Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বিশ্বব্যাংকের ১৫০ কোটি টাকার সহায়তা

মেডিক্যাল পণ্য উৎপাদন করোনা মহামারির মধ্যেও উৎপাদন-রফতানি অব্যাহত রাখা বড় অর্জন : সালমান এফ রহমান করোনা মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে : বাণিজ্যমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০০ এএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা ও সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমান বলেছেন, করোনাভাইরাসের মহামারির মধ্যেও বাংলাদেশের শিল্প কারখানাগুলো উৎপাদন এবং রফতানি অব্যাহত রেখেছে, এটা অনেক বড় অর্জন। গতকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক্সপোর্ট কম্পিটেটিভনেস ফর জবস (ইসিফোরজে) কর্মসূচির অংশ হিসেবে কোভিড-১৯ উদ্যোক্তা বান্ধব তহবিলের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে (ভার্চ্যুয়ালি) এ কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতি অগ্রগতির ক্ষেত্রে বিশ্ব ব্যাংকের অবদান আছে উল্লেখ করে সালমান এফ রহমান বলেন, এক্সপোর্ট কম্পেটেনটিভেনেস ফর জব (ইসিফোরজে) প্রজেক্টের জন্য বিশ্বব্যাংককে আমি বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বিশ্বব্যাংকের সহযোগী মনোভাবের কারণে বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারবাহিকতা অনেক দূর এগুতে পেরেছে।

সালমান এফ রহমান বলেন, রফতানি পণ্যের বৈচিত্র্য বৃদ্ধি সরকারের সামনে বড় একটি চ্যালেঞ্জ। কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধির চ্যালেঞ্জ তো আছেই। উভয় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এ প্রকল্প ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশের অগ্রতির পুরো কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উল্লেখ করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বের কারণেই বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে।

এদিকে করোনা থেকে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় মেডিকেল পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রায় ১৫০ কোটি টাকার অনুদান দেয়া হবে। ইসিফোরজে কর্মসূচীর আওতায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে উদ্যোক্তারা ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ ডলার পর্যন্ত সহায়তা পাবেন। করোনা মোকাবেলায় এ সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। পারসোনাল প্রোটেকটিভ ইক্যুইপমেন্ট (পিপিই), ডায়াগনোস্টিক ইক্যুইপমেন্ট, ক্লিনিক্যাল কেয়ার ইকুইপমেন্ট, এমপিপিই পণ্যের ডিজাইন ও কারিগরি মানের উন্নয়ন, এমপিপিই পণ্যের সহায়তামূলক কর্মকান্ড গবেষণা, পণ্য উন্নয়ন, টেস্টিং ও সার্টিফিকেশন এবং নতুন উদ্ভাবনী কাজে এ সহায়তা দিবে সরকার। বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় পুরো প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। মেডিকেল পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সুনির্দিষ্ট নিয়মাবলী অনুসরণ করে অনদুান সহায়তা নিতে পারবে।

উল্লেখ্য, মহামারী করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কবলে এখন বাংলাদেশ। প্রতিদিন মৃত্যু ও আক্রান্তের হার বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। চাহিদা বেড়েছে সব ধরনের মেডিকেল পণ্যসামগ্রীর। করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় ইতোমধ্যে দাম বেড়ে গেছে, মাস্ক, স্যানিটাইজার, গøাভস, চশমা, শিল্ড, সুরক্ষা পোশাক ও অন্যান্য মেডিকেল পণ্যসামগ্রীর। এ অবস্থায় বিশ্বব্যাংকের অনুদান পেলে বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো কিছুটা কমমূল্যে এসব পণ্য উৎপাদন ও বিক্রি করতে সক্ষম হবে।

গতকাল বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জবস (ইসিফোরজে) কর্মসূচীর অংশ হিসেবে কোভিড-১৯ উদ্যোক্তা বান্ধব তহবিলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এতে জানানো হয় বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জবস (ইসিফোরজে) প্রকল্পের আওতায় মেডিকেল এন্ড পার্সোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট(এমপিপিই) পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্টানগুলোর জন্য ‘কোভিড-১৯ এন্টারপ্রাইজ রিসপন্স ফান্ড’ এর মাধ্যমে সহায়তা প্রদান করা হবে।

এই প্রকল্পের আওতায় ম্যাচিং গ্রান্ট প্রোগ্রামের দি এক্সপোর্ট রেডিয়েন্স ফান্ড (ইআরএফ) হিসেবে ১৭ দশমিক ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ১৫০ কোটি টাকার সহায়তা প্রদান করা হবে। এমপিপিই পণ্য সামগ্রী উৎপাদনে সক্ষম প্রতিষ্ঠানগুলো এ অনুদার পাবার যোগ্য হবেন। এ অনুদানের পরিমান সর্বোচ্চ ৫ লাখ মার্কিন ডলার এবং সর্বনিম্ন ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। অনুদান আবেদনকারী ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিভুক্ত হলে এ প্রকল্প থেকে ৬০ শতাংশ অনুদদান পাবেন আর আবেদনকারীর অংশগ্রহণ থাকবে ৪০ শতাংশ।

বানিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, মানুষের জীবন বাঁচাতে এখন মেডিকেল পণ্যের খুবই প্রয়োজন। কোভিড-১৯ বিশ্বের অর্থনীতিকে দারুণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করেছে। বিশ্বব্যাংক মেডিকেল পণ্য উৎপাদনে সহযোগিতা দিতে এগিয়ে এসেছে। এ অনুদানের মাধ্যমে মেডিকেল পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো উৎসাহিত হবে। কেবল স্থানীয় বাজারের জন্য নয়, বৈদেশিক বাজারে রফতানির সঙ্গে যুক্ত উদ্যোক্তারাও এ কর্মসূচীর মাধ্যমে সুবিধা পাবেন। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় এ কর্মসূচী একটি মাইলস্টোন। এর মাধ্যমে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) উৎপাদন, ডায়াগনস্টিক ইক্যুইপমেন্ট ও ক্লিনিক্যাল ইক্যুইপমেন্ট তৈরিতে যুক্ত উদ্যোক্তারা আর্থিকভাবে উপকৃত হবেন। এ ধরনের সহায়তা সময়োপযোগী পদক্ষেপ। আমাদের দক্ষতা দিয়ে এ কর্মসূচীকে বাস্তবায়ন করতে হবে। এ তহবিলের মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং বিশ্বের মানুষ উপকৃত হবে।

এছাড়া বৃহৎ শিল্পের ক্ষেত্রে অনুদানের পরিমাণ হবে ৫০ শতাংশ। যেসব পণ্য ও সেবার ক্ষেত্রে এ অনুদান প্রযোজ্য হবে তা হলো পারসোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই), ডায়াগনোস্টিক ইকুইপমেন্ট, ক্লিনিক্যাল কেয়ার ইকুইপমেন্ট। এমপিপিই পণ্যের ডিজাইন ও কারিগরি মানের উন্নয়ন, প্যাকেজিং ও বৈচিত্র্য আনয়ন এবং ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী ডিজাইন প্রণয়ন, এমপিপিই পণ্যের সহায়তামূলক কর্মকান্ড যেমন, গবেষণা, পন্য উন্নয়ন, টেস্টিং ও সার্টিফিকেশন এবং নতুন উদ্ভাবন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি মিয়াং টেম্বন, অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইআরএফ ম্যানেজমেন্ট ইউনিটের টিম লিডার ডেভ রঙ্গানিকালো, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রফতানি) এবং এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জবস (ইসিফোরজে) প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান।##



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিশ্বব্যাংক

১২ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ