মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে সমর্থন দিয়েছে চীন। চীনের উচ্চ আইনসভা প্যারিসের বিশ্ব জলবায়ু চুক্তিকে সমর্থন করেছে বলে জানিয়েছে চীনা বার্তা সংস্থা। বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনকারী কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমনকারীর তালিকায় শীর্ষে আছে এশিয়ার এই দেশটি। হংজৌয়ে অনুষ্ঠিতব্য জি-২০ সম্মেলনে বা তার কয়েক সপ্তাহ আগে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের একত্রে প্যারিস জলবায়ু চুক্তিকে সমর্থন প্রদানের ঘোষণা দেয়ার কথা আছে। এর আগে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে ঐতিহাসিক প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনে একটি চুক্তি উত্থাপিত হয়। সেখানে কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমন কমিয়ে বৈশ্বিক উষ্ণতাকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি বাড়তে না দেয়ার বিষয়ে সম্মত হয় সম্মেলনে অংশ নেয়া অধিকাংশ দেশ। কিন্তু বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বিষয়টি নিয়ে তখন পর্যন্ত কোনো সম্মতি জানায়নি। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বৃদ্ধি ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখতে গত বছর ডিসেম্বর মাসে প্যারিসে জলবায়ু সম্মেলনে কার্বন নিঃসরণ হ্রাস করতে একটি চুক্তি হয়। সেই চুক্তিকে সমর্থন দিল চীন। সপ্তাহব্যাপী বৈঠকের শেষ দিন গতকাল শনিবার সকালে চীনের ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নির্বাহী কমিটি পিপল’স কংগ্রেস স্ট্যান্ডিং কমিটি ‘প্যারিস চুক্তির পুনর্মূল্যায়ন ও অনুসমর্থন প্রস্তাব’ পাস করে। প্যারিস চুক্তি বিশ্বের প্রথম সম্প্রসারিত জলবায়ু চুক্তি। এ চুক্তি শুধু তখনই কার্যকরী ভূমিকা রাখতে সম্ভব হবে যখন বিশ্বের দেশগুলো কার্বন নিঃসরণ ৫৫ শতাংশ কমিয়ে আনতে সক্ষম হবে। কার্বন নিঃসরণে বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ দেশ যুক্তরাষ্ট্র। চীনের পাশাপাশি তারাও কার্বন হ্রাসের বিষয়ে ঘোষণা দিতে যাচ্ছে। চীন ও যুক্তরাষ্ট্র এ ঘোষণা দিয়ে তা বাস্তবায়ন করার পর কার্বন নিঃসরণ ৪০ শতাংশ কমে আসবে। চীনে আগে যে ২৩টি দেশ কার্বন নিঃসরণ হ্রাসের ঘোষণা দিয়েছে তাতে মোট কার্বন নিঃসরণ কমেছে ১ শতাংশ। কারণ শিল্পে অনুন্নত এসব দেশ কার্বন নিঃসরণ করে খুবই সামান্য।
এদিকে ঐতিহাসিক প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে গত শুক্রবার স্বাক্ষর করেছে ১৭৫টি দেশ। জাতিসংঘ জানায়, কোনো আন্তর্জাতিক চুক্তিতে একদিনে এত বেশি রাষ্ট্রের একসঙ্গে স্বাক্ষরের এটি নতুন রেকর্ড। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি মোকাবিলার লক্ষ্যে প্যারিসে সম্পাদিত চুক্তিটি ১৫টি দেশ ইতিমধ্যে অনুমোদন করেছে। এগুলো মূলত ছোট ছোট দ্বীপরাষ্ট্র্র। গত ১২ ডিসেম্বর প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে সম্মতি দেয় ১৯৫টি দেশ। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে বিভিন্ন রাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা চুক্তি সই করেন। তবে আরও বেশ কয়েকটি দেশের স্বাক্ষর করা শেষ হলেই চুক্তিটি কার্যকর হবে। অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী ভাষণে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুন বলেন, আজ আমরা ভবিষ্যতের এক নতুন অঙ্গীকারনামায় সই করছি। প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে ভবিষ্যতের সব প্রজন্মের জীবন সুন্দরভাবে চালিত হবে, যা এখন ঝুঁকির মুখোমুখি। ৪৬তম বিশ্ব ধরিত্রী দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘের জলবায়ুবিষয়ক প্রধান ক্রিস্তিয়ানিয়া ফিগুয়েরেস বলেন, অধিকাংশ দেশকে এখন নিজ নিজ পার্লামেন্টে আলোচনা করে অভ্যন্তরীণভাবে চুক্তিটি অনুমোদনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ বলেন, প্যারিসে চুক্তি সম্পাদনের মুহূর্তটি ছিল অত্যন্ত আবেগময়, যা রাজনীতিবিদ ও নেতাদের জীবনে বেশ দুর্লভ। এখন সবাইকে অনেক দূর অবধি যেতে হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আগামী জানুয়ারিতে ক্ষমতা ছাড়ার আগে প্যারিস চুক্তির বাস্তবায়ন দেখে যেতে চান বলে জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, প্যারিসের চুক্তিটি ছিল বিশ্বের প্রথম সম্মেলিত জলবায়ু চুক্তি। তবে চুক্তিটিকে আইনে পরিণত করতে বিশ্বে ৫৫ ভাগ বা তার বেশি কার্বন নির্গমনকারী দেশগুলোকে চুক্তিটি সমর্থন করতে হবে। চীনকে অনুসরণ করে যুক্তরাষ্ট্র চুক্তিটির প্রতি সমর্থন জানালে শতকরা ৪০ ভাগ কার্বন নির্গমনকারী দেশের এই চুক্তির প্রতি সমর্থন জানানো হবে। সিনহুয়া, বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।