গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
মশা নিধন অভিযান পরিদর্শন করতে গিয়ে আজ বুধবার খালও উদ্ধার করলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম। কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে গত সোমবার শুরু হওয়া ডিএনসিসির অঞ্চল ভিত্তিক সমন্বিত অভিযান (ক্রাশ প্রোগ্রাম) আজ বুধবার তৃতীয় দিনে অব্যাহত ছিলো। আজ কারওয়ান বাজার (অঞ্চল-৫) অঞ্চলে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
সকাল আটটায় ডিএনসিসি মেয়র মোহাম্মদপুর রিং রোড, শিয়া মসজিদ এলাকা, রামচন্দ্রপুর খাল এবং তদসংলগ্ন এলাকায় মশক নিধন অভিযান পরিদর্শন করেন। বেলা ১২টায় মোহাম্মদপুরে পরিদর্শন শেষে তিনি ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে মশক নিধন কার্যক্রম পরিদর্শনের উদ্দেশে রওনা দেন। শ্যামলী সিনেমা হলের বিপরীত দিকের গলি ধরে কিছুদূর এগুতেই দেখা গেল একটি রাস্তার মোড়ে অবৈধভাবে দোকান নির্মাণের কারণে গাড়ি চলাচল বাধাগ্রস্থ হচ্ছিল। আতিকুল ইসলাম গাড়ি থেকে নেমে অবৈধ দোকানগুলো পর্যবেক্ষণ করে অবিলম্বে ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দেন।
সেখান থেকে আগারগাঁওয়ের দিকে কিছুদূর এগুলেই চোখে পড়ে কল্যাণপুর ‘চ’ খাল। খালের দুইপাশের হাঁটার পথে এমনকি খালের উপরেও অবৈধভাবে নির্মিত হয়েছে অস্থায়ী দোকান। মেয়রের নির্দেশে এরকম কয়েকটি দোকান সাথে সাথে বন্ধ করে দেওয়া হয়। খাল ধরে আগারগাঁও ৬০ ফুট রাস্তার সমাজকল্যাণ মোড়ের দিকে কিছুদূর এগুলেই একটি স্থানে খালের পাশে হাঁটার পথ আটকে যায়। ৪০ ফুট খালও হয়ে যায় মাত্র ২ ফুট। অবশিষ্ট ৩৮ ফুট খাল এবং ১৬ ফুট ওয়াকওয়ে মাটি দিয়ে ভরাট করে টিন দিয়ে ঘেরা। জায়গাটি আনুমানিক ১৫ কাঠা। মেয়রের কাছে এটি পরিষ্কার হয়ে যায় যে, খাল এবং হাঁটার রাস্তা অবৈধভাবে দখল করে টিনের বাউন্ডারি করা হয়। মেয়রের নির্দেশে সাথে সাথে টিনের বেড়া অপসারণ করা হয়। ভিতরে শাকসব্জির আবাদ এবং ছোট আরো তিনটি টিনের ঘর। আতিকুল ইসলামের নির্দেশে তাৎক্ষণিকভাবে সকল অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করা হয়।
ঘটনাস্থলের কাছেই ছিল একটি মাটি খোড়ার যন্ত্র (এক্সকেভেটর)। আতিকুল ইসলামের সাথে সাথে এটি নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত দেন। তারপর শুরু হয় অবৈধভাবে দখলকৃত খাল ও হাঁটার জায়গা উদ্ধার অভিযান। বিকেল ৪টা পর্যন্ত প্রায় ১০ ফুট খনন করা হয়। আগামীকালও উদ্ধারকৃত এই খাল খননকাজ অব্যাহত থাকবে।
ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম এ সময় বলেন, “আমরা যেখানে দাঁড়িয়ে আছি এটা খালের জায়গা। জনৈক বেলায়েত এই জায়গাটি মাটি ভরাট করে এখানে দখল করেছে। এর ফলে এখানে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়, কোমর পানি হয়। কারণ খাল দিয়ে পানি যেতে পারে না। আমরা এক্সকেভেটর দিয়ে এই খালটি এখনই খনন করছি। কিন্তু আমরা এই যে খাল দখল করছি, জনগণকে কষ্ট দিচ্ছি, এটি হতে দেওয়া যাবে না। জাতির পিতা এই মার্চ মাসেই তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন। রক্তের বিনিময়ে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। আসুন যেখানে যেখানে খাল দখল করে রেখেছে, জনগণকে সাথে নিয়ে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সাথে নিয়ে এই খাল আমরা দখলমুক্ত করব। তিনি আরো বলেন, এই খাল মশা উৎপাদনের উর্বর ভূমি। রাজনৈতিক নেতা কর্মীরাও আমাদের এই কাজে সহযোগিতা করছে। এই এলাকার সর্বস্তরের জনগণ, রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, বাড়ির মালিক সমিতি, বিভিন্ন সোসাইটি সবাই এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে। একজন দখল করেছে, এই একজনের কারণে সকলের ভোগান্তি হচ্ছে। আজকে এই এলাকার মানুষ অত্যন্ত আনন্দিত।
প্রসঙ্গত, এই স্থানে খাল ও হাঁটার জায়গা দখলের কারণে এতদিন ধরে এই খালে পানির প্রবাহ বন্ধ ছিল। অল্প বৃষ্টিতে এখানে জলাবদ্ধতা তৈরি হতো। এই বদ্ধ পানি কচুরিপানা ও মশার বংশবিস্তারের জন্য একটি আদর্শ স্থান। অসংখ্য মশার লার্ভা খালের পানিতে পাওয়া যায়। খাল উদ্ধার ও খননের কারণে এলাকার মানুষ মেয়র আতিকুল ইসলামের প্রতি এতটাই আনন্দিত যে, তাৎক্ষণিকভাবে একটি ছোট জনসমাবেশ করে হাততালি ও বক্তব্যের মাধ্যমে উল্লাস প্রকাশ করে।
কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণে আগামীকাল মহাখালী অঞ্চলে (অঞ্চল-৩) সমন্বিত অভিযান পরিচালিত হবে। শুক্রবার ব্যতীত আগামী ১৬ মার্চ পর্যন্ত এ অভিযান চলবে।
আজকের অভিযানে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সেলিম রেজা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবায়েদুর রহমান, ওয়ার্ড কাউন্সিলর শফিকুল ইসলাম সেন্টু, সলিমুল্লাহ সলু, আসিফ আহমেদ, সৈয়দ নূর হোসেন, ফোরকান হোসেন, হামিদা আক্তার মিতা প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।