মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
কভিড-১৯ মহামারীতে নিমজ্জিত অর্থনীতিকে টেনে তুলতে লড়াই করছে পুরো বিশ্ব। উন্নত দেশগুলো বিপুল পরিমাণ প্রণোদনা দিয়ে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে। এক্ষেত্রে মহামারী মোকাবেলায় হিমশিম খাচ্ছে উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশগুলো। মহামারীর শুরু থেকেই এ দেশগুলোর সহায়তায় এগিয়ে এসেছে আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলো। এবার উন্নয়নশীল দেশগুলোকে অতিরিক্ত ৬৫ হাজার কোটি ডলারের রিজার্ভ সহায়তা দিচ্ছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। স্বল্প সুদে দেয়া এ ঋণ টিকাদান কার্যক্রম এবং অন্যান্য জরুরি অবস্থাকে সহায়তার পাশাপাশি দেশগুলোর অর্থনীতিতে নগদ অর্থের প্রবাহ বাড়িয়ে তুলবে। খবর ব্লুমবার্গ। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ-সংক্রান্ত খসড়া তৈরিতে অনুমোদন দিয়েছে মুদ্রা তহবিলের বোর্ড। বৈঠক শেষে সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান। আগামী জুনে এ-সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক পরিকল্পনা আসতে পারে। জর্জিয়েভা বলেছেন, এ বিষয়ে দুর্বল ও স্বল্প আয়ের দেশগুলোকে সহায়তায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়াতে এবং অর্থ বণ্টনে ভারসাম্য নিশ্চিত করতে তহবিল কর্মীরা নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। এ তহবিল অনুমোদিত হলে দেশগুলোর অর্থনীতিতে নগদ অর্থপ্রবাহ বেড়ে যাবে। কভিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রম এবং অন্যান্য জরুরি ব্যবস্থা সমর্থনসহ সদস্য দেশগুলোর মহামারী মোকাবেলায় এ অর্থ দেয়া হবে। এবার যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন এ পদক্ষেপের সমর্থন দিয়েছেন। গত বছর ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ পদক্ষেপের বিরোধিতা করা হয়েছিল। সেই পদক্ষেপ আটকে দিয়ে ইয়েলেনের পূর্বসূরি স্টিভেন মানিউচন বলেছিলেন, আইএমএফের ১৯০ সদস্য দেশে কোটার অনুপাতে রিজার্ভ বরাদ্দ করা হয়েছে। এ অর্থের ৭০ শতাংশ শীর্ষ ২০ অর্থনীতির জোট জি২০-ভুক্ত দেশগুলোয় যাবে। আর এ সহায়তার মাত্র ৩ শতাংশ যাবে দরিদ্রতম উন্নয়নশীল দেশগুলোয়। গত মাসে জি২০ গ্রুপের অর্থমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকাররা এমন তহবিলের জন্য একটি প্রস্তাব প্রণয়নের আহবান জানিয়েছিলেন। এছাড়া গত সপ্তাহে জি৭ গ্রুপ জানিয়েছিল, তারা সদস্য দেশগুলোর রিজার্ভ বাড়াতে এবং দুর্বল দেশগুলোয় নগদ অর্থ সরবরাহে আইএমএফের একটি উল্লেখযোগ্য বরাদ্দ প্রত্যাশা করে। উন্নয়নশীল দেশগুলোর ঋণমুক্তির পক্ষে পরামর্শ দেয়া অলাভজনক সংস্থা ইউএসএ নেটওয়ার্কসহ ২০০টিরও বেশি গ্রুপ জি২০-কে ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের সহায়তার আহবান জানিয়েছিল। সংস্থাগুলো জানিয়েছে, স্বাস্থ্যসেবা ও সামাজিক ব্যয়ের জন্য এ তহবিলের প্রয়োজন। এরই মধ্যে কংগ্রেসে কিছু ডেমোক্র্যাট সদস্য এ ধরনের পদক্ষেপের পক্ষে সমর্থন দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে কংগ্রেস থেকে অনুমোদন ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় সর্বোচ্চ ৬৫ হাজার কোটি ডলারের রিজার্ভ সহায়তা প্যাকেজ সমর্থন করতে পারে। যদিও এ তহবিলের বৃহত্তম অংশীদার যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন সিনেটর এটি অনুমোদনের বিরোধিতা করেছেন। মার্কিন হাউজ ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস কমিটির আরকানসাস রিপাবলিকান প্রতিনিধি ফ্রেন্স হিল এ তহবিল থেকে চীন, রাশিয়া ও ইরানের মতো ‘ধনী দেশ ও দুর্বৃত্ত সরকারকে’ সহায়তা করা হলে এটির বিরোধিতা করার আহবান জানিয়েছেন। অর্থমন্ত্রী ইয়েলেন যদি নিশ্চয়তা দেন যে ওই দেশগুলো এ সহায়তা পাবে না, তাহলে হিল এ তহবিলে সমর্থন করবেন বলেও জানিয়েছেন। পেনসিলভানিয়ার রিপাবলিকান সিনেটর প্যাট টুমিও এ সহায়তার বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেন, কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়াই এ রিজার্ভ বরাদ্দ অনুপযুক্ত ও অপব্যয়ম‚লক ব্যবহার, যা স্বৈরশাসক ও সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্রগুলোর উপকারে আসবে। পাশাপাশি এটি বিদেশী দেশগুলোকে মার্কিন ডলারের বৈশ্বিক সরবরাহ আংশিকভাবে নিয়ন্ত্রণে সক্ষম করে তুলবে। এ কারণে আমি অর্থমন্ত্রীকে প্রস্তাবটির পক্ষে তার সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয়ার অনুরোধ করছি। ইয়েলেন ইঙ্গিত দিয়েছেন, দেশগুলো চীনের সঙ্গে একটি চুক্তি নিয়ে কাজ করছে। যেন এশিয়ার দরিদ্র দেশগুলোকে দেয়া এ অর্থ বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের ঋণ পরিশোধে ব্যবহার করা না হয়। মার্কিন অর্থমন্ত্রী বলেন, এ সহায়তা দেয়া না হলে দেশগুলোর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার আরো কঠিন হয়ে উঠবে। দরিদ্র দেশগুলোয় বৈশ্বিক সম্পদ বণ্টন করা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ব্লুমবার্গ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।