Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

কিয়েভের স্মৃতি বার্নাব্যুতে ফেরালেন ভিনিসিয়ুস

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০১ এএম

সার্জিও রামোসকে দেখা গেল গ্যালারিতে। তিন বছর আগের স্মৃতিটা (২০১৮ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল) নিশ্চয়ই উঁকি দিচ্ছিল তার মনে। সেই কিয়েভের (সে ম্যাচের ভেন্যু) স্মৃতিটা প্রথমার্ধেই সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ফিরিয়ে আনল রিয়াল মাদ্রিদ, তবে এবার রামোসের সাহায্য ছাড়াই। প্রথমার্ধের দুই গোলেই ম্যাচের ভাগ্য অনেকটা নিশ্চিত করে ফেলেছে রিয়াল। পরে লিভারপুল অ্যাওয়ে গোল পেলেও ভিনিসিয়ুস জুনিয়র নিশ্চিত করেছেন, দুই গোলের লিড নিয়েই অ্যানফিল্ড যাচ্ছে রিয়াল।
গতপরশু লিভারপুলকে ৩-১ ব্যবধানে হারানোর ম্যাচে ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার ভিনিসিয়ুসের জোড়া গোল ছাড়া জালের দেখা পেয়েছেন স্প্যানিশ উইঙ্গার মার্কো আসেনসিও। লিভারপুলের হয়ে সান্ত¡নাসূচক গোলটা করেছেন দলের সেরা তারকা মিসরীয় উইঙ্গার মোহাম্মদ সালাহ। বলা যেতেই পারে, এই জয়ের মাধ্যমে সেমিতে এক পা দিয়েই রাখল আসরের সবচেয়ে সফলতম দলটি।
ম্যাচের আগেই রাফায়েল ভারানকে হারিয়ে ফেলে রিয়াল, রক্ষণে নাচোর সঙ্গীও এদার মিলিতাও। তবে প্রথমার্ধে তেমন কোনো পরীক্ষা দিতে হয়নি রিয়ালের মেকশিফট ডিফেন্সকে। প্রথমার্ধে আসলে লিভারপুলকে নিয়ে ছেলেখেলাই করেছে রিয়াল। শুরু থেকেই চেপে ধরেছিল রিয়াল, বাঁদিকে ট্রেন্ট আলেকজান্ডার আরনল্ডকে শুরুতেই ঘোল খাইয়ে ফার্লান্দ মেন্ডি জানান দিলেন, লিভারপুলের কপালে শনি অপেক্ষা করছে। ২৭ মিনিটে টনি ক্রুসের লং বলটা দৌড়ে গিয়ে ধরে দুজন ডিফেন্ডারের মাঝ দিয়ে ছিটকে বেরিয়ে এলেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, বুক দিয়ে রিসিভ করার পর ডান পায়ে জড়িয়ে দিলেন জালে। তবে যারা গোলটা দেখেছেন, তারা বুঝতে পারবেন ক্রুসের ক্রস আর ভিনিসিয়ুসের রিসিভ ও ফিনিশিং কতটা কঠিন ছিল।
চোখে লেগে থাকার মতো এই গোলের পর খেই হারিয়ে ফেলেছে লিভারপুল। দ্বিতীয় গোলটা এসেছে সরাসরি নিজেদের ভুলে, এবারও উৎস ক্রুস। তার লং বলটা হেড দিয়ে ক্লিয়ার করতে গিয়ে মার্কো আসেন্সিওরর পায়ে তুলে দেন আরনল্ড। এবারও দারুণ এক টাচে এলিসনের ওপর বল নিয়ে এরপর সহজে কাজটা সেরেছেন আসেন্সিও। এরপর আবারও ভুল করেছিল লিভারপুল, তবে ভাগ্য ভালো সেজন্য তাদের শাস্তিটা পেতে হয়নি বেশি। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধেই ম্যাচে ফিরে আসে লিভারপুল। ভিনালদামের দারুণ এক দৌড়ের পর বল পেয়েছিলেন জোটা, তার শট ডিফ্লেটেড হয়ে চলে যায় সালাহর কাছে। সালাহর শট ঠেকাতে পারেননি কোর্তোয়া, বল চলে যায় জালে।
এর খানিক পরেই ভিনিসিয়ুসের কল্যাণে নিজেদের তৃতীয় গোলটি পেয়েছে রিয়াল। রিয়ালের হয়ে ১০৬ ম্যাচে এই প্রথম জোড়া গোল পেলেন ভিনিসিয়ুস। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ইতিহাসে তার চেয়ে কম বয়সে ম্যাচে জোড়া গোল পেয়েছেন শুধু এমবাপে।
এ গোলের বদৌলতে আসরের নকআউট পর্বে রিয়ালের দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা হলেন ভিনিসিয়ুস। ২০ বছর ২৬৮ দিন বয়সে। তালিকার শীর্ষে আছেন রাউল গঞ্জালেস। ১৯৯৬ সালের মার্চে জুভেন্টাসের বিপক্ষে ১৮ বছর ২৫৩ দিন বয়সে গোল করেছিলেন তিনি। এরপর চেষ্টা করেও আর ব্যবধান কমাতে পারেনি লিভারপুল। রিয়াল তাই জয়ের সঙ্গে বার্সাকেও বার্তা দিয়ে রেখেছে, ক্লাসিকোতে দারুণ একটা লড়াই-ই দেখা যাবে।
লিভারপুলের আশা এখনও টিমটিম করে জ্বলছে মোহাম্মদ সালাহর করা ওই এক অ্যাওয়ে গোলের কল্যাণেই। তবে নিজেদের মাঠে দ্বিতীয় লেগে যদি তারা ফর্মে ফিরে না আসে, এই এক গোল দিয়েও কোনো লাভ হবে না।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের উত্তেজনাপূর্ণ আরেক ম্যাচে কেভিন ডি ব্রুইনা আর ফিন ফোডেনের গোলে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডকে ২-১ গোলে হারিয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি। জার্মান উইঙ্গার মার্কো রয়েসের দেয়া এক গোলেই ম্যানচেস্টার সিটির কোচ পেপ গার্দিওলার কপালে চিন্তার ভাঁজ। গোলটা যে ডর্টমুন্ডের অ্যাওয়ে গোল! সিটিকে এখন নিশ্চিত করতে হবে, কোনোভাবেই যেন তারা ডর্টমুন্ডের মাঠে গিয়ে পা না হড়কায়। তবে আগামী সপ্তাহে ডর্টমুন্ডের মাঠে নিজেদের সেরাটা দিতে পারলেই সিটি কোচ গার্দিওলার অধীনে প্রথমবারের মতো সেমিতে উঠে যাবে তখন তারা।
রিয়াল মাদ্রিদ ৩-১ লিভারপুল
ম্যানসিটি ২-১ বরুশিয়া ডর্টমুন্ড

কোচকথন
‘যা করের্ছি তাতে খুশি। ভিনিসিয়াস ভালো খেলেছে। সে দলকে সাহায্য করার পাশপাশি আত্মবিশ্বাসীও করেছে। রিয়ালের হয়ে এটাই ওর (ভিনিসিয়াস) সেরা খেলা কিনা জানিনা, তবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টারে জোড়া গোল পাওয়া সত্যিই অসাধারন।’
-রিয়াল কোচ জিনেদিন জিদান

‘প্রথমার্ধে আমরা মোটেও ভালো খেলতে পারিনি। দ্বিতীয়ার্ধে ভালো খেলেছি, গোলও পেয়েছি। রাতে সবচেয়ে পজিটিভ ছিল সালাহর গোলটি। আমরা কি ৩-১ এর চেয়েও বড় ব্যবধানের দাবিদার ছিলাম? আমি নিশ্চিত নই।’
-লিভারপুল কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপ

‘আমাদের আরও গোলের সুযোগ থাকলেও কাজে লাগাতে পারিনি। শেষ মুহুর্তে গোল হজম করায় হতাশ। কিন্তু আমরা সর্বোচ্চটা দিয়ে ফলকে আমাদের পক্ষে আনতে চাই এবং পরের রাউন্ড নিশ্চিত করাই লক্ষ্য।’
-বরুশিয়া কোচ ইডেন টেরজিক

‘আমরা অবশ্যই জার্মানিতে জিততে যাচ্ছি। গোল করতে যাচ্ছি। রক্ষণ করার জন্য যাচ্ছি না। আমাদের বল মুভমেন্ট, প্রেস, বিল্ড আপ-সব ভালো করতে হবে আরও।’
-সিটি কোচ পেপ গার্দিওলা



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভিনিসিয়ুস
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ