পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ আহুত সারাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে দোয়া মাহফিল কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সোমবার দোয়া মাহফিলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমন বিরোধী আন্দোলনে নিহত ১৭ জনের রূহের মাগফিরাত এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য লাভের জন্য বিশেষ মোনাজাত করা হয়েছে। এ উপলক্ষে সোমবার বাদ আসর রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর আয়োজিত দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দোয়া মাহফিলে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর মহাসচিব মাওলানা নূরুল ইসলাম প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, নরেন্দ্র মোদির আগমন বিরোধী আন্দোলনে ১৭ শহীদের রক্ত বৃথা যেতে দেয়া হবে না। মোদি বিরোধী আন্দোলনের ১৭ জন জীবন দিয়ে আমাদেরকে ঋণগ্রস্ত করে গেছেন। নিহত ১৭ জনের ক্ষতিপূরণ মহান আল্লাহপাকই দিবেন। হতাহতদের ক্ষতিপূরণের জন্য সরকারের দয়ার দিকে তাকিয়ে না থেকে তাদের পরিবারের প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। সংগঠনের মহানগরী আমির মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীবের সভাপতিত্বে এবং মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের পরিচালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির আল্লামা আব্দুর রব ইউসুফী, নায়েবে আমির ও খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদের, বেফাক মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক।
এতে আরো উপস্থিত ছিলেন, মাওলানা মুনির হোছাইন কাসেমী, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী, মাওলানা যোবায়ের আহমদ, মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমদ, মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন রাজি, মাওলানা জয়নুল আবেদিন, মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, মাওলানা ফয়সল আহমদ, মাওলানা হাসান জামিল, মাওলানা আজিজুল হক হেলাল, অধ্যাপক আব্দুল জলিল ও মাওলানা ইলিয়াস আতহারী। ড. আহমদ আব্দুল কাদের বলেন, ১৭ শহীদের বদলা নিতে হবে। যাতে এই জমিনে খেলাফত কায়েম করা যায়। মাওলানা মাহফুজুল হক বলেন, শহীদদের রক্ত থেকে শিক্ষা নিতে হবে। তিনি বলেন, মোদি বিরোধী আন্দোলনের জের ধরে সন্ত্রাসীরা মাদরাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর ন্যাক্কারজনক হামলা চালিয়েছে। তিনি বলেন, হতাহত পরিবারের পাশে দাঁড়াতে হবে। আল্লামা আব্দুর রব ইউসুফী বলেন, ওবায়দুল মুক্তাদির এমপি দলবল নিয়ে বি-বাড়িয়ায় বড় মাদরাসায় হামলা চালিয়ে গর্হিত কাজ করেছেন। সরকারি দলের ক্যাডাররাই বিভিন্ন স্থালে গাড়ী পুড়িয়েছে। তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতদের নি:শর্তে মুক্তি দিতে হবে। মামলা প্রত্যাহার এবং নিরীহ মানুষদের হয়রানি বন্ধ করতে হবে। তিনি বলেন, কওমী পরীক্ষা চলছে। হয়রানি গ্রেফতার বন্ধ করা না হলে ঈমানী তাগিদে পরীক্ষা বন্ধ করে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো।
মাওলানা মামুনুল হক বলেন, মোদি বিরোধী আন্দোলনে ১৭জন নিরীহ ব্যক্তিকে শহীদ করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১৬ জনের তালিকা আমাদের হাতে এসেছে। এসব হতাহত ব্যক্তিদের পরিবারগুলোকে আর্থিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। তিনি বলেন, ইসলাম বিদ্বেষী মোদিকে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে এনে ঈমানদার জনতার ওপর বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে হত্যাযজ্ঞের ঘটনা ঘটিয়ে সরকার ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছে। এর দায় দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে। মাওলানা মামুনুল হক আগামী শুক্রবার বাদ জুমা সারাদেশে পূর্ব ঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশ এবং বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে বিক্ষোভ মিছিল সফল করার আহবান জানান।
মধুপুর পীর সাহেব আল্লামা আব্দুল হামিদ : মধুপুর পীর সাহেব ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর নায়েবে আমির আল্লামা আব্দুল হামিদ গতকাল এক বিবৃতিতে বলেছেন, মোদিকে খুশী করতে সরকার পুলিশ বাহিনী দিয়ে ১৬ জনকে শহীদ করে স্বৈরশাসকের চরিত্রের বর্হিপ্রকাশ ঘটিয়েছে। তিনি বলেন, নির্বিচারে মানুষ হত্যাকান্ডের খেসারত সরকারকেই একদিন দিতেই হবে। মধুপুর পীর সাহেব সারাদেশে মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকদের বিরুদ্ধে দমনপীড়ন নীতি পরিহার এবং গ্রেফতারকৃতদের অবিলম্বে নি:শর্ত মুক্তির দাবি জানান। পীর সাহেব ঈমানদার জনতাকে ধৈর্য্য ধারণ এবং যেকোনো নৈরাজ্য মূলক কর্মকান্ড পরিহার করার অনুরোধ জানান।
বাংলাদেশ মুসলিম লীগ : ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ভাঙ্গার পর গুজরাটে প্রায় দু হাজার নিরস্ত্র মুসলিম নর, নারীও শিশু হত্যার নায়ক, গুজরাটের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে মুসলিম জাতিসত্ত্বার চেতনায় উদ্বুদ্ধ দেশ প্রেমিক জনগণের বিভিন্ন সময়ের বিক্ষোভ ও সর্বশেষ গণসমর্থিত হরতালকে ভন্ডুল করার জন্য পুলিশের ছত্রছায়ায় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের তান্ডব এবং ব্রাক্ষণবাড়ীয়া ও হাটহাজারীতে তাদের সংঘটিত হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়ে বাংলাদেশ মুসলিম লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।
এক যুক্ত বিবৃতিতে দলের সভাপতি সাবেক সংসদ বদরুদ্দোজা সুজা, মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, স্থায়ী কমিটির সদস্য আতিকুল ইসলাম ও আনোয়ার হোসেন আবুড়ী, অতিরিক্ত মহাসচিব আকবর হোসেন পাঠান, সাংগঠনিক সম্পাদক খান আসাদ একযুক্ত বিবৃতিতে বলেন, বর্তমান সরকারের উপর মায়ানমারের গণহত্যাকারী সামরিক জান্ডার ছায়া পরিলক্ষিত হচ্ছে। সীমালঙ্ঘনকারীকে আল্লাহ পছন্দ করেন না আল কোরঅনের এই পবিত্র আয়াত উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, ব্রাক্ষণবাড়ীয়া ও হাটহাজারীতে মোদি বিরোধী আন্দোলনে শাহাদাৎ বরণকারীদের পবিত্র রক্ত বর্তমান সরকারের জন্য ভবিষ্যৎ বিপর্যয় সৃষ্টি করবে। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ শহীদ পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও গ্রেফতারকৃত সকলের নি:শর্ত মুক্তির দাবি জানান।
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন (জাফরুল্লাহ) : বাংলাদশে খেলাফত আন্দোলন প্রধান এবং হেফজত ইসলামের নায়েবে আমির শাইখুল হাদীস মাওলানা মুহাম্মাদ জাফরুল্লাহ খান বলেছেন, মোদির আগমন বিরোধী আন্দোলনে ১৭ শহীদের বিচার একদিন হবেই ইনশাআল্লাহ। শহীদদের সর্বোত্তম পুরষ্কার জান্নাতুল ফেরদাউস দান করবেন। আর তাদের পরিবার পরিজনকে ধৈর্য্য ধারণের তাওফিক দান করুন। সোমবার হেফাজতে ইসলামের দোয়া দিবস উপলক্ষে কেরাণীগঞ্জে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আহুত এক দোয়া মাহফিলে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।