নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
দেশের ক্রিকেটকে ‘না’ করে আইপিএল খেলতে ছুটি চেয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। তার সেই আবেদন মঞ্জুরও করেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। সেটি নিয়ে পানি কম ঘোল হয়নি। তার পর থেকে দুই ভাগে বিভক্ত দেশের ক্রিকেট অঙ্গন। কেউ কেউ বিষয়টিকে স্বাভাবিক মনে করলেও, অধিকাংশের মতেই দেশের ক্রিকটীয় দায়িত্বকে ‘ছোট’ করে কোনোভাবেই আইপিএল খেলতে চাওয়া উচিত হয়নি সাকিবের, আর বিসিবিরও উচিত হয়নি তার ছুটি মঞ্জুর করা। রীতিমতো সাকিবের দেশাত্বোবোধ নিয়েও উঠে গিয়েছিল প্রশ্ন। তার পর সময়ের সাথে তাতে প্রলেপ পড়ে।
তবে হঠাৎই বিষয়টিকে ফের উষ্কে দিয়েছেন সাকিব নিজেই। দু’দিন আগে একটি ক্রিকেট ওয়েবসাইটকে দেওয়া ভিডিও সাক্ষাৎকারে তার টেস্ট খেলা নিয়ে খোলামেলা মন্তব্য করেন দেশসেরা অলরাউন্ডার। ছুটির আবেদনপত্রের ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছে বিসিবি- এমন অভিযোগও তুলেছেন। সাকিব টেস্ট খেলতে চান না- বিসিবির বিভিন্ন পর্যায় থেকে করা এমন মন্তব্যের একরকম প্রতিবাদই করেছেন তিনি। তার দাবি, টেস্ট খেলতে না চাওয়ার কথা তিনি বিসিবিকে বলেননি। সাক্ষাৎকারে নতুন প্রতিভাবান ক্রিকেটার তৈরির ব্যাপারে বিসিবির হাই পারফরম্যান্স বিভাগের কার্যক্রম নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
তার সেই বক্তব্যের জেরে সে রাতেই বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসানের বাসায় জরুরি সভা করেছেন বোর্ডের শীর্ষ কর্মকর্তারা। সভা শেষে সাকিবের আইপিএল খেলার অনাপত্তিপত্র পুনর্বিবেচনা করারও ইঙ্গিত দিয়েছেন বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খান, ‘আমার দায়িত্ব তো শুধু সাকিবকে নিয়ে না, আমার দায়িত্ব পুরো বাংলাদেশকে নিয়ে। আমি এই দায়িত্বে অনেকদিন থেকে আছি। এখন কারও চিঠি যদি আমি ঠিকভাবে না পড়িৃ আমরা শ্রীলঙ্কায় যাচ্ছি দুটি টেস্ট খেলতে, সেখানে ওয়ানডে টি-টোয়েন্টি নেই। সে তো ঐ চিঠিতে ছুটি চেয়েছে। সাকিব চিঠিতে বলেছে- আমরা শ্রীলঙ্কায় যে সিরিজটি খেলতে যাচ্ছি সেখানে সে না খেলে আইপিএল খেলতে চায়। শ্রীলঙ্কায় কী খেলতে যাচ্ছি সেটা আপনারা জানেন, আমরা জানি, সবাই জানে। এই কথাটা উল্লেখ করা আছে। তারপরও যেহেতু নিজের মুখে বলেছে সে টেস্ট খেলতে চায়, খেলবে।’
বিসিবির হাই পারফরম্যান্স বিভাগের প্রধান নাঈমুর রহমানও সাকিবের মন্তব্যের জবাব দিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে খোঁজ মিলেছে সাকিবের সেই চিঠির। কি আছে সেই চিঠিতে? সাকিব বিসিবিকে দেওয়া চিঠিতে ম‚লত ছুটি চেয়েছিলেন শ্রীলঙ্কা সফর থেকে। টেস্ট বা কোনো ফরম্যাটের কথা আলাদাভাবে উল্লেখ করেননি তাতে। প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজনকে লেখা চিঠিতে সাকিব উল্লেখ করেছিলেন। চিঠিটি ইনকিলাব পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধেরা হলো-
‘আমি, সাকিব আল হাসান যথাযথ বিনয়ের সঙ্গে এই কথাটি জানাতে চাই যে, আমরা ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে ভারতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছি। এটি আমাদের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্ট। আমি বিশ্বাস করি, আসন্ন আইপিএলে অংশ নেওয়া আমাকে এই মর্যাদাপূর্ণ টুর্নামেন্টের প্রস্তুতির সেরা সুযোগ দেবে। আমি অবহিত আছি যে, আইপিএল যখন হবে, বিসিবি একই সময়ে শ্রীলঙ্কায় একটি সফর আয়োজন করার পরিকল্পনা করছে। সব কিছু বিবেচনায় নিয়ে আমাকে আসন্ন আইপিএলে অংশ নেওয়ার অনুমতি দিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য সেরা প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।’
বাংলাদেশ দল বর্তমানে আছেন নিউজিল্যান্ড সফরে। তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ শেষ হলেই দল যাবে শ্রীলঙ্কা। সেখানে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ হিসেবে দুটি ম্যাচ খেলবে মুমিনুল হকের দল। সাকিবকে সেই সিরিজেও পাবে না বাংলাদেশ। আইপিএল খেলার জন্য শ্রীলঙ্কা সিরিজ থেকে ছুটি নিয়েছেন তিনি। তবে নতুন করে উষ্কে ওঠা এই বিতর্কের পর সাকিবের ছুটির ব্যপারে নতুন করে ভাবতে বসেছে বিসিবি। জাতীয় ক্রিকেট দলের দুই সাবেক অধিনায়ক আরও জানিয়েছেন, সাকিবের বিষয়টি নিয়ে দ্রুতই বোর্ড সভা ডেকে আলোচনা করা হবে।
এমন একটা সময়ের গতকাল রাতেই ঢাকায় ফিরছেন সাকিব। তৃতীয় সন্তানের জন্মের সময় পরিবারের পাশে থাকতে যুক্তরাষ্ট্র গিয়েছিলেন তিনি। বিসিবির এক কর্মকর্তা সাকিবের ফেরার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রাত ২টায় কাতার এয়ারওয়েজে ঢাকায় পৌঁছান তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাকিবের ঘনিষ্ঠ দেশের এক ক্রিকেট ব্যক্তিত্ব জানালেন, বিসিবির তলবে নয় আইপিএলের আগে কিছুটা ক্রিকেটীয় প্রস্তুতি ও আনুষঙ্গিক কাজ সারতেই মূলত ফিরেছেন সাকিব।
উল্লেখ্য, আগামী অক্টোবরে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হবে ভারতে। বাংলাদেশের শ্রীলঙ্কা সফর শুরু আগামী ১২ এপ্রিল। ভারতের ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট আইপিএল শুরু হবে ৯ এপ্রিল থেকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।