মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বিশ্বের অনেক দেশই বিনিয়োগের বিনিময়ে অন্য দেশের নাগরিকদের নাগরিকত্ব বা বসবাসের অধিকার দেয়। উন্নত কোনো দেশে বিনিয়োগের মাধ্যমে নাগরিকত্ব নেয়ার এ পদ্ধতি বেশ জনপ্রিয়। আর অন্য দেশের নাগরিক হিসেবে চলে যেতে আগ্রহীদের তালিকায় শীর্ষে আছেন ভারতের ধনীরা। খবর বিবিসি। সম্প্রতি একটি ওয়েলথ মাইগ্রেশন রিভিউ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে প্রায় পাঁচ হাজার মিলিয়নেয়ার ভারত ছেড়েছেন। লন্ডনভিত্তিক বৈশ্বিক নাগরিকত্ব ও আবাসন বিষয়ক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স (এইচঅ্যান্ডপি) জানিয়েছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আর্থিক বিনিয়োগের মাধ্যমে নাগরিকত্ব পাওয়ার চেষ্টার প্রথম সারিতেই রয়েছেন ভারতীয়রা। এইচঅ্যান্ডপির গ্রুপ হেড অব প্রাইভেট ডমিনিক ভলেক বলেন, আমার মনে হয় তারা আর মহামারীর দ্বিতীয় বা তৃতীয় ঢেউয়ের জন্য অপেক্ষা করতে চাইছে না। তারা এখনই তাদের কাগজপত্র চান। আমরা এটিকে বলি ইন্স্যুরেন্স পলিসি বা প্ল্যান বি। ডমিনিক ভলেকের মতে, মহামারী খেলা বদলে দিতে পারে। কারণ মহামারীর কারণেই ধনীরা দেশ পরিবর্তনের কথা সামগ্রিকভাবে ভাবতে শুরু করেছেন। এটা এখন আর ভিসাবিহীন ভ্রমণের বিষয়ে আটকে নেই। কিংবা বিশ্ববাজারে প্রবেশের বিষয় নয়। এটি এখন মহামারী থেকে সৃষ্ট অনিশ্চয়তা থেকে রক্ষা পেতে সম্পদের বৈচিত্র্য রক্ষা এবং উন্নত স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা পাওয়ার বিষয়। আর এসব নিশ্চয়তার জন্য ভারত ছেড়ে যেতে চাইছেন ভারতের ধনীরা। পর্তুগালের মতো দেশেও এই ভিসা প্রচলিত আছে। সেখানে এর নাম গোল্ডেন ভিসা। এইচঅ্যান্ডপির মতে, মাল্টা ও সাইপ্রাস ভারতীয় ধনীদের পছন্দের গন্তব্য। বিপুল পরিমাণে টাকা এভাবে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার বেশকিছু কারণ আছে। ধনীরা অন্য দেশে বিনিয়োগ করে রাখেন উপার্জনের একটি বিকল্প উৎস হিসেবে। যেন বিপদে-আপদে আরেকটি দেশে চলে যাওয়ার জন্য তৈরি থাকে। তারা মনে করেন, নিজের দেশ থেকে সব টাকা নিয়ে সম্পর্কচ্ছেদ করার চেয়ে এটি ভালো পন্থা। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশের জন্য এটি ভালো নয়। কানাডার এশিয়া-প্যাসিফিক ফাউন্ডেশনের বিশিষ্ট ফেলো রুপা সুব্রমান্য বলেন, ভারতের কোনো মানুষ যখন অন্য দেশের নাগরিকত্ব চান, তার অর্থ হলো তিনি দেশ থেকে নিজেকে আলাদা করে নিতে চান। তাদের উদ্যোক্তা হওয়ার দক্ষতাকে সরিয়ে নেন এবং তাদের উপার্জন, সম্পদ ও করের ক্ষেত্রকে সরিয়ে নন। তখন এর প্রভাবটা হয় সুদ‚রপ্রসারী। তাদের ভারতের বাজার থেকে বের হয়ে যাওয়া দেশের ব্যবসায়িক আবহাওয়ার বিষয়ে খারাপ সংকেত দেয়। জোহানেসবার্গ ভিত্তিক সংস্থা নিউ ওয়ার্ল্ড ওয়েলথের হেড অব রিসার্চ অ্যান্ড্রু এমোলিস বলেন, এটি খারাপ লক্ষণ। প্রচুর ধনসম্পদ থাকার পরও একটি শ্রেণীর মানুষ দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য মুখিয়ে আছে। তাদের হয়তো চলে যাওয়ার উপায় আছে, কিন্তু মধ্যবিত্তের সে উপায়টুকুও নেই। গোটা বিষয়টাই একটি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য খারাপ। এ পর্যন্ত কতজন ভারতীয় এভাবে দেশ ছেড়েছে তার সঠিক তথ্য নেই। তবে ২০১৮ সালে ওয়াল স্ট্রিট ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক মর্গান স্ট্যানলি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সে সময় দেখা যায়, ২০১৪ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ২৩ হাজার ভারতীয় ধনী দেশ ছেড়েছেন। ২০২০ সালের পর ভারতীয়দের অন্য দেশের নাগরিকত্ব নেয়ার আগ্রহ বেড়েছে অনেক বেশি। এর পেছনে কভিড-১৯ মহামারী একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ধনী ভারতীয়রা ভাবছেন, তাদের জীবন ও সম্পদকে বৈশ্বিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে। বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।