বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
দক্ষিণাঞ্চলে করোনা ভ্যাক্সিন সম্পর্কে ভীতি ও আতংক কাটিয়ে গত ১০ দিনে প্রায় ৬৩ হাজার মানুষ প্রতিষেধক গ্রহন করেছেন। ইতোমধ্যে এ ভ্যক্সিন সমাজের সবার মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেললেও নিবন্ধন নিয়ে জটিলতা দুর করে তা আরো গনমুখি করার তাগিদ দিয়েছেন সমাজের সর্বস্তরের মানুষ সহ চিকিৎসা বিশেষজ্ঞগন। বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জেনারেল হাসপাতাল সহ দক্ষিনাঞ্চলের সব জেলা ও উপজেলা সদরে প্রতিদিনই ভ্যাক্সিন গ্রহনকারীর সংখ্যা আশাব্যঞ্জক হারে বাড়লেও হাসপাতালগুলোতে স্পট রেজিষ্ট্রেশন সহ সব ধরনের নিবন্ধন বন্ধ করে দেয়ায় সাধারন মানুষের জন্য জটিলতা সৃষ্টি করছে। গত ৭ ফেব্রুয়ারী দেশব্যাপী ভ্যাক্সিন প্রদানের শুরু থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার পর্যন্ত ১০ দিনে দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলার ৪২টি উপজেলাতে মোট ৪৩টি কেন্দ্রে প্রায় ৬৫ হাজার নারী-পুরুষ করোনা প্রতিষেধক ভ্যক্সিন গ্রহন করেছেন। যারমধ্যে নারী প্রায় ২০ হাজার।
তবে সমাজের পিছিয়ে পরা জনগোষ্ঠী টিকা প্রদান কেন্দ্রের বাইরে থেকে নিবন্ধন করে ভ্যাক্সিন গ্রহনে কতটা সক্ষম হবেন তা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে ইতোমধ্যে। বিষয়টি সাধারন মানুষের জন্য আরো সহজতর করা সহ সব শ্রেণী পেশার মানুষ যাতে দ্রুত ও সহজে ভ্যাক্সিন গ্রহন করতে পারে সে বিষয়টি নতুন করে ভেবে দেখারও তাগিদ দেয়া হয়েছে বিভিন্ন মহল থেকে।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের মতে, দক্ষিনাঞ্চলে ভ্যক্সিন গ্রাহকারীর মধ্যে সদর উপজেলা বাদে বরিশালের অবশিষ্ট ৯টি উপজেলাতে ১০,৩৭২ জন ছাড়াও শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২,৩০৮ জন, পুলিশ হাসপাতালে ১,০৫৫ , জেনারেল হাপাতালে ৩ হাজার ৫ জন, পটুয়াখালীতে ১১,৬৮ জন, ভোলাতে ১২,৮২৫জন, পিরোজপুরে ১০,২৭৮ জন, বরগুনাতে ৬,৫২৫ জন ও ঝালকাঠীতে ৫,১৩৯ জন করেনা প্রতিষেধক গ্রহন করেছেন।
প্রাথম চালানে দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় ৩ লাখ ৪৮ হাজার ১০টি করোনা ভ্যাক্সিন পৌছে গত গত ২৯ জানুয়ারী। যার মাধ্যমে সর্বমোট ১ লাখ ৭৪ হাজার জনকে দুই ডোজ টিকা প্রদান সম্ভব হবে বলে স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে বলা হয়েছে। প্রাপ্ত ভ্যাক্সিনের মধ্যে বরিশালে ১ লাখ ৬৮ হাজার ১০, পটুয়াখালীতে ৪৮ হাজার, ভোলাতে ৬০ হাজার, পিরোজপুরে ৩৬ হাজার, বরগুনায় ২৪ হাজার এবং ঝালকাঠীতে মাত্র ১২ হাজার ডোজ রয়েছে। তবে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে প্রতিদিন গড়ে ১৫ হাজার ৪৫৫ জনকে ভ্যাক্সিন প্রদানের লক্ষ্য নির্ধারন করা হলেও প্রথম দশদিনে ভ্যক্সিন গ্রহনকারীর সংখ্যা ৬৫ হজার।
তবে স্বাস্থ্য বিভাগের স্থানীয় দায়িত্বশীল সূত্র এ সংখ্যাকেও আশা ব্যাঞ্জক মনে করছেন। তাদের মতে, ভ্যাক্সিন প্রদানের আগেই এ সম্পর্কে সমাজের নানা শ্রেণীর মধ্যে নেতিবাচক মনোভাব অনেকেই কিছুটা ভীত ছিরেণ। ফলে প্রথম ৩-৪দিন ভ্যাক্সিন গ্রহনকারী সংখ্যা যতেষ্ঠ কম ছিল। কিন্তু ক্রমে সবভীতি ও অপপ্রচার ভ’ল প্রমানিত হওয়ায় ইতোমধ্যে সবার মধ্যে ভ্যাক্সিন গ্রহনে সবার আগ্রহ বড়তে শুরু করায় প্রতিদিনই সংখ্যাও বাড়ছে। এমনকি গত দশদিনে যে প্রায় ৬৫ নারী-পুরুষ করোনা প্রতিষেধক গ্রহন করেছেন,তার মধ্যে মাত্র ২২ জনের কিছু পাশর্^ প্রতিক্রিয়া দেখা দিলেও তারা সবাই সুস্থ আছেন বলেও জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
এদিকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় ১০ হাজার ৬৮৮ জন করেনা আক্রান্তের মধ্যে ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১০ হাজার ৩৫১ জন। সুস্থতার হার প্রায় ৯৭%। আর মৃত্যু হয়েছে ২০২ জনের। তবে দক্ষিণাঞ্চলে আক্রান্ত ও মৃতদের সিংহভাগই এখনো বরিশাল মহানগরীতে। এ অঞ্চলে বসবাসকারী ১ কোটি মানুষের মাত্র সাড়ে ৬% মানুষ বরিশাল মহানগরীতে বাস করলেও করেনা আক্রান্তের হার প্রায় ৪০%-এর কাছে এ নগরীতে। এমনকি এ বিভাগে কোভিড-১৯’এ মৃত্যুবরনকারী ২০২ জনের মধ্যে বরিশাল মহানগরীতেই মারা গেছেন প্রায় ৪০ জন।
এদিকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত সর্বশেষ প্রাপ্ত হিসেবনুযায়ী বরিশালে মোট আক্রন্ত ৪,৮৭২ জনের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৮৮ জনের পটুয়াখালীতে আক্রান্তের সংখ্যা ১,৭৪৫। মৃত্যু হয়েছে ৪১ জনের। পিরোজপুরে ১,১৯৩ জন আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছেন ২৫ জন। ভোলাতে ৯৯১ জন আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছেন ১০ জন। বরগুনাতে আক্রান্ত ১ হাজার ৩৪ জনের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের। আর ঝালকাঠীতে ৮৪৩ জন আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছেন ১৬ জন।
এ পর্যন্ত বরিশাল ও ভোলার দুটি আরটি-পিসিআর ল্যাবে ৫২ হাজারের বেশী মানুষের নমুনা পরিক্ষায় গড় সনাক্তের হার প্রায় ১৬%। সর্বশেষ হিসেবনুযায়ী দক্ষিণাঞ্চলে মৃত্যু হার ১.৮৫%-এর নিচে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।