বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
দক্ষিণাঞ্চলে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে ভ্যাকসিন গ্রহণকারীর সংখ্যাও ক্রমশ হ্রাস পাওয়ায় চিকিৎসা বিশেষজ্ঞগনের মাঝে উদ্বেগ বৃদ্ধি করছে। অথচ ডিসেম্বরের শেষ থেকে ফেব্রুয়ারীর শেষভাগ পর্যন্ত এ অঞ্চলে পরিস্থিতির যথেষ্ঠ উন্নতি ঘটেছিল। চলতি মাসের প্রথম ১৫ দিনে দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় সরকারী হিসেবে ৮০ জন নতুন কোভিড-১৯ রোগী সনাক্ত হয়েছে। আর মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। অথচ ফেব্রুয়ারীর প্রথম ১৫ দিনে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬৪ । মৃত্যু হয়েছিল দুজনের। গত ৩দিনে ঝালকাঠীতে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে গোটা বিভাগে আক্রান্তের সিংহভাগই এখনো করোনার হটস্পট বরিশাল মহানগরীতে। অথচ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের মাত্র ৬% মানুষ এ নগরীতে বাস করে।
গত ৭ ফেব্রুয়ারী থেকে সারা দেশের সাথে দক্ষিণাঞ্চলেও করোনা ভেক্সিন প্রদান শুরু হবার পরে তা একদিনে ১৬ হাজার অতিক্রম করলে ইতোমধ্যে তা আড়াই হাজারেরও নিচে হ্রাস পেয়েছে। গত ১৩ মার্চ দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় মাত্র ২ হাজার ২১১ জন ভেক্সিন গ্রহন করেন। মঙ্গলবারও মাত্র ২ হাজার ৪৪০ জন সহ দক্ষিণাঞ্চলে মোট ভেক্সিন গ্রহনকারীর সংখ্যা ছিল ২ লাখ ২ হাজার ৩২৬জন। যার মধ্যে নারীর সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশের কিছু বেশী। ্ পের্যুন্ত সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে মাত্র ৭০ হাজার ৯৬২ নারী ভেক্সিন গ্রহন করেছেন। পুরুষ ভেক্সিন গ্রহনকারীর সংখ্যা ১ লাখ ৩১ হাজার ৩৬৪ । অব্যবহৃত থাকায় ইতোমধ্যে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের ৪টি জেলা থেকে লক্ষাধীক ডোজ ভেক্সিন অন্যত্র পাঠান হয়েছে।
গত বছর ১৮ মার্চ দক্ষিণাঞ্চলে প্রথম কোভিড-১৯ রোগী সনাক্ত হবার প্রায় এক বছর পরে গত ২৬ ফেব্রুয়ারী এ অঞ্চল ছিল করোনা সনাক্ত শূণ্য। কিন্তু ২৭ ফেব্রুয়ারী থেকে পুনরায় সনাক্ত হতে শুরু করে। আর মার্চের প্রথমভাগ থেকে রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের মতে, মঙ্গলবার পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় মোট কোভিডÑ১৯ রোগী সনাক্তের সংখ্যা ছিল ১০ হাজার ৭৯৪। যারমধ্যে বরিশাল জেলার সংখ্যাটাই ৪,৯৩৭। এরমধ্যে বরিশাল মহানগরীতেই আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৬৯৬ জন। গত ১৫ দিনে বরিশাল জেলায় আক্রান্ত ৪৪ জনের মধ্যে মহানগরীতেই সংখ্যাটা ৩৩। এ হিসেবে বিভাগের মোট সনাক্ত রোগীর প্রায় ৩৫%-এর বেশী বরিশাল মহানগরীতে। আর এ পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলে করেনা সংক্রমনে মৃত ২০৬ জনের মধ্যে বরিশাল জেলায় মারা গেছে ৮৯ জন। তবে এরমধ্যে মহানগরীতেই মারা গেছেন ৪৮ জন। দক্ষিণাঞ্চলে সর্বশেষ গড় মৃত্যুহার প্রায় ১.৮৫% হলেও বরিশাল মহানগরীতে তা অনেক বেশী।
স্বাস্থ্য বিভাগের সর্বশেষ হিসেবে দক্ষিণাঞ্চলে এখনো করোনা পজিটিভ সনাক্তের হার ১৪%-এর ওপরে। আর স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমিত হিসেব অনুযায়ী দক্ষিনাঞ্চলে করোনা আক্রান্ত ১০,৭৯৪ জনের মধ্যে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১০,৪৮৬ জন। সর্বশেষ হিসেব অনুযায়ী এ অঞ্চলে সুস্থতার হার ৯৭%-এর কিছু বেশী।
মঙ্গলবার পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলার মধ্যে বরিশালে মোট আক্রান্ত ৪,৯৩৭ জন। মারা গেছেন ৮৯ জন। পটুয়াখালীতে মোট অক্রান্ত ১,৭৫০ জনের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৪১ জনের। এ সময়কালে পিরোজপুরে আক্রান্ত ১,২০৭ জন আক্রান্তের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৫ জনের। বরগুনাতে ১ হাজার ৪০ জন আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছেন ২২ জন। ভোলাতে অক্রান্ত ১ হাজার ১০ জন আক্রান্তের মধ্যে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর ঝালকাঠীতে ৮৫০ জন আক্রান্তের মধ্যে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্যে গত তিন দিনেই দুজন মারা গেছেন।
এদিকে মঙ্গলবার সকালের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণাঞ্চলে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৮ জন। যারমধ্যে বরিরশালের সংখ্যাটাই ৫। মহানগরীতে ৪ জন। এসময়ে ভোলাতে ২,ও পিরোজপুরে আরো একজন কোভিড-১৯ রোগী সন্ক্ত হয়েছে। বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজের আরটি-পিসিআর ল্যাব ও ও ভোলা জেলা হাসপাতালের ল্যাবে এপর্যন্ত প্রায় ৫৫ হাজার মানুষের নমুনা পরিক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।
তবে সাম্প্রতিককালে করোনা রোগী সনাক্তের ক্ষেত্রে নমুনা পরিক্ষার সংখ্যা যথেষ্ঠ হ্রাস পাবার সাথে নুন্যতম স্বাস্থ্য বিধি অনুসরনেরও কোন বালাই নেই দক্ষিণাঞ্চলে। করোনা মহামারি থেকে উত্তরনে চিকিৎসা বিশেষজ্ঞগন আরো বেশী করে নমুনা পরিক্ষার পাাশাপাশি মাস্ক পরা সহ পরিপূর্ণ স্বাস্থ্য বিধি অনসুরনের তাগিদ দিয়েছেন। নচেত সামনে অত্যন্ত দুঃসময় অপেক্ষা করছে বলেও মন্তব্য করেছেন তারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।