মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
প্রথমবারের মতো তোলা গেল ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণগহ্বরের চারপাশের চৌম্বক ক্ষেত্রের ছবি। দুই বছর আগে প্রথমবার তোলা হয় ব্ল্যাক হোলের ছবি। সেই যুগান্তকারী ঘটনার পর চৌম্বক ক্ষেত্রের ছবিসহ গবেষণাপত্র প্রকাশ হয়েছে বিজ্ঞান পত্রিকা ‘দ্য অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল’-এ।
এই ছবির ফলে চৌম্বক ক্ষেত্র ঠিক কীভাবে সাজানো থাকে, তাও জানা গেল অনেকটা। পৃথিবী থেকে সাড়ে ৫ কোটি আলোকবর্ষ দূরে থাকা নক্ষত্রপুঞ্জ ‘এম-৮৭’-এর ভেতরে রয়েছে দৈত্যকার সুপার ম্যাসিভ ব্ল্যাক হোল। ইভেন্ট হরাইজ্ন টেলিস্কোপ (ইএইচটি)-এর মাধ্যমে তার ছবি তোলা হয় ২০১৯ সালে। এবার আরও একটি অসাধ্যসাধন করল ইএইচটি, এম-৮৭ সুপার ম্যাসিভ ব্ল্যাক হোলের চার পাশের চৌম্বক ক্ষেত্রের প্রায় পূর্ণাঙ্গ ছবি তুলে। যা থেকে প্রথম চাক্ষুষ করা গেল ব্ল্যাক হোলের চারপাশের চৌম্বক ক্ষেত্রটিকে।
ইভেন্ট হরাইজন টেলিস্কোপটি আদতে পৃথিবীর ৮টি জায়গায় বসানো ৮টি রেডিও টেলিস্কোপের সমষ্টি। সেগুলো এমনভাবে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় বসানো হয়েছে, যাতে ৮টি টেলিস্কোপ লেন্সের ব্যাস যোগ করলে তা পৃথিবীর ব্যাসের সমান হয়। যার অর্থ, পৃথিবীর ব্যাসের সমান আকারের লেন্স দিয়েই প্রথম কোনো ব্ল্যাক হোল ও তার চারপাশের চৌম্বক ক্ষেত্রের ছবি তোলা গেছে।
ছবি থেকে দেখা যাচ্ছে, কোনো সুপার ম্যাসিভ ব্ল্যাক হোলের ব্যাসার্ধ যতটা, তার ৫-৬ গুণ দূরত্বে থাকে একটি চৌম্বক ক্ষেত্র। যার আড়াই-তিন গুণ কম দূরত্বে ব্ল্যাক হোলের কাছাকাছি থাকে সেই ভয়ংকর এলাকা ‘ইভেন্ট হরাইজ্ন’। যে এলাকার সীমান্ত ছুঁলেই কোনো পদার্থ, এমনকি আলোর কণা ফোটনও আর ব্ল্যাক হোলের জোরালো অভিকর্ষ বলের টান এড়িয়ে বেরিয়ে আসতে পারে না। ফলে ইভেন্ট হরাইজ্ন থেকেই শুরু হয়ে যায় ব্ল্যাক হোলের অতলান্ত অন্ধকারের সাম্রাজ্য। যেখানে অস্তিত্বই নেই আলোর।
যেহেতু এম-৮৭ সুপার ম্যাসিভ ব্ল্যাক হোলের চারপাশের চৌম্বক ক্ষেত্রের যে ছবি তোলা সম্ভব হয়েছে, তার থেকে বোঝা যাচ্ছে সেটা যেমন খুব শক্তিশালী নয়। সেই চৌম্বক ক্ষেত্রের শক্তি মাঝারি মানের। খুব শক্তিশালী হলে গ্যালাক্সির চার দিক থেকে গ্যাসের ঘন মেঘ, তারা, পদার্থ ব্ল্যাক হোলের জোরালো অভিকর্ষ বলের টানে কাছাকাছি এসেও শক্তিশালী চৌম্বক ক্ষেত্রের জালে আটকে যেত। সেই জাল ফুঁড়ে তারা আর ইভেন্ট হরাইজ্নে গিয়ে পৌঁছত না। আর চৌম্বক ক্ষেত্র খুব দুর্বল হলে ব্ল্যাক হোলের সর্বগ্রাসী ক্ষুধা থেকে কাছেপিঠে এসে পড়া তারা, গ্যাসের ঘন মেঘ, পদার্থের সামান্য রেহাই মেলারও অবকাশ থাকত না। কাছেপিঠে আসা সবকিছুই ব্ল্যাক হোলের পেটে চলে যেত।
কাছেপিঠে আসা গ্যাসের ঘন মেঘ, তারা, পদার্থের গতিশক্তি কম হলে, তা চৌম্বক ক্ষেত্রের শক্তিকে অগ্রাহ্য করতে পারে না। চৌম্বক ক্ষেত্রের জালে জড়িয়ে যায়। পরে তাদের ছিটকে বের করে দেয় চৌম্বক ক্ষেত্র। তখনই আলোর রেডিও তরঙ্গ, অবলোহিত তরঙ্গ, দৃশ্যমান তরঙ্গ, অতিবেগুনি রশ্মি, এক্স-রে এবং গামা রে বেরিয়ে এসে একটা ‘জেট’ তৈরি হয়। কেন ওই ‘জেট’গুলো বেরিয়ে আসে বা কোথায় তাদের উৎপত্তি হয়— চৌম্বক ক্ষেত্রের ছবি এবার তা বুঝতে সাহায্য করবে। চৌম্বক ক্ষেত্রের শক্তিকে অগ্রাহ্য করে ন্যূনতম কোন গতিবেগে কাছেপিঠে আসা গ্যাসের ঘন মেঘ, তারা, পদার্থ ব্ল্যাক হোলের ইভেন্ট হরাইজ্নের দিকে ছুটে যায় এবার সেটা বোঝারও পথ খুলে যেতে পারে।
ব্ল্যাক হোলের জোরালো অভিকর্ষ বলের টানে গ্যাসের ঘন মেঘ, তারা, পদার্থ কাছেপিঠে এসে পড়লে তাদের তাপমাত্রা এতটাই বেড়ে যায় যে তারা আর অণু, পরমাণু হয়ে থাকতে পারে না। ইলেকট্রন খুইয়ে তারা আয়ন হয়ে পড়ে। ভেঙে পড়ে রাশি রাশি ইলেকট্রন, প্রোটনের মতো ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণায়। তাদের গতিবেগ থাকে বলে তাদের চলার পথে তৈরি হয় বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র। যার পরিণতিতে তৈরি হয় চৌম্বক ক্ষেত্রও। তবে চৌম্বক ক্ষেত্রের সীমানার শেষটা কোথায়— এই ছবি থেকে সেটা বোঝা সম্ভব হয়নি। সূত্র: সিএনএন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।