নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
আকিলা ধনাঞ্জয়ার বলটি মিড উইকেটের ওপর দিয়ে উড়িয়ে দিলেন কাইরন পোলার্ড। ধারাভাষ্যকক্ষে ইয়ান বিশপের চিৎকার, “সিক্স সিক্সেস ফর কাইরন পোলার্ড... হার্শেল গিবস, যুবরাজ সিং, ইউ হ্যাভ কোম্পানি...।” ছয় ছক্কা মেরে পোলার্ড যখন কুর্নিশ করছেন সতীর্থদের, বোলার দনাঞ্জয়ার শির তখন নত হয়ে আছে হতাশায়। অথচ আগের ওভারেই তিনি উড়ছিলেন হ্যাটট্রিক আনন্দে!
অ্যান্টিগায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ-শ্রীলঙ্কা টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচটি এভাবেই মেলে ধরেছে ক্রিকেটের নানা রঙ। বাংলাদেশ সময় গতকাল সকালে ক্যারিবিয়ানদের ৪ উইকেটে জয়ের এই ম্যাচে তোলপাড় পড়েছে রেকর্ড বইয়েও।
হ্যাটট্রিক
দ্বিতীয় ইনিংসের চতুর্থ ওভারে হ্যাটট্রিক করেন আকিলা ধনাঞ্জয়া। বোলিং অ্যাকশন শুধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা স্পিনার পরপর তিন বলে ফিরিয়ে দেন তিন বাঁহাতি এভিন লুইস, ক্রিস গেইল ও নিকোলাস পুরানকে। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এটি চতুর্দশ হ্যাটট্রিক। এর মধ্যে দনাঞ্জয়া ছাড়া স্পিনার আছেন আফগানিস্তানের রশিদ খান, ওমানের খাওয়ার আলি ও অস্ট্রেলিয়ার অ্যাশটন অ্যাগার। শ্রীলঙ্কার হয়ে প্রথম হ্যাটট্রিক করেছিলেন থিসারা পেরেরা। এরপর দুই বার এই স্বাদ পান লাসিথ মালিঙ্গা।
ছয় ছক্কা
ইনিংসের ৬ নম্বর ওভারে ধনাঞ্জয়ার ৬ বলে ৬ ছক্কা মারেন কাইরন পোলার্ড। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এই কীর্তি গড়া দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান পোলার্ড। ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে স্টুয়ার্ট ব্রডের ওভারে ৬ ছক্কা মেরেছিলেন যুবরাজ সিং। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সব সংস্করণ মিলিয়ে এক ওভারের সব বলে ছক্কা মারতে পেরেছেন আর কেবলে একজনই। ২০০৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে মেরেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার হার্শেল গিবস। স্বীকৃত ক্রিকেটে সব সংস্করণ মিলিয়ে টানা ছয় বলে ছক্কার নজির আছে আর মাত্র ৫টি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এটি করেছেন স্যার গ্যারি সোবার্স ও রবি শাস্ত্রি, ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতে করেছেন ইংল্যান্ডের রস হোয়াইটলি, আফগানিস্তানের হজরতউল্লাহ জাজাই ও নিউজিল্যান্ডের লিও কার্টার।
এক ওভারে ৬ ছক্কার ঘটনা আছে আরেকটি, তবে সেটি টানা ৬ বলে ছিল না। ২০১৮ সালে নিউ জিল্যান্ডের ঘরোয়া এক দিনের ম্যাচের টুর্নামেন্টে সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্টসের মিডিয়াম পেসার উইলেম লুডিকের ওভারে ৬টি ছক্কা মেরেছিলেন নর্দান ডিস্ট্রিক্টসের জো কার্টার ও ব্রেট হ্যাম্পটন মিলে। তবে সেই ওভার শুরু হয়েছিল চার রান দিয়ে, মাঝে একটি সিঙ্গেলও ছিল। নো বল ছিল দুটি, সেই দুটিতে হয় ছক্কা। এক ওভার থেকে এসেছিল বিশ্বরেকর্ড ৪৩ রান!
পাওয়ার প্লের পাওয়ার
৬ ওভারে এ দিন ৯৮ রান তোলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে পাওয়ার প্লের বিশ্বরেকর্ড। আগের রেকর্ডটি ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে, গত বছর গ্রেনাডায় ৬ ওভারে ৯৩ তুলেছিল আয়ারল্যান্ড।
হর্ষ-বিষাদ
হ্যাটট্রিকের ম্যাচেই ওভারে ছয় ছক্কা হজম করেছেন ধনাঞ্জয়া। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তো বটেই, স্বীকৃতি ক্রিকেটেই এই দ্বিমুখী স্বাদ নেই আর কারও। ধনাঞ্জয়ার ৪ ওভার থেকে রান এসেছে ৬২। টি-টোয়েন্টিতে হ্যাটট্রিক করার ম্যাচে সবচেয়ে খরুচে বোলিংয়ে তার ধারেকাছে নেই আর কারও।
হ্যাটট্রিকের ম্যাচে এর আগে সবচেয়ে বেশি রান গুনেছিলেন মোহাম্মদ হাসনাইন। ২০১৯ সালের অক্টোবরে লাহোরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাকিস্তানের তরুণ পেসার ৪ ওভারে দিয়েছিলেন ৩৭ রান।
ছক্কার বন্যা
৪ ওভারে ৮টি ছক্কা হজম করেছেন আকিলা দনাঞ্জয়া। একটি টি-টোয়েন্টিতে এতগুলো ছক্কা আগে হয়নি কোনো এক বোলারের বলে। এর আগে সবচেয়ে বেশি ছক্কা দেওয়ার রেকর্ড ছিল ৭টি, যৌথভাবে ৪ বোলারের। আয়ারল্যান্ডের ব্যারি ম্যাককার্থি, অস্ট্রেলিয়ার অ্যান্ড্রু টাই, ভারতের যুজব্রেন্দ্র চেহেল ও ইংল্যান্ডের স্টুয়ার্ট ব্রড পেয়েছিলেন ভুলে যাওয়ার মতো এই স্বাদ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।