বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বৈশ্বিক করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে দেশে চলছে সপ্তাহব্যাপী কঠোর লকডাউন। এ লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র পরিবারগুলোকে আবারো সহায়তা দিতে নতুন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে সরকার। এ প্যাকেজের আওতায় এবার ৫০ লাখ দরিদ্র পরিবারকে নগদ সহায়তা হিসেবে আড়াই হাজার টাকা করে দেয়া হবে। ১ হাজার ২৫৮ কোটি টাকার নতুন এ প্রণোদনা প্যাকেজের ঘোষণা শিগগিরই আসছে বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। উল্লেখ্য এর আগে গত বছর মে ও জুন মাসে প্রথমবারের মতো করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ৩৫ লাখ পরিবারকে আড়াই হাজার টাকা করে নগদ সহায়তা দেয়া হয়েছিল।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রণোদনার অর্থ বিতরণ হবে গভর্নমেন্ট টু পাবলিক (জিটুপি) পদ্ধতিতে। এক্ষেত্রে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) মাধ্যমে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে সরাসরি উপকারভোগীদের কাছে অর্থ পাঠানো হবে।
এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রকোপ রোধে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। এতে করে দিন এনে দিন খাওয়া পরিবারগুলোর আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই তাদের জীবনযাপন দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। তাদের কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব করতে সরকার আবারো আড়াই হাজার টাকা করে নগদ সহায়তা দেবে।
৫০ লাখ দরিদ্র পরিবারের মধ্যে নগদ সহায়তা বিতরণের এ কার্যক্রম প্রথমবারের মতো শুরু হয় গত বছরের মে মাসে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এর আগে দেশের বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা মিলে ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লাখ পরিবারের তালিকা তৈরি করেন। অর্থ বিতরণ শুরুর পর দেখা যায়, তালিকায় অনেক ত্রুটি রয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে অবস্থাপন্ন ও সচ্ছল পরিবারকেও এ তালিকার অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগ পাওয়া যায়।
তালিকা যাচাই করতে গিয়ে এ অনিয়ম ধরা পড়লে পরে ৫০ লাখের তালিকা থেকে ১৪ লাখ ৩৩ হাজার পরিবারকে বাদ দেয় সরকার। এ তালিকা তৈরির সঙ্গে যুক্ত ছিল সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। তাদের দেয়া তালিকা পরীক্ষা করে দেখা যায়, এতে অন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি থেকে সুবিধা নেয়া পরিবার রয়েছে এক লাখের বেশি। একাধিকবার তালিকাভুক্ত হয়েছে প্রায় তিন লাখ পরিবার। আবার ৬ লাখ ৯০ হাজার ৪৬৪ পরিবারের অর্থগ্রহীতার জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) বিপরীতে নিবন্ধিত মোবাইল সিম ছিল না। এছাড়া সরকারের পেনশনভোগী, সরকারি কর্মচারী ও ৫ লাখ টাকার বেশি মূল্যের সঞ্চয়পত্রের মালিকরাও ছিলেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব অভিযোগের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে পরবর্তী প্রণোদনা প্যাকেজের তালিকায় আরো বেশি স্বচ্ছতা আনতে হবে। এছাড়া স্থানীয় পর্যায়ে কর্মরত সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোকে কাজে লাগিয়েও গ্রহণযোগ্য একটি তালিকা তৈরি করা সম্ভব।
অর্থ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বিকাশ, নগদ, রকেট ও শিউরক্যাশ- প্রধানত এ চার এমএফএস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে উপকারভোগীদের মধ্যে প্রণোদনার অর্থ বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে পৌঁছেছে প্রায় ৯০ হাজার পরিবারের কাছে। এ প্যাকেজ থেকে অর্থসহায়তা পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছে দিনমজুর, কৃষক, শ্রমিক, গৃহকর্মী, মোটর শ্রমিক। আশি-ঊর্ধ্ব ২৪ হাজার দরিদ্র বয়স্কও এ প্যাকেজের আওতায় টাকা পেয়েছেন। এছাড়া অন্যান্য পেশার মানুষও ছিল প্রায় সোয়া পাঁচ লাখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।