Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাদেশ সফরে এক ঢিলে দুই পাখি মারবেন মোদি?

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ মার্চ, ২০২১, ৪:০৭ পিএম

আগামী ২৬ মার্চ ঢাকা সফরে আসার কথা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসলেও এটিই হতে যাচ্ছে তার প্রথম বাংলাদেশ সফর। সফরের দ্বিতীয় দিন ২৭ তারিখ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর পৈতৃক বাড়ি দেখতে যাওয়ার কথা তার। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, একই সফরে গোপালগঞ্জের ওড়াকান্দি ঘুরে আসতে চান প্রধানমন্ত্রী। এদিকে, একই দিন ২৭ মার্চ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যে ভোট গ্রহণ শুরু হচ্ছে।

১৮১২ (মতান্তরে ১৮১১) সালে ১১ মার্চ ওড়াকান্দিতে জন্ম মতুয়া ধর্মমতের প্রবক্তা হরিচাঁদ ঠাকুরের। তার বাণী ও নির্দেশাবলি গোটা বাংলায় ছড়িয়ে পড়েছিল তার যে পুত্র গুরুচাঁদ ঠাকুরের হাত ধরে, তারও জন্মস্থান ওড়াকান্দি। প্রত্যন্ত এই গ্রামে একটি মন্দির রয়েছে, যা মতুয়া সম্প্রদায়ের কাছে সর্বোচ্চ মর্যাদার তীর্থস্থান হিসেবে গণ্য হয়। প্রধানমন্ত্রী সেখানে গিয়ে হরিচাঁদ-গুরুচাঁদকে প্রণাম করে এলে পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া-ভোট টানা বিজেপির পক্ষে সহজ হবে বলে মনে করছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কারণ ভারতের আর কোনও প্রধানমন্ত্রী সেখানে যাননি।

যদিও পরিকাঠামোগত কিছু অসুবিধা থাকায় শেষ পর্যন্ত মোদি সেখানে যেতে পারবেন কি না, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ও ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশন বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলছে না। তবে বিজেপি সূত্রের দাবি, বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুরও ওড়াকান্দি সফরে মোদির সঙ্গে থাকতে পারেন। এ মাসে ওড়াকান্দি যাচ্ছেন কি না, জানতে চাইলে শান্তনু খানিকটা থমকে যান। তার পরে বলেন, ‘ওড়াকান্দি থেকে আমন্ত্রণ এসেছে, কিন্তু যাওয়ার বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি।’

মতুয়া মহাসঙ্ঘের কেন্দ্রীয় নেতা দিল্লিবাসী সুশীল মল্লিক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সত্যিই এই কাজটি করলে বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে থাকা মতুয়া সম্প্রদায়ের ৫ কোটি মানুষের কাছে আপন হয়ে উঠবেন। এর পরে সেখানে দাঁড়িয়ে উদ্বাস্তু হয়ে ভারতে যাওয়া মতুয়া সম্প্রদায়কে নিঃশর্ত নাগরিকত্ব দানের মতো ঘোষণা যদি প্রধানমন্ত্রী করেন— তো জয়জয়কার পড়ে যাবে!’

বাংলাদেশের প্রশাসন সূত্রের খবর, ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে গোপালগঞ্জ পৌঁছে টুঙ্গিপাড়ার পাশাপাশি ওড়াকান্দি মতুয়া মন্দির, বরিশালের শিকারপুরে সতীপীঠ হিসেবে পরিচিত সুগন্ধা শক্তিপীঠ, কুষ্ঠিয়ার শিলাইদহে রবীন্দ্রনাথের কুঠিবাড়ি এবং বাঘা যতীনের বসতবাড়ি দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন মোদি। বাকি জায়গাগুলোয় সমস্যা না-হলেও, সমস্য হচ্ছে ওড়াকান্দি নিয়ে। কারণ, প্রশাসনের বক্তব্য মোদির মতো ভিভিআইপি-র সফরের জন্য পর্যাপ্ত পরিকাঠামো সেখানে নেই। ঘিঞ্জি রাস্তায় গাড়ির কনভয় ঢুকবে না, কাছেপিঠে হেলিপ্যাড বানানোর জায়গাও অপ্রতুল।

তবে তার পরেও সফরসূচি থেকে ওড়াকান্দি বাদ না-দেয়ার জন্য ভারতের তরফে ‘জোর দেয়া হচ্ছে’ বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের এক অফিসার। তবে তারা চিন্তিত। কারণ, এর আগে অটলবিহারী বাজপেয়ীর আমলে ভারতের হাই কমিশনার বীণা সিক্রি ওড়াকান্দিতে এলে মাত্রাছাড়া ভিড়ে বেশ কয়েক জন পদপিষ্ট হয়েছিলেন। শুক্রবার ভারতীয় হাই কমিশনের ৯ জনের একটি দল সুগন্ধা শক্তিপীঠের পাশাপাশি ওড়াকান্দিও ঘুরে গিয়েছেন। স্থানীয় প্রশাসনের দাবি, সেখানে মোদির সফর যাতে হয়, তা নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে মতুয়াদের নাগরিকত্বের বিষয়টি ফয়সালা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে লোকসভায় এই সম্প্রদায়ের ঢালাও ভোট পেয়েছে বিজেপি। বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে নির্বাচিত হয়েছেন হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের উত্তরসূরি শান্তনু ঠাকুর। কিন্তু তার পরে বিষয়টির কোন সুরাহা হয়নি। শান্তনু বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করেছেন, ক্ষোভের কথা নেতৃত্বকে জানিয়েছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সম্প্রতি বনগাঁ-গাইঘাটায় সভা করে এলেও নাগরিকত্ব প্রশ্নের জবাব মতুয়ারা পাননি।

তৃণমূলের সাবেক সাংসদ, ঠাকুরবাড়ির বধূ মমতা ঠাকুর মাঠে নেমে বোঝাচ্ছেন— মতুয়াদের রেশন কার্ড, ভোটার কার্ড, আধার কার্ড সব রয়েছে। তারা তো নাগরিকই। বিজেপি মিথ্যা বলে বিভ্রান্ত করছে। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের একাংশ মনে করছেন, তৃণমূলের এই প্রচারে হাওয়া বদলাতে পারে। এই পরিস্থিতিতে মতুয়া ভোট ধরে রাখতে দরকার একটা ‘মাস্টারস্ট্রোক’, যার রূপকার অমিত শাহ। তবে পুরোটাই করা হচ্ছে বেশ রাখঢাক করে। সূত্র: এবিপি।



 

Show all comments
  • Shahjahan Sarkar ২ মার্চ, ২০২১, ৬:৩০ পিএম says : 0
    আমাকে কেও কি বলবেন মোদির বাংলাদেশ সফর আওয়ামীলীগের জন্য এত গুরুত্ব পূর্ণ কেন?
    Total Reply(2) Reply
    • ২ মার্চ, ২০২১, ৯:০৩ পিএম says : 0
    • amir ২ মার্চ, ২০২১, ৯:৪৭ পিএম says : 0
      hi I am amir
  • বন্ধু খান ২ মার্চ, ২০২১, ৭:৪৫ পিএম says : 0
    ভারতের আভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যবহৃত হবে কেন?
    Total Reply(0) Reply
  • Akkas ২ মার্চ, ২০২১, ৯:৪৫ পিএম says : 0
    Amra chaina ekta khuni Bangladeshe ashuk. Modi hoilo awami leaguer bondhu. Bangladesher shob manusher na. Modi ekhane asha manei rokto jhoruk. Khuni modi hotao desh bachao. Modi khuni keno ekhane ashbe.modike 98%manush chaina Bangladeshe ashuk.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাংলাদেশ-ভারত

৯ ডিসেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ