নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস রিপোর্টার : ইরান ও সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে বড় জয় তুলে নেয়ার পর এবার কিরগিজস্তানকে বিধ্বস্ত করলো বাংলাদেশ। এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাই পর্বের ‘সি’ গ্রুপে গতকাল যেন গোল উৎসবে মেতেছিল লাল-সবুজের মেয়েরা। এদিন সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ ১০-০ গোলে হারায় কিরগিজস্তানকে। ম্যাচে বাংলাদেশ অধিনায়ক কৃষ্ণা রানী হ্যাটট্রিক করার কৃতিত্ব অর্জন করেন। এছাড়া ফরোয়ার্ড অনুচিং মগিনি ও শামসুন্নাহার দু’টি করে এবং মার্জিয়া, নার্গিস ও মারিয়া একটি করে গোল করেন। টুর্নামেন্টে কোনো দলের এটিই সবচেয়ে বড় জয়।
কাল ম্যাচের শুরু থেকেই গোল পেতে মরিয়া ছিল বাংলাদেশের কিশোরীরা। তারা একের পর এক আক্রমণে প্রায় তছনছ করে ফেলে কিরগিজস্তানের রক্ষণদুর্গ। বলতে গেলে ম্যাচের পুরো সময় জুড়ে নিজেদের রক্ষণভাগ সামলাতেই ব্যস্ত ছিল কিরগিজ মেয়েরা। পুরো ম্যাচে ছন্দময় ফুটবল উপহার দিলেও বাংলাদেশকে গোলের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হয়। টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই দেখা গেছে, বাংলাদেশের মুখোমুখি হলেই প্রতিপক্ষ দলগুলোর কৌশল হলো নিজেদের রক্ষণভাগে যত বেশি সম্ভব খেলোয়াড় রেখে রক্ষণাত্মক কৌশল অবলম্বন করা। কিরগিজস্তানও তার ব্যতিক্রম করেনি। তারাও রক্ষণভাগ সামলে রেখেছে বেশ কিছুক্ষণ। ম্যাচের শুরু থেকে সানজিদা, কৃষ্ণা, মার্জিয়া আর আনুচিং মগিনিরা বারবার কিরগিজ রক্ষণে হানা দিলেও আঁটসাঁট রক্ষণের কারণে ২০ মিনিট গোল করতে পারেননি। ম্যাচের শুরুতেই গোলের সুযোগ পায় স্বাগতিকরা। ৫ মিনিটে গোলরক্ষককে ওয়ান টু ওয়ান পজিশনের পেয়েও সুযোগ হাতছাড়া করেন ফরোয়ার্ড অনুচিং মগিনি। ১৩ মিনিটে বক্সের ভেতর সুবিধাজনক অবস্থানে থেকে শট নিয়েছিলেন সানজিদা। কিন্তু তার শট চলে যায় ক্রসবারের উপর দিয়ে। ১৭ মিনিটে ব্যর্থ হন অনুচিং। এবারো গোলরক্ষককে ওয়ান টু ওয়ান পজিশনে পেয়ে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। অবশেষে কাক্সিক্ষত গোলের দেখা পায় বাংলাদেশ। ম্যাচের ২১ মিনিটে আক্ষেপটা ঘুচান অনুচিং। এসময় জটলা থেকে হেড করেন নার্গিস। গোলরক্ষক বল ফিস্ট করলে, ফিরতি বলে ছোট বক্স থেকে শটে গোলরক্ষকে পরাস্ত করেন অনুচিং মগিনি (১-০)। ২৯ মিনিটে কৃষ্ণা রানীর ক্রসে বল পেয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন মার্জিয়া, বুঝেশুনে সময় নিয়ে বাম পায়ের মাপা শটে কিরগিজস্তানের জাল কাঁপান এই মিডফিল্ডার (২-০)। ৪৩ মিনিটে ডানপ্রান্ত থেকে সানজিদার ক্রস বক্সের কোনা থেকে ডান পায়ের জোড়ালো শটে লক্ষ্যভেদ করেন অধিনায়ক কৃষ্ণা রানী (৩-০)। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে কর্ণার থেকে বক্সে বল পেয়ে দর্শনীয় হেডে বল জালে পাঠান অনুচিং (৪-০)। ৪৮ মিনিটে বক্সের বা কোনা থেকে চমৎকার বাঁকানো শট করেন কৃষ্ণা। গোলরক্ষক হাত উঁচিয়েও বলের নাগাল পাননি। বল আশ্রয় নিয়েছে জালে (৫-০)। ৬৭ মিনিটে পেনাল্টি থেকে আরো এক গোল আদায় করে নেয় ছোটনের শিষ্যরা। গোল করেন ডিফেন্ডার শামসুন্নাহার (৬-০)। ৭৫ মিনিটে দূরপাল্লার শটে বল জালে পাঠান নার্গিস (৭-০)। ডি বক্সের ভেতর ঢুকে বা পায়ের উঁচু শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন কৃষ্ণা (৮-০)। আর এই গোলে হ্যাটট্রিক হয় কৃষ্ণার। ৮৪ মিনিটে বক্সের ৩০ গজ দূর থেকে বা পায়ের জোড়ালো শট নেন মারিয়া। গোলরক্ষক বল ধরলেও হাত ফস্কে প্রবেশ করে জালে (৯-০)। ৮৭ মিনিটে আরো এক গোল করেন শামসুন্নাহার (১০-০)। শেষ পর্যন্ত এই ব্যবধানের জয়েই কিরগিজদের বিধ্বস্ত করার আনন্দে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশের কিশোরীরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।