Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মামুনুল হক লাঞ্ছিতের ঘটনায় থানায় অভিযোগ

আ. লীগের প্রতিবাদ সভা

নারায়ণগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৫ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০০ এএম

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আল্লামা মামুনুল হকসহ তার স্ত্রীকে অবরুদ্ধ করে লাঞ্ছিতের ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

এতে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সোহাগ রনিসহ অজ্ঞাতদের আসামি করা হয়। গতকাল দুপুরে হেফাজত নেতা মুহাম্মদ ফয়সাল মাহমুদ হাবিবী বাদী হয়ে এ অভিযোগ দায়ের করেন। পরে থানার ওসি রফিকুল ইসলামের উপস্থিতিতে তার কক্ষে হেফাজত নেতা মুহাম্মদ ফয়সাল মাহমুদ হাবিবী সুষ্ঠু বিচার দাবি করে বলেন, আল্লামা মামুনুল হককে নিয়ে আপনারা কটাক্ষ করছেন, সে তার স্ত্রীকে নিয়ে কি বের হতে পারবে না। স্ত্রীকে নিয়ে তিনি ঘুরতে এসেছেন। তিনি আরও বলেন, গত শনিবার মামুনুল হক ও তার স্ত্রীকে রয়েল রিসোর্টে অবরুদ্ধ করে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করা হয়েছে।

এসময় সোনারগাঁও আলেম-ওলামা ঐক্য পরিষদের সভাপতি মাওলানা মহিউদ্দিন খান, সোনারগাঁও উপজেলা হেফাজত নেতা মাওলানা ইকবাল হোসেন, মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন ফরিদীসহ হেফাজতে ইসলামের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মী-সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন।

হেফাজত নেতা মুহাম্মদ ফয়সাল মাহমুদ হাবিবী বলেন, আল্লামা মামুনুল হক ভেসে আসেনি। মামুনুল হককে নিয়ে কট‚ক্তি এদেশের তৌহিদী জনতা মেনে নিবে না। তিনি আরও বলেন, সরকারের কাছে বিচার জানাই। আমাদের সঠিক বিচার দিতে হবে। আল্লামা মামুনুল হককে যারা গালি দিয়েছেন। যে হাত মামুনুল হকের গায়ে লেগেছে। আল্লাহর কাছে বিচার ছেড়ে দিলাম। আল্লাহ তাদের ধ্বংস করে দিবে। উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সোহাগ রনির বিচার না হলে গোটা বাংলাদেশে আগুন জ্বলবে।

পরে থানা চত্বরে এ নেতা সংবাদকর্মীদের উদ্দেশে কথা বলার সময় ৭১ টিভির নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধির মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে ছুড়ে ফেলে দেন হেফাজত ইসলামের এক কর্মী। পরে এ ঘটনায় ওই নেতা দুঃখ প্রকাশ করেন। এ ব্যাপারে ৭১ টিভির নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি বুলবুল আহমেদ সোহেল জানান, বক্তব্য রেকর্ড করার সময় এক হেফাজত কর্মী ক্ষিপ্ত হয়ে মোবাইল নিয়ে ছুড়ে ফেলে দেন।

এদিকে গত শনিবার রাতে হেফাজত ইসলামের হামলা ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগের ঘটনায় গতকাল বিকেলে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগ। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল কায়সার, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আব্দুল কাদির, সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদল প্রমূখ।

সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার বলেন, সোনারগাঁওয়ের আলেম সমাজ এমন ভাঙচুর, জ্বালাও পোড়াও করতে পারে আমি বিশ্বাস করি না। আলেম সমাজের উপর তৃতীয় শক্তি ভর করে সুবিধা নিচ্ছে। জামায়াত, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির কিছু উশৃঙ্খল নেতাকর্মীরা আলেম সমাজের উপর ভর করে সোনারগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের অফিস জ্বালিয়েছে। আমরা যদি চাইতাম এর দাঁত ভাঙা জবাব দিতে পারতাম। কিন্তু আওয়ামী লীগ জনগণের জানমাল ধ্বংসের রাজনীতি করে না।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদল বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অফিস, বাড়ি-ঘর, দোকানপাটে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে। আর যদি একটি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর হাত উঠে সে হাত কেটে নেয়া হবে। পরে তিনি প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।

সোনারগাঁও থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, হেফাজতের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ দেয়া হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়া সোনারগাঁওয়ের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। রয়েল রিসোর্ট, সোনারগাঁও থানা ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হেফাজতে ইসলাম


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ