Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভূমিকম্প ঝুঁকিতে উত্তরাঞ্চল

মহসিন রাজু | প্রকাশের সময় : ১১ এপ্রিল, ২০২১, ৩:৪৫ পিএম

১৮৮৭ সালের প্রলয়ঙ্কর ভূমি-কম্পে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও প্রাণহানির পাশাপাশি হিমালয়ের কৈলাশ থেকে নেমে আসা ব্রম্ভপুত্রের গতিপথ পাল্টে যাওয়া এবং একই অঞ্চল থেকে প্রবাহমান করতোয়ার বিশাল পবাহ
আজকের রুপ ধারনের মত নতুন এক ভুমি কম্প ঝুঁকিতে পড়তে যাচ্ছে উত্তর জনপদ।

চলতি এপ্রিল মাসে সিকিম ও ভুটান সীমান্ত সংলগ্ন অঞ্চল এবং ১০ এপ্রিল ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপে সংঘটিত দুটি রিখটার স্কেলের পরিমাপে ৫ মাত্রার ভুমিকম্পের পর বিশেষজ্ঞদের ধারণা হিমালয়ান বেল্টে বড় ধরনের ভুমিকম্পের ঝুঁকি তৈরী হচ্ছে । উত্তরের বৃহত্তর দিনাজপুর ও রংপুর এবং বরেন্দ্র অঞ্চল যেহেতু
হিমালয়ান বেল্টের কাছাকাছি সেহেতু উত্তর জনপদের ধ্বংসের আশংকা উড়িয়ে দেওয়া যায়না।

বগুড়া জেলা প্রশাসক অফিসের মোহাফেজ অফিসের তথ্যানুযায়ি, ১৮৮৭ সালের ভয়াবহ ভুমিকম্পে ব্রম্ভপুত্র ও করতোয়া নদীর গতিপথ ও প্রবাহ ধারা পাল্টে বর্তমান রুপ ধারন করে। এর একশ’ বছর পর উত্তরাঞ্চলে
১৯৮৮ সালে দীর্ঘস্থায়ী বন্যার মত প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় তৎকালীন সরকারকে হিমশিম খেতে হয়। ১৮৮৭ সালের ভুমিকম্পে ব্যাপক জানমালের ক্ষতি হয় ।

সম্প্রতি ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ভু-তত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক হুমায়ুন আখতারের একটি নিবন্ধে দেখা যায়,বাংলাদেশের ভুতলে ভুমিকম্পের উৎস হিসেবে চিহ্নিত দুটি উৎস ডাউকি চ্যুতি বা ফল্ট রয়েছে এর একটি রয়েছে উত্তরাঞ্চলে। নিবন্ধে তিনিও ১৮৮৭ সালের ভুমিকম্পের রেফারেন্স দিয়ে লিখেছেন ১৫০
ওই ঘটনার ১৫০ বছর বিদ্যমান ভুমিকম্প ঝুঁকির কথা মাথায় রেখেই উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিতে হবে যেন সম্ভাব্য ভুমিকম্প হলে ক্ষয়ক্ষতি কম হয়।

এদিকে আবহাওয়া দফতরে যোগাযোগ করে জানা যায় , উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে এখন ১৬ টি আবহাওয়া অফিস রয়েছে। এগুলো হল পঞ্চগড়,দিনাজপুর,সৈয়দপুর,রংপুর,নীলফামারী,ডিমলা,কুড়িগ্রামের রাজারহাট,নওগাঁর বদলগাছি,বগুড়া,সিরাজগঞ্জের তাড়াশ,পাবনার ঈশ^রদী ও বাঘাবাড়ি, রাজশাহী এবং কুষ্টিয়া। এরমধ্যে কেবল রংপুরেই রয়েছে ভুমিকম্প পরিমাপক রিখটার স্কেল। এছাড়া ভ-ুতত্ত্ব জরীপ অধিদপ্তরের একটি অফিস রয়েছে বগুড়ায় ।

পর্যবেক্ষক মহলের মতে উত্তরের আবহাওয়া অফিস গুলোতে যতদ্রুত সম্ভব রিখটার স্কেল স্থাপন সহ ভুমিকম্প বিষয়ে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ , পর্যবেক্ষন এবং গবেষনা পরিচালনার মত জনবল নিয়োগ সময়ের দাবি। এছাড়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগকে আরো শক্তিশালী উদ্ধার সরঞ্জাম সরবরাহ করাও জরুরী। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কার্যক্রমে,রেডক্রিসেন্ট , স্কাউট ও ক্যাডেটদের সম্পৃক্ত করে মাঝে মাঝেই মহড়ার ব্যবস্থা করলে দুর্যোগ মোকাবেলায় একটা সক্ষমতা তৈরী হত বলে তাদের অভিমত ।

বগুড়ার ইতিহাস গবেষক আব্দুর রহীম বগরা তাঁর সংগৃহিত তথ্য থেকে উদ্ধৃত করে জানান, ২০১০ থেকে চলতি সাল পর্যন্ত উত্তর জনপদ তথা হিমালয়ান বেল্টের সিকিম, ভুটান ,অরুনাচল ও আসাম অঞ্চলে প্রায় দেড় শতাধিকবার ভুমিকম্প অনুভুত হয়েছে । ২০১৬ সালের এপ্রিলে ৩ বার শক্তিশালী ভুমিকম্প অনুভুত হয়েছে উত্তরাঞ্চলে। মৃদুলয়ের অনেক ভুকম্পন ধরা ও পড়েনা আনেক সময় । তার মতে দীর্ঘদিন ধরে ভুগর্ভস্থ পানি উত্তলনের ফলশ্রুতিতে উত্তর জনপদে মাটির নীচে যে ভ্যাকুম তৈরী হয়েছে । সেটা ভুমিকম্পের সময় মারাত্মক ভুমি ধ্বসের কারন হতে পারে ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভূমিকম্প

১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ