গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
রাজধানীর বহুল আলোচিত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল হক খান মিল্কী হত্যাকান্ডে জড়িত খুনীদের অনেকেই এখনও অধরা। আলোচিত এই মামলার বিচারকাজ এখনো সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ১৪ জন জামিনে রয়েছেন।
২০১৩ সালের ২৯ জুলাই রাতে রাজধানীর গুলশানের শপার্স ওয়ার্ল্ডের সামনে রিয়াজুল হক খান মিল্কীকে পরিকল্পিতভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তার ছোটভাই মেজর রাশেদুল হক খান বাদী হয়ে গুলশান থানায় একটি মামলা করেন। মামলাটির প্রথম তদন্তের দায়িত্ব পান র্যাবের সহকারী পুলিশ কাজেমুর রশিদ। ২০১৪ সালের ১৫ এপ্রিল ১১ জনকে অভিযুক্ত করে তিনি আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ওই চার্জশিটের বিরুদ্ধে নারাজি দেন মামলার বাদী। পরে আদালত মামলাটি অধিকতর তদন্তের সিআইডিকে নির্দেশ দেন। ২০১৫ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার উত্তম কুমার বিশ্বাস অধিকতর তদন্তে আরও সাতজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় চার্জশিটভুক্ত ১৮ আসামি হলেন- সাখাওয়াত হোসেন চঞ্চল, আমিনুল ইসলাম ওরফে হাবিব, সোহেল মাহমুদ ওরফে সোহেল ভূঁইয়া, চুন্নু মিয়া, আরিফ ওরফে আরিফ হোসেন, সাহিদুল ইসলাম, ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ, জাহাঙ্গীর মন্ডল, ফাহিমা ইসলাম লোপা, রফিকুল ইসলাম চৌধুরী, শরীফ উদ্দিন চৌধুরী ওরফে পাপ্পু, তুহিন রহমান ফাহিম, সৈয়দ মুজতবা আলী প্রকাশ রুমী, মোহাম্মদ রাশেদ মাহমুদ ওরফে আলী হোসেন রাশেদ ওরফে মাহমুদ, সাইদুল ইসলাম ওরফে নুরুজ্জামান, সুজন হাওলাদার, ডা. দেওয়ান মো. ফরিদউদ্দৌলা ওরফে পাপ্পু ও মামুন উর রশীদ। গ্রেফতারকৃত আসামিদের মধ্যে লোপাসহ ৬ জন বিভিন্ন সময় আদালতে স্বীকারেক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উত্তম কুমার বিশ্বাস দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, এখন মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। শুনেছি বাদী ও নিহত মিল্কীর গাড়িচালক মারুফ রেজা সাগরসহ তিনজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। আমি এখনো সাক্ষ্য দেয়ার চিঠি পাইনি। আমি এই মামলার সর্বশেষ সাক্ষী। পলাতক চার আসামির মধ্যে প্রধান আসামি সাখাওয়াত হোসেন চঞ্চল আমেরিকায় রয়েছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া মিল্কীর ড্রাইভারের স্ত্রী ফাহমিদা ইসলাম লোপাসহ তিন আসামি জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছেন।
চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার বিচার চলছে ঢাকার পঞ্চম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে। এই মামলায় নিহত মিল্কীর ছোট ভাই ও মামলার বাদী মেজর রাশেদুল হক খান এবং মিল্কীর গাড়ি চালক মারুফ রেজা সাগরসহ তিনজন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
হত্যাকান্ডের পরিকল্পনার বিষয়ে মামলার চার্জশিটে বলা হয়, রিয়াজুল হক খান মিল্কীর দ্রুত রাজনৈতিক উত্থান হয় এবং মতিঝিল এজিবি কলোনি এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন তিনি। একারণে আসামি তারেক ওরফে কিলার তারেকের (ক্রসফায়ারে নিহত) এককভাবে বাংলাদেশ রেলওয়ে, পূর্ব মতিঝিল ডিভিশন, ডিপিডিসি, বিএডিসি, খাদ্য, সিএমএমইউ, ক্রীড়া পরিষদ, কৃষিসহ অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানে টেন্ডারগুলো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছিল না। তাই মিল্পীকে তারেক একমাত্র পথের কাঁটা মনে করে একাধিকবার হত্যার উদ্যোগ নেন। তবে প্রতিবারই তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ায় মতিঝিল এলাকার বাইরে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য কিলার তারেক মিল্কীর ড্রাইভার সাগরের স্ত্রী আসামি লোপার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। লোপার মাধ্যমে মিল্কীর অবস্থান জেনেই হত্যার পরিকল্পনা করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।