির্মাণে ব্যয় হবে ৬০০ মিলিয়ন ডলার

প্রকাশের সময় : ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ইসরাইলি আধিপত্যের বিপরীতে ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী প্রতিরোধ আন্দোলনের সংগঠন হামাস-এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র হলো অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় তাদের নির্মাণকৃত বেশকিছু সুড়ঙ্গ। সেই সুড়ঙ্গগুলো বন্ধ করতে ভূগর্ভস্থ দেয়াল তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরাইল। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজা সীমান্তে মাটির অনেক গভীরে ভূগর্ভস্থ দেয়াল তোলার কাজ শুরু হয়েছে। সেন্সর সম্বলিত ৩৭ মাইল দীর্ঘ দেয়াল নির্মাণে ব্যয় হবে ৬০০ মিলিয়ন ডলার। ২০১৪ সালে ৫০ দিনব্যাপী চলা যুদ্ধের সময় হামাসের ভূ-গর্ভস্থ নেটওয়ার্ক দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন ইসরাইলের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্ব। যুদ্ধ বিরতি কার্যকর হওয়ার পর ইসরাইলের প্রতিরক্ষা ফোর্স (আইডিএফ) জানিয়েছিল, সীমান্তের নিচ দিয়ে আসা ৩২টি সুড়ঙ্গ তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। ওই সময় আইডিএফের প্রকৌশল বিভাগের সাবেক প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাইমন ড্যানিয়েল বলেছিলেন, অবশ্যই হামাস আবারও সুড়ঙ্গ তৈরির চেষ্টা করবে। আমরা যখনই গাজা ছেড়ে চলে যাব তখনই তারা সুড়ঙ্গ খোঁড়া শুরু করবে। সে কথা বাস্তবে রূপান্তরিত হয়েছে। সর্বশেষ গাজা ও ইসরাইলের মধ্যকার বিরাটাকারের সুড়ঙ্গ খোঁড়া শুরু করেছে হামাস। এপ্রিলে প্রকাশিত গার্ডিয়ানের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, যুদ্ধের ১৯ মাস পর নতুন করে খোঁড়া সুড়ঙ্গগুলো দিয়ে ইসরাইলের বিরুদ্ধে হামলা ও প্রতিরোধ তৈরি করতে চাইছে হামাস। সেই যুদ্ধপ্রস্তুতি রুখতেই ভূগর্ভস্থ দেয়াল তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে ইসরাইল। ইসরাইলের এই দেয়াল ৩৭ মাইল দীর্ঘ ও সেন্সর সম্বলিত হবে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। এই দেয়াল গাজার উপকূলীয় ছিটমহলগুলোতে বর্তমান থাকা দেয়াল ও কাঁটাতারগুলো অপসারণ করবে বলেও জানায় তারা। ওই ছিটমহলগুলোতে ১৮ লাখ ফিলিস্তিনি বাস করেন যারা ২০০৭ থেকে হামাসের অধীনে রয়েছেন। ইসরাইলের সংবাদমাধ্যম জানায়, এই দেয়াল তৈরিতে ব্যয় হবে ৬০০ মিলিয়ন ডলার।
২০১৪ সালের যুদ্ধে ভূ-গর্ভস্থ সুড়ঙ্গ ব্যবহার করে ইসরাইলের ব্যাপক ক্ষতি করতে পেরেছে বলে হামাস মনে করে। গাজার রাজনৈতিক বিশ্লেষক মুস্তাফা ইব্রাহিমের মতে, প্যালেস্টাইনের মুক্তির দাবিতে আন্দোলনরত সশস্ত্র এই সংগঠন গত এক দশক ধরেই সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজে ব্যস্ত। কাসাম ব্রিগেড এসব সুড়ঙ্গকে কৌশলগত অস্ত্র হিসেবে বিবেচনা করছে এবং তারা এটাকে আরও উন্নত করতে চায়। গত এপ্রিলে তিনি বলেছিলেন, এবার চার ধরনের সুড়ঙ্গ খোঁড়া হচ্ছে। কিছু সুড়ঙ্গ খোঁড়া হচ্ছে সীমান্তের নিচ দিয়ে। যার মধ্য দিয়ে সেনা ও বেসামরিক মানুষের ওপর হামলা চালানো যাবে। কিছু সুড়ঙ্গ এমনভাবে তৈরি করা হচ্ছে যাতে করে গাজা থেকে ইসরাইলের রকেট লাঞ্চার নিক্ষেপ করা যায়। আবার কিছু সুড়ঙ্গ তৈরি করা হচ্ছে যাতে হামাসের নেতা ও সিনিয়র যোদ্ধারা সংঘর্ষের সময় আশ্রয় নিতে পারেন। আর কিছু সুড়ঙ্গ তৈরি করা হচ্ছে কালোবাজার হতে চোরাইপথে মিশর থেকে বিভিন্ন সামগ্রী গাজায় নিয়ে আসার জন্য। এ বছরই দুইবার ইসরাইল হামাসের সুড়ঙ্গ আবিষ্কারের এই তথ্য প্রকাশ করেছে। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু একপর্যায়ে ঘোষণা করেন, ইসরাইলকে মধ্যপ্রাচ্য থেকে বাঁচাতে নিরাপত্তার প্রাচীর দিয়ে ঘিরে ফেলার জন্য কয়েক বছরব্যাপী প্রকল্প হাতে নেয়া হবে। সেই প্রকল্পের অংশ হিসেবেই দেয়াল তৈরির পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে অল্প জায়গা জুড়ে এই দেয়াল তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা জানান, এই দেয়াল তৈরি করতে বছরের ওপর সময় লেগে যেতে পারে। গার্ডিয়ান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হামাসের সুড়ঙ্গ বন্ধে ভূগর্ভস্থ দেয়াল নির্মাণের পরিকল্পনা ইসরাইলের
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ