নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস রিপোর্টার : এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের প্লে-অফে ভুটানের বিপক্ষে দলে জায়গা না পেয়ে অবসরে যাওয়ার ঘোষণা দিলেন জাতীয় দলের অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম। ম্যাচকে সামনে রেখে বাংলাদেশের বেলজিয়ান কোচ টম সেইন্টফিট গতকাল দুপুরে ২৩ সদস্যের জাতীয় দল ঘোষণা করেন। তাতে রাখা হয়নি মামুনুলকে। ফলে লাল-সবুজদের নতুন অধিনায়কের দায়িত্ব পেয়েছেন গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা। বাঁ পায়ের মাংশপেশিতে চোটের কারণে এর আগে ১ সেপ্টেম্বর মালদ্বীপে স্বাগতিকদের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচেও বাংলাদেশ দলের বাইরে ছিলেন মামুনুল। কাল সকালে দলের সঙ্গে অনুশীলনে ছিলেন তিনি। তখনই গুঞ্জন ওঠে চ‚ড়ান্ত দলে থাকছেন না মামুনুল। তার সতীর্থরা জানান, অনুশীলনের সময় অনেকটা অন্যমনস্ক ছিলেন এই মিডফিল্ডার। পরে টিম হোটেলে ফিরেই মামুনুল জাতীয় দল থেকে অবসরের ঘোষণা দেন। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘রোববার পর্যন্ত জানতাম, আমি খেলছি ভুটানের বিপক্ষে। অথচ আজ (গতকাল) সকালে জানলাম আমাকে ছাড়াই দল ঘোষণা হবে। এতে অপমানিত বোধ করছি। ইনজুরিতে থাকায় মালদ্বীপের বিপক্ষে দলে ছিলাম না। কিন্তু এখন ফিট রয়েছি। তারপরেও আমার সঙ্গে কথা না বলেই কোচ সিদ্ধান্ত নিলেন। তাই জাতীয় দল থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে হলো। এটা আমার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। খুব শিগগিরই আমার পদত্যাগপত্র বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে (বাফুফে) পৌঁছে দেবো।’
অভিমানী সাবেক এই অধিনায়ক আরো বলেন, ‘হয়তো আরো আগেই আমার চলে যাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু দেশকে আমি আরও কিছুদিন সার্ভিস দিতে চেয়েছিলাম। যে কারণে অপরাধ না করেও ক্ষমা চেয়ে ফিরেছিলাম দলে। এভাবে অপমানিত হতে আর ভালো লাগে না। দীর্ঘ ১০ বছর জাতীয় দলকে সার্ভিস দেয়ার পর এখন মনে হচ্ছে, আমাকে আর দরকার নেই। তাই সরে দাঁড়াচ্ছি। আমি চাই আমার জায়গায় নতুন কেউ আসুক। তরুণদের জায়গা করে দিতেই অবসরে যেতে চাই। দলের বোঝা হয়ে থাকতে চাই না আমি।’ মামুনুলের সিদ্ধান্তের কথা মিডিয়ার মাধ্যমে জানলেও বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেননি জাতীয় দলের ম্যানেজার ইকবাল হোসেন।
তবে কোচ টম সেইন্টফিট বলেন, ‘মামুন আমাকে সরাসরি কিছু জানায়নি। আমি অন্য মাধ্যমে এটা জেনেছি। তবে এই মুহুর্তে আমি কোন মন্তব্য করবো না। এটা মামুনুলের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। এখনকার ফুটবলাররা অতিমাত্রায় আবেগী হন। মেসির কথাই ধরা যাক, অবসরের ঘোষণা দিয়েও ফিরে এসেছেন তিনি।’
বেলজিয়ান কোচ যোগ করেন, ‘মামুনুল বাংলাদেশের সেরা ফুটবলারদের একজন। আমি তাকে সম্মান করি। ওর ফুটবল দক্ষতা সম্পর্কে আমার ধারনা রয়েছে। কিন্তু দু’সপ্তাহ আগে মামুনুলসহ জাতীয় দলের পাঁচ ফুটবলার ক্যাম্প ছেড়ে নৌবাহিনীর হয়ে খেলতে গিয়েছিলো। এতে আমি অবাকই হয়েছিলাম। জাতীয় দলের অনুশীলন বাদ দিয়ে তারা নিজের পছন্দকে প্রাধান্য দিয়েছে। যা মানতে পারিনি। নিজেকেই প্রশ্ন করেছিলাম, এটা কি জাতীয় দলের প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ?’
সেইন্টফিট আরো বলেন, ‘মামুনুল ইনজুরি নিয়ে ক্যাম্পে ফিরে আসে এবং পরের এক সপ্তাহ পুরোপুরি অনুশীলনে ছিলো না। মালদ্বীপ ম্যাচের জন্যও তাকে দলে রাখা হয়নি। কারণ সে আনফিট ছিলো। তাহলে ভুটানের বিপক্ষে ম্যাচে তাকে কিভাবে দলে নেবো? পাশাপাশি ওর জায়গায় আরামবাগের আব্দুল্লাহ মালদ্বীপে দুর্দান্ত খেলেছে। মামুনুল পুরোপুরি ফিট থাকলে অথবা আব্দুল্লাহ খারাপ খেললে আমি অবশ্যই মামুুনুলকেই নিতাম। কিন্তু আব্দুল্লাহ ভালো করায় মামুনুলকে দলে রাখা সম্ভব হয়নি।’
এর আগে কেরালা সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ও বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে ব্যর্থতার পর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে মামুনুলকে জাতীয় দল থেকে এক বছরে জন্য নিষিদ্ধ করা হয়। পরে অবশ্য বাফুফে উদ্যোগেই ফিরে আসেন তিনি। নিষেধাজ্ঞা থেকে ফিরে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের প্লে-অফ ম্যাচে তাজিকিস্তানের বিপক্ষে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলেছিলেন মামুনুল। ২০০৯ সালে প্রথম জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পেলেও ২০১৩ সালে অধিনায়ক হন এই মিডফিল্ডার। খেলেছেন প্রায় ৫০টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে চরম ব্যর্থ হয়ে অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু পরে বাফুফের অনুরোধে আবার অধিনায়কের দায়িত্ব নেন ঘরোয়া আসরে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া ফুটবলার মামুনুল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।