নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস রিপোর্টার : অপরাজিত থেকেই এএফসি অনুর্ধ্ব-১৬ মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাই পর্ব শেষ করেছে বাংলাদেশের কিশোরীরা। ‘সি’ গ্রপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় আসরের চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নিলেন কৃষ্ণা রানী, অনুচিং মগিনি, তহুরা, সানজিদারা। বাংলার বাঘিনীদের এমন সাফল্যে উচ্ছ¡সিত সারাদেশ। লাল-সবুজ ফুটবলে পুরুষরা যেখানে ধারাবহিক ব্যর্থতার মধ্যে রয়েছে, সেখানে কিশোরীরা কিছুটা হলেও দেশের ফুটবলপ্রেমীদের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন। হাসি ফুটেছে বাংলাদেশের ক্রীড়াবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখেও। তাই তো তিনি গত ৪ সেপ্টেম্বর জাতীয় ক্রীড়া পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে হাসিমুখেই প্রশংসা করলেন কৃষ্ণা রানীদের। পুরো দলকে অভিনন্দন জানান তিনি। এবার প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা, সংবর্ধনা দেয়া হবে বাংলাদেশ অনুর্ধ্ব-১৬ দলের কিশোরীদের। বিষয়টি গতকাল নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ। তিনি বলেন, ‘১৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী দেশের বাইরে যাবেন। তিনি ফিরে আসলে যেকোন দিন সরকার সংবর্ধনা দেবেন কিশোরীদের। এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’ উল্লেখ্য, এই কিশোরীরাই এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ চ্যাম্পিয়নশিপে তাজিকিস্তানে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা ঘরে তুলে। তাই ফুটবলে মেয়েদের এই ধারাবাহিক সাফল্যেই তাদের সংবর্ধনা দিতে যাচ্ছেন সরকার।
অন্যদিকে চ্যাম্পিয়ন মেয়েদের বাফুফে অর্থ পুরস্কারে পুরস্কৃত না করলেও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ঠিকই তা করছে। বিশ্বস্ত সুত্র জানায়, বাংলাদেশ অনুর্ধ্ব-১৬ কিশোরী দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়, দলনেতা, ম্যানেজার, তিন সদস্যের কোচিং স্টাফ ও ডাক্তারকে এক লাখ টাকা করে দেবে বিসিবি। প্রধানমন্ত্রীর হাত দিয়েই দেশের গর্বিত কিশোরীদের পুরস্কৃত করবে বিসিবি। গত মঙ্গলবার গৌহাটি-শিলং সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসে স্বর্ণজয়ী তিন ক্রীড়াবিদ সাঁতারু মাহফুজা খাতুন শিলা, শুটার শাকিল আহমেদ ও ভারোত্তোলক মাবিয়া আক্তার সিমান্তর হাতে বিসিবির ঘোষিত ২০ লাখ টাকার চেক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সময়েই বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এমপি কিশোরী ফুটবলারদের পুরস্কার দেয়ার কথা জানান। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি নেন। এরই প্রেক্ষিতে নাকি বিসিবি থেকে বাফুফের সঙ্গে যোগাযোগ করে কিশোরী ফুটবল দলের তালিকা চাওয়া হয়। সূত্রে আরো জানা গেছে, কিশোরী দলের ২৩ ফুটবলার, কোচিং স্টাফের তিন সদস্য গোলাম রব্বানী ছোটন, মাহবুবুর রহমান লিটু ও অনন্যা এবং দলনেতা মাহফুজা নজরুল, ম্যানেজার নাসরিন আক্তার ও ডাক্তার শাওলি ব্যতিত অন্য কাউকে পুরস্কার দেয়া হবে না।
সরকার এবং বিসিবি প্রধান যখন কিশোরীদের সংবর্ধনা ও পুরস্কৃত করার কথা ভাবছেন ঠিক তখনই কান্ড-জ্ঞানহীন কাজ করে বসেছে বাফুফে। মাত্র এক হাজার টাকার জন্য লক্কর-ঝক্কর মার্কা লোকাল বাসে চড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন কিশোরী দলকে নাকি বাড়ি পাঠিয়েছে তারা। দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ বাছাই পর্ব উতরে যাওয়া দলের নয়জনকে ময়মনসিংহের কলসিন্দুরে পাঠাতে মাইক্রোবাস ভাড়া করা হয়েছিল নাখালপাড়ার একটি রেন্ট-এ কার থেকে। আট হাজার টাকা ভাড়া চাওয়ায় বাফুফের জনৈক কর্মচারী সাত হাজার টাকা দিতে রাজী হন। শেষ পর্যন্ত এক হাজার টাকা নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় মেয়েদেরকে অসহায়ের মতো লোকাল বাসে চড়িয়ে দেয়া হয়। যাত্রা পথে অবর্ননীয় কষ্ট, ইভটিজিং ও দুর্ভোগ সহ্য করে শেষ পর্যন্ত বাড়ি পৌঁছে কিশোরীরা। যদিও বাফুফে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মিথ্যাচার করে বলেছে, মেয়েরা নাকি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গাড়িতে যেতে চায়নি। কিন্তু খেলোয়াড়রা এ কথা অস্বীকার করেন। এ ব্যাপারে বেসরকারী একটি টিভি চ্যানেলে দেয়া সাক্ষাতকারে ফুটবলার সানজিদা বলেছেন, বাফুফের দাবী সত্যি নয়। তারা আমাদেরকে যে গাড়িতে উঠিয়েছে, তাতেই আমরা উঠতে বাধ্য হয়েছি।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।