Inqilab Logo

বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

করোনা সঙ্কট মোকাবিলায় শিল্পোন্নত বিশ্বের উদ্যোগ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০৫ এএম

করোনা মহামারির ধাক্কায় নিজেদের ঘর সামলানোর পর জি-সেভেন শীর্ষ নেতারা একাধিক আন্তর্জাতিক উদ্যোগ নিয়ে আলোচনায় বসছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন কোভ্যাক্স উদ্যোগে ৪০০ কোটি ডলার অঙ্গীকার করেছেন। করোনা সঙ্কট ও তার অর্থনৈতিক পরিণতির মুখে প্রায় গোটা বিশ্ব যখন দিশাহারা হয়ে পড়েছে, তখনই শিল্পোন্নত দেশগুলির গোষ্ঠী জি-সেভেনের শীর্ষ নেতারা আবার বৈঠকে বসছেন। এমন অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে তাদের দাওয়াই কী হবে, তা জানতে অপেক্ষা করে আছে গোটা বিশ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেন এই প্রথম জি-সেভেন বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন। পূর্বসূরি ডনাল্ড ট্রাম্পের গত চার বছরের শাসনকালে সংঘাতের পর অ্যামেরিকা আবার আন্তর্জাতিক সহযোগিতার পথে ফিরে আসায় কিছুটা আশার আলো দেখা যাচ্ছে।

করোনা মহামারির কারণে এখনো পর্যন্ত গোটা বিশ্বে প্রায় ২৪ লাখ মানুষের মৃত্যু এবং শান্তিকালীন সময়ে অর্থনীতি সবচেয়ে বড় ক্ষতির মুখে পড়েছে। প্রাথমিক ধাক্কা সামলাতে প্রত্যেকটি দেশ ঘর সামলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেও এবার বৃহত্তর চিত্রের দিকে নজর দেবার সময় এসে গেছে বলে অনেক নেতা মনে করছেন। এমন প্রেক্ষাপটে বাইডেন আন্তর্জাতিক সংকটের জবাব হিসেবে যৌথ আন্তর্জাতিক পদক্ষেপের পক্ষে সওয়াল করছেন। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন সাকি বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিশ্বের ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলির জন্য টিকা উৎপাদন, সরবরাহ ও বণ্টনের পাশাপাশি করোনা সংক্রমণ মোকাবিলার আন্তর্জাতিক উদ্যোগ গড়ে তুলতে আগ্রহী। দরিদ্র দেশগুলির জন্য করোনা টিকার ব্যবস্থা করতে কোভ্যাক্স নামের আন্তর্জাতিক উদ্যোগে তিনি ৪০০ কোটি ডলার অঙ্গীকার করতে চলেছেন। আপাতত ২০০ কোটি এবং পরে ধাপে ধাপে বাকি অর্থ দেয়া হবে। অর্থনীতিকে আবার চাঙ্গা করার ক্ষেত্রেও তিনি শিল্পোন্নত দেশগুলির মধ্যে সমন্বয়ের উদ্যোগ নিতে চান।

করোনা সঙ্কটের কারণে লন্ডনে জি-সেভেন শীর্ষ বৈঠকেও নেতারা সশরীরে হাজির থাকতে পারছেন না। তারা ভার্চুয়াল টেবিলে হাজির হয়ে আলোচনা করবেন। বাইডেন ছাড়াও ইটালির নতুন প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাগির উপস্থিতি বিশেষ আগ্রহের সৃষ্টি করছে। ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রাক্তন প্রধান হিসেবে আর্থিক ও অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় তার অভিজ্ঞতা বাকি নেতাদের জন্য সুবিধাজনক হতে পারে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাখোঁ ধনী পশ্চিমা দেশগুলির কোভিড-১৯ টিকার ভান্ডারের তিন থেকে পাঁচ শতাংশ আফ্রিকার জন্য বরাদ্দ করার প্রস্তাব দিয়েছেন। টিকার ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী বৈষম্য দূর করার উপর জোর দিয়েছেন তিনি। জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলও সেই লক্ষ্যে এক ইউরোপীয় উদ্যোগের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন বলে মাক্রোঁ দাবি করেন।
জি-সেভেন আয়োজক দেশ হিসেবে ব্রিটেনও আন্তর্জাতিক উদ্যোগের ডাক দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন মহামারি সংক্রান্ত এক আন্তর্জাতিক চুক্তির প্রস্তাব পেশ করেছেন। এর আওতায় ভবিষ্যতে কোনো মহামারি দেখা দিলে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে। উল্লেখ্য, চীন করোনা মহামারির বিষয়টি প্রথমদিকে ধামাচাপা দেবার চেষ্টা করায় সংক্রমণ গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল।

চীনের উত্থান ও সে দেশের নেতৃত্বের মনোভাবও পশ্চিমা বিশ্বের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পররাষ্ট্র নীতি সংক্রান্ত প্রথম ভাষণে প্রেসিডেন্ট বাইডেন চীনকে সম্ভবত অ্যামেরিকার সবচেয়ে বড় প্রতিযোগী হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। সে দেশের আগ্রাসী মনোভাব ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো মনোভাব মোকাবিলার অঙ্গীকার করেছেন তিনি। তবে ‘একলা চলো রে’ নীতির বদলে এ ক্ষেত্রেও আন্তর্জাতিক সমন্বয় চান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সূত্র : রয়টার্স, এএফপি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনা-সঙ্কট
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ