মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
গত বছর জাতীয় নিরাপত্তা আইন চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল হংকংয়ের উপর। এবার হংকংয়ের ভোট প্রক্রিয়ায় আমূল পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিল চীনের কমিউনিস্ট পার্টি। গত বেশ কিছুদিন ধরে বেজিংয়ে চীন সরকারের পিপলস কংগ্রেস চলছিল। তার অন্তিম দিনে হংকং নিয়ে প্রস্তাব পাশ হলো। বিপুল ভোটে সেই প্রস্তাব পাশ হয়েছে।
জাতীয় নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের আগে থেকেই হংকংয়ে আন্দোলন করছেন গণতন্ত্রপন্থিরা। যে প্রক্রিয়ায় চীন তাদের স্বতন্ত্র সত্ত¡ায় হস্তক্ষেপ করছে, তার বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল। জাতীয় নিরাপত্তা আইন পাশ হওয়ার পরে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে চীন। বহু গণতন্ত্রপন্থিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটেই শুরু হয়েছিল এবারের পিপলস কংগ্রেস। বিশেষজ্ঞরা আগেই বলেছিলেন, কংগ্রেসে হংকংয়ের উপর আরো চাপ তৈরির প্রস্তাব নেওয়া হবে। বাস্তবেও তাই ঘটল। বৃহস্পতিবার কার্যত সর্ব সম্মতিতে হংকংয়ের নির্বাচন প্রক্রিয়া সংস্কারের প্রস্তাব পাশ হয়েছে। দুই হাজার ৮৯৫ জন প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। মাত্র একজন ভোট দেননি। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এই ভোটাভুটির কোনো অর্থ নেই। পার্টি যা সিদ্ধান্ত নেয়, কংগ্রেসের সদস্যরা তা সমর্থন করতে বাধ্য থাকে। সে কারণেই প্রস্তাবের পক্ষে কার্যত কেউ মত প্রকাশ করেননি।
জাতীয় নিরাপত্তা আইনে করা মামলার শুনানি শুরু হয় সোমবার। ছবিতে ‘লম্বা চুল’ নামে পরিচিত ‘গণতন্ত্রকামী’ অ্যাক্টিভিস্ট লেউং কোক-হাং সমর্থকদের বিজয়ের চিহ্ন ‘ভি’ দেখাচ্ছেন। কারাগার থেকে আদালতে যেতে তখন প্রিজন ভ্যানে উঠছিলেন তিনি।
নতুন নিয়মে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি হংকংয়ের প্রশাসনে অনেক বেশি নিজেদের লোক নিয়োগ করতে পারবে। পার্টি নিজেদের সদস্য বাড়াতে পারবে, কমবে গণতান্ত্রিক ভাবে মানুষের ভোটে নির্বাচিত সদস্যের সংখ্যা। নির্বাচন কমিটির সদস্য ৩০০ থেকে বাড়িয়ে ১৫০০ করা হয়েছে। এই কমিটি সরাসরি পার্টি লাইন মেনে চলবে। আইনসভা বা লেজিসলেটিভ কাউন্সিলের আসন সংখ্যা ৭০ থেকে বাড়িয়ে ৯০ করা হয়েছে। বেজিংয়ের সরাসরি মনোনীত সদস্যের সংখ্যা বাড়ছে। কমছে বিরোধীদের সংখ্যা। ইলেকশন কমিটি বা নির্বাচনী কমিটি হংকংয়ের মুখ্য একসিকিউটিভকে নির্বাচন করবে। এর থেকেই স্পষ্ট, গণতন্ত্রপন্থি বিরোধীদের হাত থেকে কার্যত পুরো ক্ষমতাই কেড়ে নেওয়া হলো।
হংকংয়ের আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেওয়া হলো। এরপর হংকংয়ের মানুষের আর কোনো স্বাধীনতাই থাকলো না। বেজিং যা বলবে, তা তাদের মানতে হবে। অথচ ১৯৯৭ সালে যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে চীন যখন হংকং পেয়েছিল, তখন হস্তান্তরের শর্তের মধ্যেই হংকংয়ের বেশ কিছু স্বাধীনতার কথা উল্লেখ করা ছিল। অভিযোগ, নতুন আইনে তার কোনো কিছুই মানা হয়নি।
হংকংয়ের বর্তমান শাসক অবশ্য চীনের আইনকে স্বাগত জানিয়েছে। কিন্তু বিরোধীরা এর তীব্র প্রতিবাদ করতে শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক মঞ্চ থেকেও বিরোধিতা আসতে শুরু করেছে। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র সচিব চীনের আইনের তীব্র বিরোধিতা করে বলেছেন, এই আইনের মাধ্যমে হংকংয়ের সমস্ত স্বাধীনতা খর্ব করা হলো। অ্যামেরিকা বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, নতুন আইন হংকংয়ের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেবে। চীন অবশ্য কোনো অভিযোগই মানতে রাজি হয়নি। সূত্র : রয়টার্স, এপি, এএফপি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।