পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রামের পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী এবং সনাতনী হিন্দু প্রতিষ্ঠান প্রবর্তক সংঘের শিক্ষক, কর্মকর্তাদের ওপর হামলার আট দিন পরেও গতকাল সোমবার পর্যন্ত হামলাকারীদের কেউ গ্রেফতার হয়নি। এতে হামলায় আহতদের পরিববার ও স¦জনদের মধ্যে ক্ষোভ-অসন্তোষ বিরাজ করছে। ফের হামলার আশঙ্কায় শঙ্কিত প্রবর্তক কর্মীরা। নিজ ধর্মের মানুষের ওপর এমন হামলায় এখনও হতবাক আহতরা।
তাদের অনেকে এখনও সুস্থ এবং স্বাভাবিক হতে পারেনি। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেও ওই দিনের ভয়াল তান্ডবের সে দৃশ্য তাদের প্রতিনিয়ত তাড়া করে ফেরে। ইসকনের হামলায় প্রবর্তকের শিক্ষক, নারী কর্মকর্তাসহ ১২জন আহত হলেও থানা-পুলিশ মামলা নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন আহতরা। পরে আদালতে মামলা হলেও এখনো আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু হয়নি।
এদিকে ইসকনকে ‘সাধুবেশে সন্ত্রাসী’ উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে জনমত গঠনে নামছে সনাতনী সংগঠনের নেতারা। গতকাল এ তথ্য জানান প্রবর্তক সংঘের সাধারণ সম্পাদক তিনকড়ি চক্রবর্তী। তিনি বলেন, তারা প্রবর্তকের কর্মীদের ওপর যে হামলা করেছে তা ‘সাধুবেশে সন্ত্রাসী’ কার্যক্রম ছাড়া আর কিছু নয়। শুধু সনাতনীরা কেন কোন ধর্মের মানুষে এমন উগ্রবাদী কর্মকান্ড সমর্থন করতে পারে না। আমরা এর বিরুদ্ধে গণসংযোগ করবো। আগামী ৩০ মার্চ চট্টগ্রামের সনাতনী সব সংগঠনের নেতাদের সাথে একটি মতবিনিময় সভা করার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি। ইসকনের হামলার ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, শুনেছি আদালত থেকে মামলার নথি পাঁচলাইশ থানায় পাঠানো হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করছে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) বিজয় বসাক বলেন, আদালতে মামলা হলেও থানায় আসতে কিছু সময় লেগেছে। তবে আমাদের তদন্ত অব্যাহত আছে। আমরা সার্বিক পরিস্থিতি নজরদারিতে রেখেছি। ঘটনার পর তিনি নিজে একাধিবার সেখানে গিয়েছেন বলেও জানান। পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কবিরুল ইসলাম বলেন, রোববার বিকেলে আদালত থেকে মামলার কপি থানায় এসেছে। তাকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, দায়িত্ব পেলে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু হবে।
প্রবর্তক সংঘের কর্মকর্তারা জানান, ইসকনকে মন্দির নির্মাণের জন্য দেওয়া জমির বাইরে তারা স্থাপনা তৈরি করে। প্রবর্তকের স্বার্থে ওই স্থাপনা সরিয়ে কাজ করতে গেলে গত ১৪ মার্চ কর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় ইসকনের লোকজন। হামলা থেকে রেহাই পাননি প্রবর্তকের শিক্ষক, সত্তরোর্ধ কর্মচারী এবং মহিলারাও। আহতদের অভিযোগ, হামলার পর তারা সিসিটিভি ফুটেজসহ অনেক আলামত সরিয়ে নেয়। পুলিশ তাৎক্ষণিক তদন্ত শুরু করলে এসব আলামত সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ থাকতো না বলেও জানান তারা। আহতদের একজন বলেন, এই বয়সে এসে নিজ ধর্মের মানুষের হাতে রক্তাক্ত হলাম। এটা খুবই লজ্জার। কখন আবার হামলার শিকার হন এই ভয়ে অনেকে মুখ খোলার সাহস পাচ্ছেন না।
অপরদিকে ‘ইসকন’ নিয়ে বিতর্কে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা। হরেক রহস্যে ঘেরা এই সংগঠনের কর্মকান্ড নিয়ে দেশব্যাপী আলোচনা-সমালোচনা। তবে চট্টগ্রামে তাদের সাম্প্রতিক এসব কর্মকান্ডে সমালোচনায় নতুন মাত্রা যোগ হয়। গতকালও নগরী এবং জেলার বিভিন্ন এলাকায় মানুষের আলোচনা আড্ডায় এসব বিষয় উঠে আসে।
দৈনিক ইনকিলাবে ‘উগ্রবাদী ইসকন কী মতলবে’ সোমবার প্রকাশিত রিপোর্টে অনলাইনে অনেক পাঠক তাদের মন্তব্য তুলে ধরেন। একজন পাঠক লিখেছেন- ‘সাধারণ হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য হুমকি স্বরূপ এই ইসকন। কারণ ইসকনের জন্য দাঙ্গা-হাঙ্গামা সারা পৃথিবীতে। তাই নিজেদের ধর্মের সম্মান বজায় রাখার স্বার্থে ইসকনের বিরুদ্ধে জেগে উঠা প্রয়োজন।’ তাসফিয়া লিখেছেন- ‘যেকোন মূল্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রজায় রাখা জরুরি মনে করি, বড় কোন সমস্যা হওয়ার আগেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ করা দরকার।’ জাহিদ খান লিখেছেন- ‘ইসকনসহ সকল উগ্রবাদী ও জঙ্গিবাদী সংগঠন নিষিদ্ধ করা সময়ের অপরিহার্য দাবি।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।