নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বিশেষ সংবাদদাতা : বলা নেই, কওয়া নেইÑ গত এপ্রিলে আইসিসি’র চিফ এক্সিকিউটিভ সভায় হুট করে দ্বি-স্তর বিশিষ্ট টেস্ট আইডিয়া উপস্থাপন করে ২০১৯ সাল থেকে তা প্রবর্তনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন আইসিসি’র প্রধান নির্বাহী ডেভ রিচার্ডসন। টেস্ট র্যাংকিংয়ের শীর্ষ ৭টি দলকে প্রথম স্তরে রেখে, র্যাংকিংয়ে নীচের সারির তিনটি দল এবং আইসিসি’র সহযোগী সদস্যদের মধ্য থেকে ২টি দলকে নিয়ে টেস্টের দ্বিতীয় স্তরের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। এই প্রস্তাবে আইসিসি’র পূর্ণ সদস্য হয়েও টেস্টের শীর্ষস্থানীয় দলগুলোর সঙ্গে খেলার অধিকার হারানোর শঙ্কায় ক্ষোভ সংক্রমতি হয়েছে বিসিবিতে। গত জুলাইয়ে আইসিসি’র বার্ষিক সাধারণ সভাকে সামনে রেখে পূর্ণ সদস্য ১০টি দেশের ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহীদের বৈঠকে প্রস্তাবটা উঠতেই তার বিরোধিতা করেছে বিসিবি। সেই বিরোধিতার কারণে আইসিসি’র পরিচালনা পরিষদের সভায় দ্বি-স্তর বিশিষ্ট টেস্ট কাঠামো আলোচনায় ওঠেনি। সেপ্টেম্বরে দুবাইয়ে চিফ এক্সিকিউটিভ সভায় এই প্রস্তাবটি নিয়ে ওয়ার্কশপ আয়োজন করে সেখানে প্রস্তাবটির সম্মতি কামনা করেছেন আইসিসি’র প্রধান নির্বাহী।
অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা একজোট হয়ে আইসিসিকে দ্বি-স্তর বিশিষ্ট টেস্ট কাঠামো প্রস্তাবের পক্ষে প্ররোচিত করে বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে। গতকাল দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত ২ দিনের সেই ওয়ার্কশপে বিসিবি, বিসিসিআই, শ্রীলংকা ক্রিকেট এবং জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের বিরোধিতায় প্রস্তাবটি বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে আইসিসি। আশ্চর্য হলেও সত্য, টেস্ট র্যাংকিংয়ে নীচের সারিতে থেকেও দ্বি-স্তর বিশিষ্ট টেস্ট কাঠামো প্রস্তাবের পক্ষে নাকি অবস্থান ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডও নাকি এই প্রস্তাবের সমর্থক কাতারে ছিল! দ্বি-স্তর বিশিষ্ট টেস্ট আইডিয়া প্রত্যাহার কথা জানিয়েছেন আইসিসি’র প্রধান নির্বাহী ডেভ রিচার্ডসনÑ ‘দ্বি-স্তর বিশিষ্ট টেস্ট প্রস্তাব প্রত্যাহার করে নিতে লক্ষ্যনীয় সমঝোতা হয়েছে।’
দ্বি-স্তর টেস্ট কাঠামোর বিরোধিতা করে সেই বিরোধিতার পক্ষে জনমত গড়ে তুলে শেষ পর্যন্ত প্রস্তাবটি আইসিসি’র টেবিল থেকে প্রত্যাহার করতে পেরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন বিসিবি’র সিইও নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন। একটি অনলাইনকে দেয়া তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেছেনÑ ‘অন্যান্য সদস্যদের বোঝাতে পেরেছি যে এটা বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নয়নে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বিষয়টি তারা বুঝতে পেরেছেন বলে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি আইসিসির ম্যানেজমেন্টকেও এটা বাতিল করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। দ্বি-স্তর ব্যবস্থা টেবিলের বাইরের আলোচনা। এখন আমরা আগামীদিনের ক্রিকেট কাঠামো নিয়ে আলোচনা করব।’
বিসিবি’র বিরোধিতায় দ্বি-স্তর বিশিষ্ট টেস্ট আইডিয়া থেকে আইসিসি বেরিয়ে আসায় অস্বস্তি কেটে গেছে বলে জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এমপিÑ ‘প্রথম থেকেই বিশ্বাস ছিল এটা করা সম্ভব হবে না। কারণ সিইসির মিটিংয়েও ওরা এটা বোর্ডেই আনতে পারছে না। জিম্বাবুয়ে আমাদের সাথে ছিল। যখন ভারত চলে এলো, তখন আর আমি এটা নিয়ে অতোটা চিন্তিত ছিলাম না। এই প্রস্তাব বাতিল হওয়া আমাদের জন্য খুবই ভালো সংবাদ। কারণ, প্রথম থেকেই এর প্রতিবাদ করে এসেছি আমরা। আজ (গতকাল) আনুষ্ঠানিকভাবে আইসিসি জানিয়েছে, এটার জন্য সত্যিই আমি খুব আনন্দিত। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে আমাদের ক্রিকেট আর যাচ্ছে না।’
শ্রীনিবাসনের আমলে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে ভারত জোট বেঁধে ক্রিকেটে বিগ থ্রি’র জন্ম দিলেও দ্বি-স্তর বিশিষ্ট টেস্ট কাঠামোর আইডিয়ায় ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে নেয়নি অবস্থান ভারত। দ্বি-স্তর বিশিষ্ট টেস্ট আইডিয়া প্রবর্তিত হলে বিসিসিআই’র আয়ে আসবে ধাক্কা, এই শঙ্কা থেকেই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে বিসিসিআই। শেষ পর্যন্ত এই প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করে নেয়ায় আইসিসি’র শুভ বুদ্ধির উদয় হয়েছে বলে মনে করছেন বিসিসিআই সভাপতি অনুরাগ ঠাকুরÑ ‘প্রস্তাবটি টেবিল থেকে উঠে যাওয়ায় আইসিসি’র সদস্যদের ধন্যবাদ দিচ্ছি। ক্রিকেটের অগ্রযাত্রায় কারো অধিকার ক্ষুণœ হয়, এ ব্যাপারে কোন সমঝোতা করবে না বিসিসিআই। আমরা খেলাটিকে ছড়িয়ে দিতে চাই। এর চারনভূমি সংকুচিত করে খেলাটার জনপ্রিয়তা বাধাগ্রস্ত হোক, তা কখনো প্রশ্রয় দিব না। দ্বি-স্তর টেস্ট প্রস্তাবে তারা আমাদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়েছে। বিশ্বক্রিকেটের কথা ভেবে আমরা এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছি।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।