কোরবানির আসল মানে
মুস্তাফা জামান আব্বাসীগরুর যে অংশটি গরিবের প্রাপ্য তার ডিস্ট্রিবিউশন সম্পর্কে। এ নিয়ে কেউ ভাবিনি। এ
সায়ীদ আবুবকর
আমরা এসেছি ফিরে
অসীম সবুজে
গুঁজে
চোখ, ফেলে রেখে নিঃসীম নীলে
মন, অফুরন্ত ফুলের মিছিলে
বিছিয়ে নাসিকা আর বসন্ত বাতাসে পেতে দিয়ে কান
শুনবো আমরা শুধু মহাকাল সমুদ্রের গান
একসাথে
আজ রাতে।
হিরোশিমা নাগাসাকি থেকে আমরা এসেছি ফিরে।
আমরা দেখেছি আমাদের মাটির কুটিরে
সোনার বিমান হতে কীভাবে ধ্বংসের লাল ডিম
ফেলে দেয় বিজ্ঞানের অবোধ কাছিম।
আমরা জীবন দিয়ে করেছি পরখ
সভ্যতার পূঞ্জীভূত সব প্রজ্ঞা আর দর্শনের নিকৃষ্ট নরক।
আজ তাই প্রকৃতির কোলে হরিণশিশুর মতো আমাদের ফিরে আসা।
ফুল, পাখি, বৃক্ষরাজি, নদী আর নক্ষত্রের ভাষা
শিখতে শিখতে ফের প্রাকৃতিক হয়ে যাবো
আর সাঁতরাবো
চিতল মাছের মতো রুপালি, স্বাধীন,
অথই আলোয় আর উত্তাল ছায়ায় সারারাত সারাদিন।
প্রিয়তমা, তেজস্ক্রিয় প্রেম নগরের ডাস্টবিনে শুধু থাক,
আর রোবটদেরই একান্ত খোরাক
হোক
সব উত্তেজক
ফর্মালিন ভালোবাসা পৃথিবীর;
আমাদের খাদ্য আজ বাতাসের শীতল বুদ্বুদ আর তুলতুলে ঘাসের শিশির।
কা জ ল চ ক্র ব র্তী
পঞ্চাশী বন্ধু মোহনকে
কিছু কিছু শব্দ বহুদূর থেকে শোনা গেলে-গান হয়ে ওঠে
কিছু কিছু বান্ধব ঠিক সেভাবেই দূর থেকে দূরগামী হলে
স্মৃতির জলরেখায় খেলা করে সম্ভ্রান্ত আলোরেখা।
দুটো রেখার ভেতরে বিন্দুগুলো হারিয়ে যায়-
পঞ্চাশকে ছুঁতে গিয়ে দেখি এই সত্যটি অমোঘ চর হয়ে
জেগে উঠেছে জীবন-নদীর বুকে। কিছুদিন আগে পরে
ক্রমে ক্রমে পঞ্চাশকে ছুঁয়ে অমোঘ চরের জন্ম দেবো আমরা আমাদের ছুঁয়ে
যাচ্ছে উনপঞ্চাশী বায়ু তারপর সমবয়সী বন্ধুরা চর চরে জেগে থাকবো
বাংলা কবিতায়-বর্ষার অপেক্ষায়...
মা হ মু দ কা মা ল
না বুঝুক কবিতা
ও পাড়ার সুন্দরী রোজেনা
সারা অঙ্গে ঢেউ তার, তবু মেয়ে
কবিতা বোঝে না।
(অবুঝের সমীকরণ : আল মাহমুদ)
কবিতা বোঝে না নারী
যতটুকু বাড়ি বোঝে, গাড়ি বোঝে
যথারীতি শাড়ি বোঝে
ততটুকু কবিতা বোঝে না।
কবিতা কি বুঝেছিল মক্তবের চুল খোলা মেয়ে
আয়শা আক্তার।
বনলতা বুঝেছিল কিছু-
তার কাছে দু’দ- শান্তি পেয়েছেন
জীবনানন্দ দাশ।
সরল প্রকৃতি ও নারীর
সৌন্দর্যকে সমার্থক করে
আপনার কবিতা কল্পনালতা
পয়মন্ত বৃক্ষের শাখায়
আপনার রোজেনারা কিংবা ডিজিটাল রোজেনারা
না বুঝুক কাব্য কথামালা, ক্ষতি নেই
কবিতার ঢেউ হয়ে নিরন্তর প্রবাহিত
উৎসমূল কবিতা শরীরে
সেখানে আপনি আমি পৃথিবীর কাব্যকলাবিদ।
শাশ্বত হাসান
না ক ফু ল
ওদের ক্যামেরায় এনেছে
নাকফুলের ছবি
যতটা স্বচ্ছ ছিল নাকফুল; ঠিক ততটা
বেজায় তাপিত আজ পৃথিবী।
কতটা কুঁকড়ে গেছে কিশোরী নার্স
রাত্রির থমথমে হাওয়ায়।
ভালবাসার চুল
এখনই মেলে ধরবে ভোরের সতেজ ডানা
আমিও অবরুদ্ধ যখন।
আ ল মু জা হি দী
আগামীর জন্যে কিছুই ফেলে রাখা যায় না
যামিনী যখন প্রবেশ করলো প্রভাতকালীন
প্রান্তরে, আমিও প্রবেশ করলাম সূর্যের উঠোনে
পৃথিবীর দেয়াল গাত্রের দিকে তাকালাম।
জ্বলন্ত ম্যূরাল এবং টেরাকোটা স্থাপত্যের শেষ রশ্মিগুলো
উদ্ভাসিত হতে হতে আমাদের প্রাচীন চোখের কোটর কেমন ধাঁধিয়ে দিতে লাগলো।
সবিস্মিত আমরা তখন। সূর্যের করোটি মাথায় করে লাফিয়ে পড়লাম
পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তরে
কালো অপচ্ছায়া সরে গেলো
অপসৃত হলো রাত্রির তমসা। গ্রহের প্রতিটি কোষে
আলোর সহ¯্র দীপাবলি।
তবু কে দেখিয়ে দেবে গন্তব্যের চিহ্নরেখা, শেষ নিশানাটা?
কোন সরল রেখার টানে ফের সৃষ্টি হবে নির্বাসিত
সেই অন্তর্লোক? কোথায় অরণ্য, হরিৎ পত্রালি
নিসর্গের নতুন কুঁড়ির দোল খাওয়া হাওয়া
শির শির করে বয়ে যাবে কখন আবার
শরীরের শিরা-উপশিরা জুড়ে? যামিনী জানে না
আমি প্রদোষের গান গাইতে গাইতে স্পর্শ করলাম তোমাকে আবার।
আমাদের এই সুপ্রাচীন নগরীর প্রতœস্তূপে জেগে আছে
পিতৃপুরুষের জাগর নিঃশ্বাস।
ধুকপুক করে ওঠে আমার হৃৎপি-।
পথের বাঁকের কোথাও যেন মুখ থুবড়ে পড়ে না থাকে
পূর্বপুরুষের ইতিহাস।
তুমি নিজেই হয়ে ওঠো ইতিহাসের সূচনা
আগামীর জন্যে কিছুই ফেলে রাখা যাবে না
ঝঞ্ঝাবাত্যার কথা কী বলা যায়!
জাহানারা আরজু
জনতার রাজপথে
একটা রাজপথে সুদৃঢ় পদক্ষেপ রেখে চলে যাবÑ
এই স্বপ্ন আঁকা ছিল আজীবনÑ
তাই তো সময়ের এলোমেলো বল্গাহীন ইঙ্গিতে
সমর্পিত হইনি কখনোÑ
শ্রম ক্লান্ত দুঃসহ সময়ের সোপানে পা রেখে ক্লান্তিহীন চলেছি
আমি এক পথিকÑ
পেয়েছি অতঃপর সুনির্দিষ্ট একটি রাজপথের ঠিকানাÑ
যে পথ ধরে হেঁটে চলার বিরামহীন গতি;
তাই তো আমি মাথা উঁচু করে বলিষ্ঠ ঋজুতায়
হাঁটছি আর হাঁটছি!
পশ্চাতে ফেলে এসেছি কাঁটাবনÑ কর্দমাক্ত ঝোপঝাড়Ñ
কখনো মরুর উষরতায় ঝলসে গেছে অবয়ব,
কখনো পতিকুল আবর্তে ডুবে ডুবেও আবার উঠেছি জেগে
শুভ্র এক রাজহংসের মতো,
নিষ্কলুষ পালকে লাগেনি মালিন্য একটুকু!
কোনো হায়েনার দল আটকে রাখতে পারেনি
গন্তব্যের নিশানা আমার!
অতঃপর আমি আজ পেয়ে গেছি কাক্সিক্ষত রাজপথের ঠিকানাÑ
আমিও যেন বলতে পারছি আজÑ
এই ছেঁড়াছাতা ‘রাজচ্ছত্র’ মেলে চলে গেছে এক বৈকুণ্ঠের দিকেÑ
আমার স্বপ্নের কুঁড়িরা যেখানে নিয়ত ফুল হয়ে ফোটে
এবং যেখানে আমার ব্যথার বরফ জমাট পর্বতমালা এক প্রখর
উষ্ণ সূর্যের তাপে গলে গলে এক বহমান ¯্রােতস্বী হয়Ñ
যেখানে নির্ভীক মানুষের প্রত্যয়ী পদধ্বনিÑ শুনছিÑ
সেখানেই বলিষ্ঠÑ ঋজুতায় সেই জনতার রাজপথে
আমি হাঁটছি আর হাঁটছি!
ফা হি ম ফি রো জ
স্বার্থহীন ভালোবাসা কোনোকালেও ছিল না
যার কথা এত মধুর টাঙ্গাইলের চমচম
তারে তারে পুরনো দলিল ঢঙ্গে
আড়ালে লুকিয়ে রাখি
মাখামাখি আড়ালে খুউব
এমনকি চা’র দোকানেও মুখবন্ধ শামুক সাজি
বিয়াইন বিয়াইন, চাঁদকে চাঁদের স্থানে রেখে দিতে চাই আজ
পাশে যত মেঘমালা আছে
তারে তারে আমি বেশ
চোখ রাঙাই। আমার চাঁদÑ
তারে অনিষ্ট করে কে, কার এমন সাহস?
শোনো নানুমণি, আজন্ম প্রেমটা নাকি
এরকম হয় বুঝি
কখনো সেটাও উড়ে যায়। শুধু তাই?
সব সম্পর্কই বিপদে রেলিং না পেলে
হতাশার গর্তে পড়ে যায়
আর উঠানো যায় না
বর্ষ বর্ষ গেলো। ফিরলো না যে!
আমার চাঁদ গাইলো যে
এমন বর্ষায় আজ মেঘলা সঙ্গীত
কইলো না যে এবার বইমেলায়
বেরোচ্ছে কয়টা কবুতর
স্বার্থহীন ভালোবাসা কোনোকালেও ছিল না
এবং থাকবে না। একটি বাহু অন্য বাহুর দিকে
শুধু চেয়ে থাকে কাল-কালান্তর।
আ ল মা হ মু দ
প্রেমেই বৃদ্ধি পরমায়ু
লোকে কয়Ñ
প্রেমেই নাকি বৃদ্ধি হয় পরমায়ু
স্নায়ুর ভেতর খেলতে থাকে নানান তৃষ্ণা
কেউবা শ্যামল কেউবা শাদা কেউবা কৃষ্ণাÑ
তবু প্রেমের নাই বিতৃষ্ণা।
বাছাই করতে পারলে তবে
ধরতে যেন ইচ্ছে হবে,
ছুঁয়ে দেখতে মনটা ব্যাকুল, পরাণ কাঁপেÑ
হাঁটতে গেলে ইচ্ছে করে ছুঁয়ে দেখি,
আরে আরে আমি তবে করছি একি!
এ কভু নয় আমার লজ্জা-শরম ও ভয়
না না না, এ কভু নয়;
আমি শুধু থাকব পাশে, আশেপাশে
যেমন থাকে ফুলের গন্ধÑ
মৃদুমন্দ হাওয়ায় ভেসে
তেমনি আমি থাকব পাশে
ফুলের গন্ধ নাকে আসে এই বাতাসে;
কেউ বুঝিবা মুচকি হাসে
আমার কাছেই সবুজ ঘাসে!
প্রেমকে কভু যায় কি ধরা
স্পর্শ করা যায় কি কভু?
না না না, ছোঁয়া তো নয়
ভালোবসায় ধোয়া তো নয়,
তবু গন্ধ ফুলের গন্ধ পাপড়ি-ঝরা
মৃদুমন্দ আকুল করা ব্যাকুল করা
কোনো বাগানের গোলাপ গন্ধ...
ঝরছে কেবল আমার হাতে
শিশির ঝরার শব্দ বুঝি
আমার গন্ধ আমিই খুঁজি...
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।