পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের বিক্ষোভ মিছিলে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল দুপুর ১২টায় মতিঝিল শাপলা চত্বরে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে চলা এ সংঘর্ষে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরসহ ২০ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় নেত্রকোনা জেলার পশ্চিম বিলাশপুর সাওতুল হেরা মাদরাসার পরিচালক মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানীসহ ৩৪ জনকে আটক করে পুলিশ। পরে বিকেল ৫টার দিকে রফিকুল ইসলামকে ছেড়ে দেয়া হয়।
পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী গতকাল পল্টন থানাধীন মুক্তাঙ্গনে মোদি বিরোধী বিক্ষোভ শুরু করেন আলোচিত ডাকসু নেতা নূরুল হক নূরের নেতৃত্বাধীন ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদ। তারা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কুশপুত্তলিকা দাহ করতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এসময় পুলিশের সঙ্গে ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশও কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুঁড়ে। পরে ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে মতিঝিলের শাপলা চত্বরের দিকে যেতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে আরেক দফা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় মিছিল থেকে বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মোদি বিরোধী বিক্ষোভে যোগ দিয়েছিলেন আলোচিত বক্তা রফিকুল ইসলাম মাদানী। পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় মতিঝিল থানার এসআই ইসমাইল হোসেন তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। এসআই ইসমাইল হোসেন বলেন, রফিকুল ইসলাম মাদানীসহ যাদের আটক করা হয়েছে তাদের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সিদ্ধান্ত দেবেন।
আটকের পর তাকে প্রিজনভ্যানে নিয়ে যাওয়ার সময় নুরুজ্জামান নামের একজনের ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে আসেন মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী। ‘মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী সমর্থক’ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে লাইভটি শেয়ার করা হয়।
প্রিজনভ্যান থেকে মাত্র ২৯ সেকেন্ডের ওই লাইভে রফিকুল ইসলাম মাদানী বলেন, ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহ, সম্মানিত দেশবাসী আপনারা দেখতে পাচ্ছেন আমাদের পুলিশ প্রিজনভ্যানে নিয়ে এসেছে। এই যে আমাদের আরও কিছু ভাই। আমরা বলবো, আমরা আসলে দেশের বিরুদ্ধে না, ইসলামের বিরুদ্ধে না, আমাদের পুলিশ ভাইয়েরা আহত করেছে, আঘাত করেছে, আমরা তাদের বলবো আমাদের আঘাত করা আর দেশকে আঘাত করা একই কথা। আমরা ইসলামবিরোধী না দেশবিরোধী না, আমরা মোদির বিরুদ্ধে।
বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক রাশেদ খাঁন দাবি করে বলেন, সংগঠনের ১০/১৫ জন কর্মী আহত হয়েছেন। আরও পাঁচজন কর্মীকে পুলিশ আটক করেছে। এছাড়াও পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানীকে আটক করেছে বলেও দাবি করেন তিনি।
ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক ফারুক হাসান জানান, পুলিশ বিক্ষোভে গুলি ছোড়েছে। এতে ছাত্র ও যুব অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের অন্তত ১২ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। তারা রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আহতদের মধ্যে রয়েছেন-নুরুল হক নুর, সাজিদ, মৃণাল, মুরাদ প্রমুখ। এদের মধ্যে সাজিদসহ দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
পুলিশের মতিঝিল বিভাগের ডিসি সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, বিক্ষোভ থেকে মোট ৩৪ জনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে রফিকুল ইসলাম মাদানীও রয়েছেন। আটককৃতদের বিষয়ে যাচাই-বাছাই করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে। পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, বিক্ষোভকারীদের হামলায় সাত জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। এর মধ্যে এসি প্যাট্রল, পল্টন থানার ওসি, একজন এসআই ও একজন কনস্টেবল রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। বাকি তিন জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
এদিকে, মোদিবিরোধী আন্দোলন থেকে আটকের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আনা এক আন্দোলনকারীকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে তার সহকর্মীরা। এসময় এক পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। গতকাল বিকাল ৩টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে এই ঘটনা ঘটে। ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া জানান, আন্দোলনকারীর আবুল কালাম (৩৫) নামে ওই সহকর্মীকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এই সময় মারধরের শিকার হন পুলিশ সদস্য রায়হান। তিনি পল্টন থানায় এসআই হিসেবে কর্মরত রয়েছেন, তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
মুক্তির পর ফেসবুক লাইভে রফিকুল ইসলাম মাদানী: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল থেকে আটক মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানীকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। আটকের কয়েক ঘন্টা পর গতকাল বিকেল ৫টার দিকে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। এরপর তিনি নেত্রকোনার উদ্দেশ্যে রওনা করেন। থানা থেকে বেরিয়ে গাড়িতে চড়েই ফেসবুক লাইভে এসে তাকে ছেড়ে দেয়ার বিষয়টি ভক্তদের জানান রফিকুল ইসলাম। লাইভে রফিকুল ইসলাম মাদানী বলেন, আলহামদুলিল্লাহ! পুলিশ আমাকে থানায় নেয়ার পর কিছুক্ষণ রেখে ছেড়ে দিয়েছে। যারা আমার আটকের পর প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং খোঁজ-খবর নিয়েছেন, তাদের ধন্যবাদ। ইসলামবিরোধী সব কর্মকান্ডের প্রতিবাদে আগামীতেও আমি সাধারণ মানুষের সঙ্গে থাকব।
পল্টন মডেল থানার ডিউটি অফিসার এসআই কাজী আশরাফুল হক বলেন, আটক মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানীকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পল্টন থানা থেকে তার অভিভাবক এসে নিয়ে যান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।