নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস ডেস্ক : আর্জেন্টনা দলে এদগার্দো বাউসা অধ্যায় শুরুর আগ্রহটা মৌন থাকারই কথা। কারণ, ম্যাচটা ছিল বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় লিওনেল মেসির প্রত্যাবর্তনের। অভিমানে ভেঙে দলে বাউজারই পরামর্শে দলে এলেও ফুটবল জাদুকরের মুখ থেকে কোনো কথা বের হয়নি এতদিন। কথা বলার ক্ষেত্রই পা তিনি পেলেন কই! তিনি যে কথা বলেন ফুটবলীয় ভাষায়। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চড়িয়েই দিলেন সব প্রশ্নের উত্তর। অসাধারণ এক গোল করে দলকে জিতিয়ে ভক্তদের যেন এই বার্তাই দিলেনÑ যে ভালোবাসার বন্ধনে তোমরা আমাকে বেঁধেছ তা ছিন্ন করব, এ সাধ্য কি আমার আছে?
মেসির প্রত্যাবর্তনটা এমন কাব্যিক হলেও ঘরের মাঠে চিত্রটা ছিল সম্পূর্ণ উল্টো। কুঁচকির চোট নিয়ে খেলতে নেমে কঠিন পরীক্ষা দিতে হয়েছে তাকে। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের মত মহা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দল উরুগুয়ের মত দলের বিপক্ষে দলে নেই গঞ্জালো হিগুয়েইন, আগুয়েরো-পাস্তোরেও চোটের কারণে বাইরে। আক্রমণের পুরো ভার তাই নিজ কাঁধে নিয়েই মাঠে নামেন মেসি। সেই ভার আরো বেড়ে যায় যখন মেসির একমাত্র আক্রমণসঙ্গী পাওলো দিবালা প্রথমার্ধেই দুই হলুদ কার্ডে কাটা পড়ে মাঠ ছাড়েন। কিন্তু এর আগেই দুর্দান্ত এক গোল করে দলকে এগিয়ে নেন ৫ বারের বিশ্বসেরা। ডি বক্সের বাঁ দিক থেকে জটলার মধ্য দিয়ে তার নেওয়া শট প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের পায়ে লেগে বল জালে জড়ায়। কিন্তু গোলের সৌন্দর্যটা ছিল অন্যখানে। পিছন দিকে পা বাড়িয়ে বলটা লুফে নিয়ে, মুহূর্তেই শরীর ঘুরিয়ে জটলার ভেতরেই অল্প জায়গার ভেতরে যেভাবে গোলে শট নিলেন, সৌন্দর্যটা সেখানেই। এমনই শৈল্পিক ছিল তার প্রত্যাবর্তনের দিনটা। প্রতিপক্ষের পায়ে লেগে গোল হলেও শট লক্ষ্যে ছিল বলেই গোলটি মেসির।
দিবালার ভাগ্যটা খারাপ বলতেই হয়। দীর্ঘ অপেক্ষা পর মেসির পাশে খেলার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে ঠিকই। যেটুকু সময় মাঠে ছিলেন, তাতে বুঝিয়েও দিয়েছেন আর্জেন্টিনা দলে আগামীল ভার নিতে তিনি প্রস্তুত। মেসির সাথে রসায়নটাও জমেছিল বেশ। কিন্তু ম্যাচের ৩০তম মিনিটে ডি বক্সের ভেতর থেকে যেভাবে রক্ষণদের ফাঁকি দিয়ে শট নিয়েছিলেন তাতে নিতান্ত মন্দ ভাগ্য বলেই গোল পাননি জুভেন্টাস স্ট্রাইকার। বল বারে লেগে ফিরে আসার সময় গোলরক্ষকের পশ্চাদঞ্চলে লেগেও বল জালে ঢুকলো না! তখন কি তিনি জানতেন এর চেয়েও বড় দুর্ভাগ্য অপক্ষো করছে? বিরতির বাঁশি বাজানোর আগেই মাঠ ছাড়তে হবে?
বিরতির পর যেভাবে লড়াই করেছে আর্জেন্টিনা তাতে প্রশংসা তাদের প্রাপ্য। আক্রমণভাগের দায়ীত্ব একাই সামলান মেসি। ৫৪তম মিনিটে পেতে পারতেন আরো একটি মনে রাখার মত গোলও। কিন্তু তার বাঁ পায়ের জাদুময় সেই ফ্রি-কিক কোনমতে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান গোলরক্ষক মুসলেরা। পাশাপাশি স্বাগতিক রক্ষণভাগ লুইস সুয়ারেজ, এডিনসন কাভানিদের যেভাবে সামলেছেন তাতে পূর্ণ নম্বরই তাদের প্রাপ্য। সুয়ারেজ-কাভানিদের গোলের কোন সুযোগই দেননি ফিউনেস মরি ও মাচেরানোরা। ১০ জনের দলকে তারা যেন বানিয়ে ফেলেন ১১ জনে!
এমন স্বরনীয় ম্যাচ দিয়েই আর্জেন্টিনা দলে অভিষেক হলো বাউসার। দ্বিতীয়ার্ধে একজন কম থাকায় খেলার ফরমেশন পাল্টে করেন ৪-৪-১। তাতেই বাজিমাৎ। তবে বাউসাও এর সম্পূর্ণ কৃতিত্ব দিলেন শীষ্যদের, ‘একজন খেলোয়াড় কম নিয়ে আমরা আমাদের খেলা চালিয়ে গেছি। আমাদের শুধু প্রতিআক্রমণে একটু ঘাটতি ছিল। আমরা এমন একটি ম্যাচ জিতেছি যেটা সব সময়ই কঠিন। উরুগুয়ে কঠিন এক প্রতিপক্ষ।’ তবে প্রথমার্ধে খেলা নিজেদের নিয়ন্ত্রণেই ছিল উল্লেখ করে বাউসা বলেন, ‘১১ জন খেলোয়াড় থাকা পর্যন্ত আমরা ম্যাচটি নিয়ন্ত্রণ করেছি এবং বল ধরে রেখে আমরা পার্থক্য গড়ে দিয়েছি।’
এই জয়ে লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের রাশিয়া বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ৭ ম্যাচ শেষে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে আর্জেন্টিনা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।