Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যুদ্ধাপরাধ তদন্তের মুখে বাশারপত্নী, হারাতে পারেন ব্রিটিশ নাগরিকত্ব

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ মার্চ, ২০২১, ৪:২৩ পিএম

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের স্ত্রী আসমা আল-আসাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে ব্রিটিশ পুলিশ। সিরিয়ায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে উস্কানি ও উৎসাহ দেওয়ার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে এই তদন্ত শুরু হয়েছে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট বাশারের স্ত্রী আসমা আল আসাদ যুক্তরাজ্য ও সিরিয়ায় দ্বৈত নাগরিক। পুলিশি তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব হারাতে পারেন তিনি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজকে রোববার (১৪ মার্চ) মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, গত জুলাই মাসে সিরিয়ায় চলমান সংকটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু তথ্য হাতে পেয়েছেন তারা। এখন সেই তথ্যগুলো পুলিশের যুদ্ধাপরাধ তদন্ত ইউনিট খতিয়ে দেখছে।
আসমা আল-আসাদের বিরুদ্ধে সিরিয়ায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগটি এনেছে সংকট ও সংঘর্ষপীড়িত মানুষের ন্যায়বিচার নিশ্চিতে কাজ করা আন্তর্জাতিক আইন প্রতিষ্ঠান গুয়ের্নিকা ৩৭। প্রতিষ্ঠানটি মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষায়ও কাজ করে থাকে।
এক বিবৃতিতে গুয়ের্নিকা ৩৭ জানিয়েছে, ‘আসমা আল-আসাদ একজন ব্রিটিশ নাগরিক হলেও এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ যে, তিনি বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন। কারণ তার বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগগুলোর প্রমাণও রয়েছে। এটা (তদন্ত শুরু হওয়া) খুব গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ এবং ব্রিটেনের আদালতের সামনে তাকে বিচারের মুখোমুখি করাটাও গুরুত্বপূর্ণ।’
গুয়ের্নিকা ৩৭-এর প্রতিষ্ঠাতা টবি ক্যাডম্যান আলজাজিরাকে বলেন, সিরিয়ার ফার্স্ট লেডি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘অভিযোগ রয়েছে- তিনি এমন সব কাজে উস্কানি দিয়েছেন, যার ফলে সিরিয়ায় বহু মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। তিনি সৈন্যদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন, (সন্ত্রাসের পক্ষে) প্রকাশ্যে বিবৃতি দিয়েছেন, সরকারি সেনাদের কর্মকাণ্ডে সমর্থন দিয়েছেন। এর ফলে দেশটিতে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ নিহত হয়েছেন। এমনকি সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্রসহ নিষিদ্ধ বিভিন্ন অস্ত্র ব্যবহারেও প্ররোচনা দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।’
গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, আসমা আল আসাদ যুক্তরাজ্য ও সিরিয়ার দ্বৈত নাগরিক। যুক্তরাজ্যের যুদ্ধাপরাধ বিভাগ তার বিষয়টি আমলে নিয়েছে এবং তাকে জিজ্ঞসাবাদ করতে যাচ্ছে। তিনি যদি তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন, তবে তার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিল হয়ে যেতে পারে।
ক্যাডমান এক বিবৃতিতে বলেন, কোন দেশের শীর্ষ পর্যায়ের কারো বিরুদ্ধে এ ধরনের অ্যাকশন নেওয়া অনেক দুঃসাহসিকতার কাজ। কিন্তু তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে পারলে, অন্যায় বন্ধ করা সম্ভব। অন্যথায় মানুষ নির্যাতিত হতেই থাকবে।
সিরিয়ায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন কয়েক লাখ মানুষ। এদের মধ্যে ৮৮ হাজারই বেসামরিক নাগরিক। নিহতদের মধ্যে রয়েছে ১০ হাজারের বেশি নিষ্পাপ শিশু। এছাড়া যুদ্ধের কারণে এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ২ লাখের বেশি মানুষ। তাদের বেশিরভাগই মারা গেছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত বাড়িঘর হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ৭০ লাখ সিরীয়। বিধ্বস্ত হয়েছে বিপুলসংখ্যক অবকাঠামো। শরণার্থী হিসেবে ইরাক, তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাড়ি জমিয়েছেন বিপুলসংখ্যক মানুষ। সূত্র : ইনডিপেন্ডেন্ট, আল জাজিরা



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ