Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সীমান্ত হত্যা তদন্তে ভারতকে আহ্বান হিউম্যান রাইটস ওয়াচের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ৫:০০ পিএম

বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতের সীমান্ত রক্ষা বাহিনী বিএসএফের নির্যাতনের নতুন অভিযোগের ঘটনার তদন্ত এবং জড়িতদের শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এই কথা বলেছেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।

সংস্থাটি বলেছে, ১০ বছর আগে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ‘ট্রিগার হ্যাপি’ বিষয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশের পর ভারত সরকার বিএসএফকে অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপারকারীদের বিরুদ্ধে কিছুটা নমনীয় হতে এবং প্রাণঘাতী গুলির পরিবর্তে রাবার বুলেট ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছিল। তবে ভারতীয় এবং বাংলাদেশের বেসরকারি সংস্থাগুলোর বরাত দিয়ে সংস্থাটি বলছে, দুই দেশের সীমান্তবর্তী বাসিন্দাদের উপর বিএসএফ এখনো নিপীড়ন, বিচারবর্হিভূত হত্যা, নির্যাতন এবং দুর্ব্যবহার অব্যাহত রেখেছে।

ভারতীয় সীমান্ত রক্ষা বাহিনী যাদেরকে গরু পাচার, চোরাচালান এবং অবৈধ সীমান্ত পারাপার বন্ধ করতে মোতায়েন করা হয়েছে তারা সবসময় বলে আসছে যে, শুধু হামলার স্বীকার হলেই তারা শক্তি ব্যবহার করে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক পরিচালক মিনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, ‘ভারতীয় সরকার বিএসএফকে নমনীয় হয়ে গুলি ব্যবহার না করার যে নির্দেশ দিয়েছিল তা নতুন করে হত্যা, নির্যাতন এবং অন্য মারাত্মক ধরণের নির্যাতন রুখতে পারেনি।’ তিনি বলেন, ‘সরকার নিরাপত্তা বাহিনীকে জবাবদিহি করতে না পারার কারণেই দরিদ্র ও অসহায় জনগোষ্ঠীকে নতুন করে নির্যাতন এবং হয়রানির বিষয়টি অব্যাহত রয়েছে।’

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে, ভারত সরকার নিরাপত্তা বাহিনীকে সংযমী হতে এবং বেআইনি হত্যা বন্ধের নির্দেশ জারি করেছিল এবং ২০২০ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের সাথে আলোচনার সময় ভারত দেশটিকে সীমান্ত হত্যা বন্ধের আশ্বাসও দিয়েছিল্

এদিকে বাংলাদেশের বেসরকারি সংস্থা অধিকারের দেয়া এক হিসেবে দেখা যাচ্ছে, গত দশ বছরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ ৩৩৪ জন বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে। এর মধ্যে ৫১ জনকেই হত্যা করা হয়েছে ২০২০ সালে। ভারতীয় মানবাধিকার সংস্থা মাসুম ২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত বিএসএফ'র হাতে ১০৫টি হত্যার তদন্ত করেছে, তারা বলছে যে, প্রকৃত সংখ্যা আরো অনেক বেশি হবে। মাসুম আরো বলেছে যে, বিএসএফ সন্দেহভাজনদের বেআইনি আটক ও নির্যাতন করেছে এবং সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিকদের হয়রানি ও হুমকি দিয়েছে।

বাংলাদেশ বরাবরই সীমান্তে নির্যাতনের ঘটনার প্রতিবাদ করে আসছে। গত অগাস্টে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সীমান্ত হত্যার বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বলে, ‘বাংলাদেশ বিষয়টিতে সব ধরণের দ্বিপক্ষীয় চুক্তি বিরোধী হিসেবে চিহ্নিত করেছে এবং ভারতীয় সীমান্ত রক্ষা বাহিনীকে সর্বোচ্চ সংযম অবলম্বনের আহ্বান জানাচ্ছে।’

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নির্যাতনের ঘটনায় ভারতীয় কর্তৃপক্ষের বিএসএফের কোন সদস্যকে জবাবদিহি করার কোন ঘটনা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানতে পারেনি বলে বিবৃতিতে অভিযোগ তোলা হয়। এর মধ্যে বহুল আলোচিত ১৫ বছর বয়সী বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানি খাতুন হত্যার ঘটনার কথাও উল্লেখ করা হয় যে, ২০১১ সালের জানুয়ারিতে বিএসএফের গুলিতে প্রাণ হারানোর পর কাঁটাতারে ঝুলে ছিল। ২০১৫ এবং ২০১৩ সালে বিএসএফের বিশেষ আদালতে দুই দফা বিচারের পর বিএসএফের অভিযুক্ত কনস্টেবলকে খালাস দেয়া হয়। এ মামলায় নতুন করে বিচারের আবেদনটি এখন ভারতের সুপ্রিম কোর্টে ঝুলে আছে। সূত্র: বিবিসি বাংলা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ