Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গবেষণার কেন্দ্র হবে ওয়ালটন, ৪ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে চুক্তি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ মার্চ, ২০২১, ৬:২৯ পিএম

ওয়ালটন হবে বাংলাদেশের প্রকৌশল গবেষণার কেন্দ্র। বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে ওয়ালটন কারখানায় গবেষণা ও কাজের সুযোগ পাবেন দেশের মেধাবী মানুষেরা। আগামি দিনে যারা দেশকে নেতৃত্ব দেবেন। ‘ব্রেইন ড্রেইন’ হয়ে দেশের মেধা পাচার হবে না। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের উচ্চ প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদন খাত লিখবে নতুন ইতিহাস। দেশের শিল্পোন্নয়নে দেশের মেধা কাজে লাগবে। এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে দেশের চারটি প্রকৌশল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে চুক্তি করেছে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।

ওই চুক্তির ফলে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ও গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের থিসিস, কারখানায় ইন্টার্নশিপ ও ট্রেনিং, পরামর্শক দলের কারখানা পরিদর্শন, কর্মীদের উন্নয়ণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে উভয় প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে কাজ করতে সম্মত হয়। বাংলাদেশে বেসরকারি শিল্পখাতের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর যৌথ উদ্যোগে বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা ও উন্নয়ণে একযোগে কাজ করার এটাই প্রথম উদ্যেগ বলে জানা গেছে।

ওয়ালটনের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি (আইইউটি), রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট), খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ডিপার্টমেন্ট অব ম্যাকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ডিপার্টমেন্ট অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং।

বুধবার (১০ মার্চ) ওই চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬ জন বিশিষ্ট শিক্ষক গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন কারখানা পরিদর্শন করেন। সে সময় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে ওয়ালটনের আলাদা আলাদা সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রকৌশলী গোলাম মুর্শেদ। আইইউটির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, রুয়েটের ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের প্রধান প্রফেসর ড. মো. মোশাররফ হোসেইন, কুয়েটের ম্যাকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের প্রধান প্রফেসর ড. মো. শহিদুল ইসলাম এবং শাবিপ্রবি’র ডিপার্টমেন্ট অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং-এর প্রধান প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মুহসিন আজিজ খান নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রকৌশলী গোলাম মুর্শেদ বলেন, আমাদের দেশের তরুণ প্রকৌশলীদের আছে মেধা, আছে অমিত সম্ভাবনা। তারা দেশের সম্পদ। কিন্তু তারা এখানে গবেষণা ও কাজের পর্যাপ্ত সুযোগ পাচ্ছে না। ফলে তারা দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। এভাবে দেশ তার সেরা মেধাবী মানুষদের অবদান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দেশের মেধাবী প্রকৌশলীদের জন্য গবেষণা ও কাজের সুযোগ সৃষ্টি করতে ওয়ালটন সব সময় চেষ্টা করে আসছে। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ শতাধিক প্রকৌশলী ওয়ালটন কারখানায় কাজ করছেন। দেশের মেধা ও সম্পদ কাজে লাগিয়ে উচ্চ প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদন শিল্পে নতুন নতুন উদ্ভাবনে মানুষের কল্যাণে কাজ করছে ওয়ালটন। উচ্চমানের প্রযুক্তিপণ্য দিয়ে বাংলাদেশ সারা বিশ্ব জয় করে নেবে। সেই লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার উদ্যেগ নেয়া হয়েছে। আমরা চাচ্ছি এর মাধ্যমে দেশের মেধা, দেশের শিল্প ও প্রযুক্তিগত উন্নয়ণে কাজে লাগবে।

আইইউটির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, ওয়ালটন এক বিস্ময়কর শিল্পপ্রতিষ্ঠান। ওয়ালটন কারখানা পরিদর্শন করে আমরা অবিভ‚ত। এটা বাংলাদেশের বিগেস্ট ইন্ডাস্ট্রি। ওয়ালটনের মতো শিল্পপ্রতিষ্ঠান আমি বিদেশেও দেখি নাই।

তিনি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মেধা কাজে লাগানোর জন্য গবেষণার পর্যাপ্ত সুযোগ থাকা জরুরি। সে উদ্দেশ্যে ওয়ালটন এগিয়ে এসেছে। আমি তাদের অভিনন্দন জানাই। ওয়ালটনের মতো অন্যান্য বেসরকারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান এগিয়ে এলে আমাদের দেশের মেধাবী সন্তানগণ তাদের সেরাটা দিতে পারবে।

ওয়ালটন কারখানা পরিদর্শনকারী শিক্ষকদের মধ্যে আরো ছিলেন আইইউটির প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর ড. ওমর জাহ, প্রফেসর ড. মো. আশরাফুল হক, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম, চিফ অব এস্টাবলিসমেন্ট মো. গোলাম সালেক, রেজিস্ট্রারার ড. মউবেসা উমর, প্রফেসর ড. মো. রুহুল আমিন, প্রফেসর ড. এনায়েত উল্লাহ পাটোয়ারি, প্রফেসর ড. হোসেইন মো. শাহিন, প্রফেসর ড. মো. হামিদুর রহমান এবং কম্পট্রোলার মারুফুল ইসলাম ভুঁইয়া।

রুয়েট শিক্ষকরা হলেন প্রফেসর ড. মিয়া মো. জগলুল শাহাদাত, প্রফেসর ড. মো. ফারুক হোসেইন, প্রফেসর ড. মো. এমদাদুল হক এবং ড. মোহাম্মদ নুরুর রহমান। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অনলাইনের মাধ্যমে যুক্ত হন রুয়েটের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. রফিকুল ইসলাম শেখ।

ওয়ালটন কারখানা পরিদর্শনকারী কুয়েট শিক্ষকদের মধ্যে ছিলেন প্রফেসর ড. মো. কুতুব উদ্দীন, প্রফেসর ড. খন্দকার আফতাব হোসেইন, প্রফেসর ড. এ. এন. এম মিজানুর রহমান, প্রফেসর মো. গোলাম কাদের, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাসুদ এবং অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড. মো. আবদুল্লাহ আল বারি।

শাবিপ্রবি প্রতিনিধিদলে ছিলেন প্রফেসর ড. মো. আবু হায়াত মিঠু, প্রফেসর ড. এ বি এম আবদুল মালেক এবং প্রফেসর ড. আহমেদ সায়েম।

এর আগে বুধবার সকালে কারখানা কমপ্লেক্সে পৌঁছালে অতিথিদের ফুল দিয়ে স্বাগত জানান ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর হুমায়ূন কবীর ও আলমগীর আলম সরকার।

সে সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর উদয় হাকিম, কর্নেল (অব) এস এম শাহাদাত আলম, ফিরোজ আলম, ইউসুফ আলী, মীর মুজাহেদীন ইসলাম, আনিসুর রহমান মল্লিক, তাপস কুমার মজুমদার, তোফায়েল আহমেদ ও ইয়াসির আল ইমরান প্রমুখ।

কারখানা প্রাঙ্গনে অতিথিরা ওয়ালটনের বিশাল কর্মযজ্ঞের উপর নির্মিত ভিডিও ডক্যুমেন্টারি উপভোগ করেন। এর আগে তারা পর্যায়ক্রমে ওয়ালটনের বিশ্বমানের রেফ্রিজারেটর উৎপাদন প্রক্রিয়া, মোল্ড অ্যান্ড ডাই, কম্প্রেসর, এয়ার কন্ডিশনার, টেলিভিশন ইত্যাদি কারখানায় উৎপাদন প্রক্রিয়া সরেজমিনে পরিদর্শন করেন।



 

Show all comments
  • Abdur Razzak ১২ মার্চ, ২০২১, ৮:০১ এএম says : 0
    I'm Computer Science & Engineering i need a job I would like to start a career at Walton as a computer science and engineering student. Kindly please let me know.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ওয়ালটন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ