Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ধনীদের টিকাদান কার্যক্রম চলছে ২৫ গুণ দ্রুত

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১১ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০৩ এএম

কভিড-১৯ মহামারী নিয়ন্ত্রণে গত বছরজুড়েই লকডাউনসহ বিভিন্ন ধরনের বিধিনিষেধের মধ্যে ছিল পুরো বিশ্ব। অনেক দেশ বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করলেও পুনরায় ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। বছরের শেষ দিকে ঘোর অন্ধকারের মধ্যে আশার আলো হিসেবে দেখা দিয়েছিল ভাইরাসটি প্রতিরোধী টিকা। চলতি বছরের প্রথম দিক থেকে বিশ্বজুড়ে চলছে টিকাদান কার্যক্রম। তবে এক্ষেত্রেও দেখা দিয়েছে তীব্র বৈষম্য। ধনী দেশগুলো দ্রুত টিকাদান কার্যক্রম এগিয়ে নিতে পারলেও পিছিয়ে আছে স্বল্পোন্নত দেশগুলো। ব্লুমবার্গে ভ্যাকসিন ট্র্যাকারের তথ্য অনুযায়ী, ধনী দেশগুলোয় টিকাদান কার্যক্রম চলছে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর তুলনায় ২৫ গুণ দ্রুত। এখন পর্যন্ত বৈশ্বিক জনসংখ্যার প্রায় ৫ শতাংশের জন্য পর্যাপ্ত টিকা সরবরাহ হয়েছে। যদিও এ টিকার বেশির ভাগই গেছে ধনী দেশগুলোয়। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে কভিড-১৯ টিকা সরবরাহের মধ্যে ৪০ শতাংশই গেছে ধনী দেশগুলোয়। যদিও এ দেশগুলো বৈশ্বিক জনসংখ্যার মাত্র ১১ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে। অন্যদিকে স্বল্পোন্নত ১১ শতাংশ দেশ মাত্র ১ দশমিক ৬ শতাংশ টিকা পেয়েছে। এ হিসাবে সর্বাধিক আয়ের দেশগুলো স্বল্পোনত দেশগুলোর তুলনায় ২৫ গুণ বেশি দ্রুত টিকা দিচ্ছে। ব্লুমবার্গের ট্র্যাকারটি দেশগুলোর সম্পদ, জনসংখ্যা ও টিকাপ্রাপ্তির বিষয়গুলো সংগ্রহ করে। ডাটাবেস অনুযায়ী, ১৫৪টি দেশ ৭২ কোটি ৬০ লাখেরও বেশি কভিড-১৯ টিকা পেয়েছে। তবে এক্ষেত্রে উন্নত ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে বিশাল ব্যবধান। যেমন বৈশ্বিক জনসংখ্যার মাত্র ৪ দশমিক ৩ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব করা যুক্তরাষ্ট্র টিকার ২৪ শতাংশ পেয়েছে। অন্যদিকে বৈশ্বিক জনসংখ্যার ২ দশমিক ৭ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করা পাকিস্তান টিকা পেয়েছে মাত্র শ‚ন্য দশমিক ১ শতাংশ। টিকাদান কার্যক্রমের চিত্র পুরো বিশ্বে প্রায় এমনই। উন্নত দেশগুলো কয়েকশ কোটি ডোজ টিকার প্রায় ক্রয়াদেশ দিয়েছে। বিপুলসংখ্যক এ টিকা দিয়ে দেশগুলোর জনসংখ্যাকে কয়েকবার টিকা দেয়া যাবে। যুক্তরাষ্ট্র আগামী তিন মাসের মধ্যে ৭৫ শতাংশ জনগণকে টিকাদান কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসার পথে রয়েছে, যেখানে এখনো বিশ্বের অর্ধেক দেশ তাদের জনসংখ্যার ১ শতাংশকেও এ টিকা দিতে পারেনি। ব্লুমবার্গের এ ট্র্যাকারের গণনায় ৪০টির বেশি দেশকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। বেশির ভাগ স্বল্পোন্নত এ দেশগুলোয় টিকাদান কার্যক্রমের সরকারি কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এখন পর্যন্ত টিকা না পাওয়া এ দেশগুলো বৈশ্বিক জনসংখ্যার প্রায় ৮ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে। যুক্তরাষ্ট্রে টিকা প্রয়োগের বিষয়টি তদারক করছে ফেডারেল সরকার। এখন পর্যন্ত প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের জনসংখ্যার আকারের ভিত্তিতে টিকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। দেশটির স্থানীয় অঞ্চলভেদে টিকা প্রয়োগের পার্থক্য থাকলেও প্রতিটি অঙ্গরাজ্য জনসংখ্যার হিসেবে সমানভাবে টিকা পেয়েছে। বিশ্বজুড়ে কভিড-১৯ টিকা সমানভাবে বিতরণ নিশ্চিত করার মতো কোনো ব্যবস্থা নেই। যদি সব টিকা জনসংখ্যার ভিত্তিতে সমানভাবে বিতরণ করা হতো, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র ন্যায্য অংশের চেয়ে প্রায় ছয় গুণ বেশি টিকা পেয়েছে। পাশাপাশি ন্যায্য অংশের চেয়ে যুক্তরাজ্য প্রায় সাত গুণ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো প্রায় দ্বিগুণ টিকা পেয়েছে। এক্ষেত্রে তালিকায় সবচেয়ে ওপরে রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইসরাইল। ন্যায্য অংশের চেয়ে দেশ দুটি যথাক্রমে ৯ ও ১২ গুণ টিকা পেয়েছে। এদিক থেকে বৈশ্বিক গড়ের কাছাকাছি টিকা সরবরাহ পেয়েছে চীন। ব্লুমবার্গ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ