Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কাগজের ঘোষণায় সিগারেট

১১ কোটি টাকা শুল্কফাঁকির চেষ্টা চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার আটক

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম

ঘোষণা ছিল এ-ফোর সাইজের কাগজ আমদানির। আনা হলো ২৩ হাজার কার্টনে ভরা ৪৬ লাখ শলাকা বিদেশি সিগারেট। কাগজ আমদানিতে শুল্ককর ৫৯ শতাংশ। আর বিদেশি ব্র্যান্ডের সিগারেটে শুল্ককরের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫৯৬ শতাংশ। চালানটির মাধ্যমে ১১ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির অপচেষ্টা হচ্ছিল। গতকাল সোমবার অভিনব কায়দায় কাগজে লুকিয়ে ইজি এবং মন্ড ব্র্যান্ডের সিগারেট ভর্তি কন্টেইনারটি আটকের তথ্য জানান চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কর্মকর্তারা।
কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার রেজাউল করিম বলেন, মিথ্যা ঘোষণায় শর্তসাপেক্ষে উচ্চশুল্কের আমদানিযোগ্য পণ্য সিগারেট আমদানি করে ১১ কোটি টাকা শুল্কফাঁকি দেয়া হচ্ছিল। এ অপরাধে আমদানিকারকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার পাশাপাশি মানিলন্ডারিং এবং কাস্টম আইনেও মামলা হবে। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের লাইসেন্সও বাতিল করা হবে।
কাস্টমস কর্মকর্তারা জানান, নগরীর রেয়াজুদ্দিন বাজারের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান করিম ট্রেডিং সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে এ-ফোর সাইজের কাগজ ঘোষণায় এক কন্টেইনার পণ্য আমদানি করে। পণ্যচালানটি খালাসের লক্ষ্যে গত ৪ ফেব্রæয়ারি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট সুরমা এন্টারপ্রাইজ কাস্টম হাউসে বিল অব এন্ট্রি (নম্বর সি-২২১১৮৬) দাখিল করে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের অডিট, ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) টিম ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার আওতায় রফতানিকারক, তৈরি দেশ প্রভৃতি বিশ্লেষণ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআরের অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে বিল অব এন্ট্রিটি লক করে রাখে।
এরপর রোববার নিয়ম অনুযায়ী সন্দেহজনক কন্টেইনারটিতে পণ্য পরীক্ষা শুরু করে। এ সময় কন্টেইনারের সামনের দিকে রাখা সুসজ্জিত কাগজ দেখিয়ে কর্মকর্তাদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কর্মকর্তারা। কন্টেইনারের ভেতরের পণ্য বের করার জন্য সিঅ্যান্ডএফ প্রতিনিধিকে অনুরোধ করলে তারা গড়িমসি শুরু করেন। একপর্যায়ে কায়িক পরীক্ষা স্থগিত করার জন্য পাল্টা অনুরোধ করেন। এ অবস্থায় কাস্টম কমিশনারের নির্দেশে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা, চট্টগ্রাম বন্দর ও সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে রাতেই পণ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা নেয় এআইআর শাখা।
কন্টেইনার থেকে সব পণ্য বের করে আনার পর দেখা যায়, ৪৮টি পলিথিনে মোড়ানো প্যালেটের প্রতিটিতে ৪৮টি কার্টন রয়েছে যার উপরের স্তরের ১২টি কার্টনে শুধুই কাগজ এবং পরবর্তী ৩৬ কার্টন খুলে উপরে এক রিম এ-ফোর সাইজের কাগজ পাওয়া যায়। কাগজের নিচে আলাদা অন্য একটি কার্টনে পাওয়া যায় অভিনব কায়দায় লুকানো সিগারেট।
কন্টেইনারের প্রথম আটটি প্যালেটে ছিল শুধুই কাগজ এবং নবম প্যালেট থেকে পরবর্তী ৪৮টি প্যালেটে পাওয়া যায় লুকানো সিগারেট। রাত আনুমানিক ২টায় শেষ হওয়া পরীক্ষায় ৪৬ লাখ শলাকা সিগারেট পাওয়া যায়। কাগজ পাওয়া গেছে ১৪ টন। কাগজের ঘোষণায় শর্তসাপেক্ষে আমদানিযোগ্য সিগারেট আমদানি করে ১১ কোটি টাকা সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার ঘটনা ধরা পড়ে।
রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. ফখরুল আলম। এ সময় তিনি দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন। উল্লেখ্য, প্রতিদিন গড়ে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে মিথ্যা ঘোষণায় আনা তিনটি চালান ধরা পড়ছে। একশ্রেণির অসাধু আমদানিকারক রাজস্ব ফাঁকি দিতে মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি করছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চট্টগ্রাম বন্দর

৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২
১৪ আগস্ট, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ