পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় বোমা পুঁতে রেখে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত ১০ জঙ্গি আসামির সাজা বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। রায়ে যাবজ্জীবন দন্ডিত এক আসামি ও ১৪ বছর করে কারাদন্ডপ্রাপ্ত তিন আসামির মধ্যে একজনকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।
হরকাতুল জিহাদের শীর্ষনেতা মুফতি আবদুল হান্নান এই মামলায় মূল আসামি ছিলেন। কিন্তু অন্য মামলায় তার ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় এই মামলার রায়ে তার নাম বাদ দেয়া হয়েছে।
২০০০ সালের ২২ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় শেখ লুৎফর রহমান সরকারি আদর্শ কলেজ মাঠ প্রাঙ্গণে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার জনসভার জন্য প্যান্ডেল তৈরির সময় শক্তিশালী একটি বোমার সন্ধান মেলে। পরে ৭৬ কেজি ওজনের ওই বোমাটি উদ্ধারের পর নিষ্ক্রিয় করে সেনাবাহিনী। পরদিন (২৩ জুলাই) ওই এলাকা থেকে ৪০ কেজি ওজনের আরও একটি বোমা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ওইদিনই কোটালীপাড়া থানার পুলিশ হত্যাচেষ্টা এবং বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা করে।
ওই মামলায় ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের করা আপিলের বিষয়ে রাষ্ট্র ও আসামি উভয়পক্ষের শুনানি শেষে গতকাল বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ রায় দেন। এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ জানান, প্রধানমন্ত্রীকে হত্যাচেষ্টার এই মামলায় বিচারিক আদালতে দেয়া ১০ আসামির মৃত্যুদন্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। তারা হলেন- ওয়াসিম আকতার, রাশেদ ড্রাইভার ওরফে আবুল কালাম, ইউসুফ ওরফে আবু মুসা হারুন, শেখ ফরিদ ওরফে মাওলানা শওকত ওসমান, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বক্কর, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই ও মাওলানা আবদুর রউফ ওরফে আবু ওমর। এছাড়া মেহেদি হাসান ওরফে আবদুল ওয়াদুদের যাবজ্জীবন কারাদন্ডও বহাল রয়েছে।
বিচারিক আদালতে ১৪ বছর করে সাজাপ্রাপ্ত বাকি তিন আসামি আনিসুল ওরফে আনিস, মো. মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান এবং সরোয়ার হোসেন মিয়ার মধ্যে সরোয়ারকে ঘটনায় সম্পৃক্ততা না থাকায় খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। বাকি দুজনের সাজা খাটা শেষ হলে তারা মুক্তি পাবেন। রায় ঘোষণার সময় আদালতে এদিন রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইন কর্মকর্তা এএম আমিন উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। তার সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ ও ড. মো. বশির উল্লাহ, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মিজানুর রহমান খান শাহীন, মো. শাহীন আহমেদ মৃধা, আশিকুজ্জামান বাবু, শাফায়াত জামিল ও সৈয়দা জাহিদা সুলতানা রত্না। অন্যদিকে, আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান, মোহাম্মদ আহসান, মো. নাসির উদ্দিন ও অমূল্য কুমার সরকার (স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী)।
এর আগে গত ১ ফেব্রুয়ারি এই আপিলের ওপর শুনানি শেষ হয়। পরে এ বিষয়ে রায় ঘোষণার জন্য বুধবার দিন ধার্য করেন উচ্চ আদালত। সে অনুযায়ী হাইকোর্ট আজ এই রায় দিলেন। রায়ের পর আসামি মেহেদী হাসান ওরফে আব্দুল ওয়াদুদ ওরফে গাজী খানকে বিচারিক আদালতের দেওয়া যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং ১৪ বছরের দন্ডিত আসামি আনিসুল ইসলামের দন্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। এছাড়া, ১৪ বছরের আরেক দন্ডিত আসামি সারোয়ার হোসেন মিয়াকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। যদি অন্য মামলা না থাকে, তাহলে তাকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় ২০১৭ সালের ২০ আগস্ট ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক মমতাজ বেগম ১০ জঙ্গির মৃত্যুদন্ড দিয়ে রায় দেন। এছাড়া চার আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দেয়া হয়। আসামিদের আপিলের পর এ মামলার রায়সহ সব নথি ওই বছরের ২৪ আগস্ট হাইকোর্টে পাঠানো হয়। এরপর প্রধান বিচারপতির কাছে নথি উপস্থাপন করা হলে তিনি জরুরি ভিত্তিতে পেপারবুক তৈরির নির্দেশ দেন। মামলাটি শুনানির জন্য প্রস্তুত শেষে কার্যতালিকায় দেয়া হয়। পরে ২০১৮ সালের ২ এপ্রিল বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের বেঞ্চে মামলাটির শুনানি শুরু হয়। কিন্তু প্রধান বিচারপতি বেঞ্চ পুনর্গঠন করায় মামলার শুনানি বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে ২০২০ সালের ১৭ জানুয়ারি বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের হাইকোর্ট বেঞ্চে নতুন করে শুনানি শুরু হয়।
এই আদালতে মামলাটি বিচারাধীন থাকা অবস্থায় রাষ্ট্রপক্ষ কয়েকদফা সময় নেয়। পরবর্তীতে এই বেঞ্চও পুনর্গঠন করা হলে শুনানি থমকে যায়। এ অবস্থায় আবারও বেঞ্চ পুনর্গঠন করা হয়। সর্বশেষ গঠিত বেঞ্চে ২০২০ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন করে শুনানি শুরু হয় যা গত ১ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।